করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় লকডাউনের সুযোগে গড়িয়া সান্ধ্য বাজারের দীর্ঘদিনের দূষনযুক্ত আবর্জনা দায়িত্ব নিয়ে পরিষ্কার করল তৃণমূল নেতৃত্ব
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ২৪শে এপ্রিল ২০২০ : গড়িয়া সান্ধ্য বাজার এলাকার সব থেকে পুরাতন বাজার হলেও বর্তমান বাজার কমিটির উদাসীনতায় এই বাজারের আবর্জনা পার্শবর্তী ঝিলে স্তুপ করে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আমরা এর আগেও এই আবর্জনা নিয়ে সরব হওয়ার পর তা পরিষ্কার হয়েছিল, কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে আমায় শুনতে হয়েছিল স্থানীয় এক নেতার থেকে যে তিনি নাকি গড়িয়ার অধীর চৌধুরী যদিও অধীর চৌধুরীর কোন একটা গুণ তাঁর মধ্যে দেখা যায় নি, শুধু চোখ লাল করা ছাড়া।আমরা সেই সময় আজকের তৃণমূল জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীকে জানাতে তিনি বাজার কমিটিকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে সংবাদমাধ্যমকে পূর্ণ স্বাধীনতায় কাজ করতে দিতে হবে।আমাদের সেই প্রতিবেদন হয়ে গেছে বহুবছর। সেই সময় তৃণমূল রাজ্যে বা পৌরসভায় ক্ষমতায় আসে নি। এই রাস্তা দিয়ে বহু মানুষ রোজ যাতায়াত করে এবং সাথে দূষণ নিয়ে অকথ্য মন্তব্য করতেও শোনা যায়।স্কুলের ছাত্রছাত্রী, অফিসযাত্রীরা যাতায়াত করতে পারে না। যে যাই বলুক বাজার কমিটি নির্বিকার। শুধু রাত হলে দানের পয়সাটা চোখ কান বুজে তুলতে পারলেই হয়। কিন্তু তা আর কতদিন এভাবে মানুষ সহ্য করবে। বাজারের পার্শবর্তী ৪ নং ওয়ার্ডের মানুষও পরিবেশ নিয়ে তিতেবিরক্ত। এছাড়া এই ঝিলে যারা মাছ চাষ করে তারাও প্রায়ই অভিযোগ করে এই দুর্গন্ধযুক্ত ও দূষণযুক্ত আবর্জনা ঝিলে ফেলার ফলে তাদের মাছ মারা যাচ্ছে এবং এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠা রুগ্ন মাছ বাজারে যাচ্ছে যা হাজারে হাজারে মানুষ বাড়ি নিয়ে গিয়ে রান্না করছে। কিন্তু কে শোনে ধর্মের কাহিনী। হাজার বলেও কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ পরিবেশ রুগ্ন করে দিচ্ছে।
আজ সকাল থেকে স্থানীয় ৫ নং ওয়ার্ডের পৌরপিতা তরুণ কান্তি মন্ডল, ওয়ার্ড সম্পাদক মিন্তু কুন্ডু, ৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি মিঠু দে, ৪ নং ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি অমিত পাল, গড়িয়া টাউন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়ন্ত সেনগুপ্ত, বাপ্পা দাস সহ অনেকের উপস্থিতিতে সেই দীর্ঘদিনের স্তুপ হয়ে থাকা আবর্জনা রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার পৌর প্রধান ডাঃ পল্লব দাসের নির্দেশে সরানো হয়।এব্যাপারে গড়িয়া টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়ন্ত জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই আবর্জনা জমে চলেছে আর বাজারের শ্রীবৃদ্ধি হচ্ছে, মানে বাজার বেড়েই চলেছে। মানুষের অসুবিধার কথা কেউ কানে তুলছে না। এই বাজারে সকালে মাছের কাটা থেকে সান্ধ্য বাজারের যত নোংরা জল থেকে আবর্জনা রাস্তায় এসে জমা হয়। মানুষের চলাফেরা দায় হয়ে উঠেছে। বহুবার বলেও কোন লাভ হয় নি। তাই বাধ্য হয়ে জেলাশাসকের দপ্তরে দরবার করা হয়। সেখান থেকে মহকুমা শাসক হয়ে পৌরসভার পৌর প্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয় এই আবর্জনা অবিলম্বে সরানোর জন্য। আমরা তাই দায়িত্ব নিয়ে আবর্জনা তোলার ব্যবস্থা করছি। বর্তমানে এমনও বলা হচ্ছে আবর্জনা থেকেও করোনার জীবানু সংক্রমণ হতে পারে তাই এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে মানুষ সুস্থ থাকে ও করোনা জীবাণুমুক্ত থাকে।
এব্যাপারে মিঠু দে জানান, আমরা পৌরসভার তরফ থেকে পৌরপিতা বিভাস মুখার্জির উদ্যোগে এই বাজার এলাকার রাস্তা ঢালাই করার কথা জানানো হয়েছিল এবং সেই আবেদন পৌরসভার পক্ষ থেকে ঢালাই করার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সত্যি কথা এই বাজারের পাশ দিয়ে কোন সুস্থ মানুষ যেতে পারে না। পরিবেশ এমনই হয় যে অনেকে তাদের পরিচিতদের বাড়িতে আমন্ত্রণ করতেও দ্বিধাবোধ করে। এটা আমাদের এলাকার বদনাম বাড়াচ্ছে। এটার ব্যবস্থা করা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু এর থেকেও আরও মারাত্মক রেলের একটা জলের ট্যঙ্ক রয়েছে রাস্তার উপর।ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে গেলে সেখান থেকে জল রাস্তায় এসে পড়ে। এছাড়া এই ট্যাঙ্কের অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে এসেছে। যেকোনদিন একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।লকডাউন কাটলে এটারও ব্যবস্থা করতে হবে।কারও কোন কথা আর শোনা হবে না।বহুবার সতর্ক করা হয়েছে কিন্তু কেউ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। এই অবস্থায় মানুষের স্বাস্থ্য আগে, সেখানে এভাবে আবর্জনার স্তুপ রাখা যাবে না। মানুষ এই বাজার কমিটির উপর দিনেদিনে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে।আজ থেকে সারারাত ধরে এই আবর্জনা তিনদিনে পরিষ্কার করা হবে বলেও জানায় অমিত পাল, জয়ন্ত সেনগুপ্ত ও মিঠু দে। তাঁরা জানায় আমরা থেকে এই আবর্জনা পরিষ্কার করে দেবো।অমিত পাল এমনও জানান, এই আবর্জনার কারণে বহুবার আবর্জনার স্তুপে অগ্নি সংযোগ ঘটে পরবর্তীতে স্থানীয় মানুষদের আতঙ্কে দমকল ডেকে সেই আগুন নেভাতে হয়। এই আবর্জনার ফলে আগামীদিনে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।