মুখ্যমন্ত্রীকে দুর্গাপুজোয় আমন্ত্রণ জানিয়ে ১০ হাজার চিঠি, উদ্বোধনে মমতাকেই চান সাড়ে ৩ হাজার উদ্যোক্তা
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ : মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বাংলার দুর্গাপুজোকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোকমিটিগুলিকে অনুদান থেকে শুরু করে দুর্গা কার্নিভাল, শারদোৎসবকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব রূপে তুলে ধরতে কোনও কসুর করেননি তিনি। প্রায় প্রতি বছরই, মহালয়ার আগে থেকেই এক-এক করে রাজ্যের বড় পুজোগুলির
উদ্বোধন করতে দেখা যায় তাঁকে। গত বছরও মহালয়ার দিন তিনেক আগেই শ্রীভূমির ‘চিতোরের দূর্গ’ থেকেই উৎসব শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। এবারও বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তাদের কাছে তিনিই অন্যতম আকর্ষণ। আর সেই আকর্ষণের মাত্রা যেন বছর বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত বছর গোটা রাজ্য তথা দেশের নানা প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে পুজোর আমন্ত্রণপত্র এসেছিল ১০ হাজারেরও বেশি। কারও আব্দার ছিল উদ্বোধনের, কারও আর্জি ছিল পুজোর চারদিনের মধ্যে যে কোনও একদিন মণ্ডপ ঘুরে যাওয়ার, আবার কারও আকুতি ছিল মাত্র একটা শুভেচ্ছাবার্তার। লোকসভা নির্বাচন ইস্তক বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে নানা কৌশল নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। প্রাণের উৎসব শারদীয়াতেও নিজেদের উপস্থিতি জাহির করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পদ্মশিবির। রাজ্য রাজনীতির এই জটিল আবর্তেও পুজোর দু’সপ্তাহ আগেই তাঁর কাছে এসে পৌঁছনো আমন্ত্রণপত্রের সংখ্যা ১০ হাজার ছুঁই ছুঁই। তার মধ্যে উদ্বোধনের বায়না জানিয়ে চিঠির সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। তবে শুধু চিঠি পাঠিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছেন না কেউ। রাজ্য সরকাররের গ্রিভান্স সেলের টোল ফ্রি নম্বরে, আবার কখনও তৃণমূলের নিজস্ব উদ্যোগ ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করেও পুজোর আয়োজকরা নানা বায়না আর আব্দার জানাচ্ছেন। কলকাতা তথা গোটা রাজ্য তো বটেই, দিল্লী, উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ আর ঝাড়খণ্ড থেকেও পুজোর আমন্ত্রণপত্র আসার বিরাম নেই নবান্নের ১৪ তলায় চিফ মিনিস্টার্স অফিসে (সিএমও)। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাস থেকে দুর্গাপুজোর আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি আসা শুরু হয়েছে। দিন যত এগিয়েছে, চিঠির সংখ্যা বেড়েছে ততই। আমন্ত্রণপত্রের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পুজো আয়োজকদের সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের বিবরণ সম্বলিত রঙিন পুস্তিকা। পুজোর বাকি আর মাত্র ১৪ দিন। আমন্ত্রণপত্রের সঙ্গে এখনও অব্যাহত বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তাদের হয়ে হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের সুপারিশ। তাঁরা চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রী যেন এবার তাঁদের মাতৃ আবাহনের উদ্বোধক হন। মুখ্যমন্ত্রী না এলেও, শুভেচ্ছাবার্তা পেলেও চলবে, এমন আব্দার প্রায় ছ’হাজার। তবে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও আয়োজকদের আব্দার মেনে একের পর এক শুভেচ্ছাবার্তায় সই করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।ছবি : চুনী পাল