গড়িয়ায় সান্ধ্য বাজার বন্ধ রাখা হয়েছে কোন ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করার জন্য নয়, ব্যবসায়ীদের স্থায়ীত্ব দিতে : নজরুল আলি মন্ডল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১৫ই জুন ২০২০ : গড়িয়া স্টেশন এলাকায় সান্ধ্য বাজার বর্তমানে লকডাউন থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে কারণ প্রথমদিকে সোনারপুর উত্তর বিধানসভার সব বাজার বন্ধ রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র সংক্রমণ বেশি না হয়। সেই সময় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছিল, এবং এলাকার বাইরের কোন ব্যবসায়ীকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল না কারণ তাতে সংক্রমণ বাড়তে পারে। এলাকার মানুষ হলে তা সহজে ধরা যাবে কিন্তু বাইরের কারো থেকে সংক্রমণ ছড়ালে তা ধরা যাবে না। কিন্তু এটাকে নিয়ে গড়িয়ার একশ্রেনী মানুষ রাজনীতি শুরু করে দিয়েছিল। সান্ধ্য বাজারের ব্যবসায়ীদের উষ্কানি দেওয়া হচ্ছিল। আসল কারণকে না প্রকাশ করে ভুল বোঝানো হচ্ছিল। ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্তিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছিল। আমার কাছে এমনও খবর আছে, ব্যবসায়ীদের বোঝানো হয়েছে যে নেতৃত্বের একাংশ বাইরের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করতে চাইছে। এবার আর তাদের দোকান থাকবে না বাজারে। তা কিন্তু কখনই নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কোন উচ্ছেদের পক্ষে নন। মমতা ব্যানার্জি রাত্রিকারদের ফুটপাথ থেকে তুলে আবাসন তৈরি করে স্থায়ী জায়গা করে দিয়েছেন। এছাড়া ফুটপাথের হকারদের জন্য তিনি মার্কেট তৈরি করে দিয়েছেন। তাঁর আদর্শে সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম মেনে চলেন। গড়িয়া স্টেশন রোডের উপর হকারদের তুলে দিয়ে বিধায়ক হকার কর্নার করে স্থায়ী একটা আস্তানা দিয়েছেন।এরপর সেই হকার কর্নারকে সৌন্দ্যর্যায়ন করেছেন। একসময় সেখানে ছিল মাত্র একটা ট্রলি আর আজ সেখানে ছাউনি করে দিয়েছেন বিধায়ক। যেখানে বিধায়ক এতটা করতে পারেন সেখানে বিধায়ক কারো উচ্ছেদের পক্ষে হতে পারেন না, এই কথাগুলো জানান সোনারপুর উত্তর বিধানসভার মূল সংগঠক তথা রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার সি আই সি নজরুল আলি মন্ডল। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে একটা চক্র এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছে।
এবার আসি সেই প্রসঙ্গে যা নিয়ে প্রতিবেদন শুরু হয়েছিল।নজরুল আলি মন্ডল আরও বলেন, সান্ধ্য বাজার নিয়ে প্রচুর অভিযোগ ওঠে। এই বাজারে অনিয়ম থেকে অসামাজিক কাজকর্ম নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে। এই সান্ধ্য বাজার থেকে প্রতিদিন যে অর্থ আদায় হয় তার বেহিসাবির অভিযোগও উঠেছে।অনেকেই অভিযোগ করেছেন দীর্ঘদিন এই আদায় হওয়া টাকার কোন হিসাব পেশ করা হয় নি। এছাড়া এই বাজারের সামনের রাস্তায় এমনই নোংরা করা হয় যার ফলে এখানকার মানুষ চলাচল করতে পারে না। এই বাজারের পাশে যে অটো স্ট্যান্ড আছে তা নিয়েও অনেক অভিযোগ ওঠে যে রাস্তার উপর অটো দাঁড়ানোর ফলে যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এই একই জায়গায় সকালে মাছের পাইকারি বাজার চলে। তাদেরও নামে অভিযোগ ওঠে রাস্তার উপর গাড়ি থাকার ফলে অন্যান্য যান চলাচল করতে পারে না এবং মাছের বাজারের জল রাস্তায় আসাতে রাস্তা কাঁদা হয়ে যায়। এব্যাপারে তাদের বলতে তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে সেই সব অভিযোগ মুছে দেয়। আনলকের পর পরীক্ষামূলক ভাবে সেই মাছের পাইকারি বাজার কিছু শর্ত অনুযায়ী চালু করা হয়। তাদের বলা হয় রাস্তায় বাজারের জল আসতে পারবে না, বাইরের ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারবে না, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে, বাজারের শেষে পরিষ্কার রাখতে হবে যাতে দর্গন্ধ না ছড়ায়। তাঁরা সব শর্ত মেনে দেখিয়ে দিয়েছে যে নিয়ম মেনে বাজার চালানো সম্ভব। বাজারকে সামনে রেখে টাকা আদায়ের জায়গা হতে দেওয়া যাবে না।এতে ব্যবসায়ীদের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে যা আর হতে দেওয়া যাবে না বলে জানান নজরুল আলি মন্ডল।তিনি বলেন মানুষের স্বার্থে বাজার খোলা হবে কিন্তু সব কিছু হবে একটা নিয়ম বিধির মধ্যে দিয়ে, আলোচনার মধ্যে দিয়ে, সুস্থ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে, নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে।
তাই ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম সুকান্ত মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সান্ধ্য বাজার যাতে সুষ্ঠ ভাবে চলে তা ব্যবস্থা করার জন্য। আজ সুকান্ত মন্ডল সান্ধ্য বাজারের বর্তমান পরিচালন কমিটকে সাথে নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম ও সি আই সি নজরুল আলি মন্ডলের কোনরকম উদ্দেশ্য নেই এই সান্ধ্য বাজারের কোন ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করার ব্যাপারে। তিনি যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে যারা ব্যবসা করতো তাঁরা আবার তাদের জায়গাতেই ব্যবসা করবে। কিন্তু তার আগে একটা নীতি নির্ধারণ করতে হবে। সেই নীতি মেনেই সকলকে ব্যবসা করতে হবে। সুকান্ত মন্ডল ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন যে সান্ধ্য বাজার তাদের ও এলাকার মানুষের স্বার্থে আবার খোলা হবে। এবার বাজার খোলা হবে নতুন একটা কমিটির মধ্যে দিয়ে। যেখানে সেই কমিটি নিজের ইচ্ছে মত দোকানদার বা ব্যবসায়ীদের বসাতে পারবে না। রাস্তার উপর কোন ব্যবসায়ীকে বসতে দেওয়া হবে না। নিজের ইচ্ছে মত কোন দানের টাকা তোলা যাবে না। এবং সান্ধ্য বাজারের সব ব্যবসায়ীদের অধিকার থাকবে আদায় হওয়া টাকার হিসাব দেখার যা দীর্ঘদিন হয় নি। সবটাই হবে নজরুল আলি মন্ডলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষ নির্ধারিত নিয়ম ও নির্দেশের মধ্যে দিয়ে।রাস্তায় কোন ময়লা ফেলে নোংরা করা যাবে না। আজকের আলোচনার পর সকল ব্যবসায়ী সন্তুষ্ট হয়ে সুকান্ত মন্ডলের পক্ষে সমর্থন জানান। বর্তমান বাজার কমিটি সুকান্ত মন্ডলের কোন যুক্তিকে বিরোধিতা করতে পারে নি বলেও জানা যায়। দুটো বাজারের কমিটি হবে নজরুল আলি মন্ডলের নির্দেশেই বলে জানান সুকান্ত মন্ডল।এই নতুন কমিটি তৈরি হলে ব্যবসায়ীরা অনেকটা নিশ্চিন্ত হবেন বলে জানা যায়।