“আমার আর্তনাদ” ছবিতে সেভাবে কোন আর্তনাদ দেখা গেল না, খুবই দুর্বল চিত্রনাট্য ও নির্দেশনা
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৩রা মার্চ ২০২০ : ছবির বিষয়টা এতটাই স্পর্ষকাতর যে সবাইকে ছুঁয়ে যাবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ছবি তৈরি হয়েছে ঠিকই কিন্তু গল্প খুব কাঁচা হাতে লেখা বলে নির্দেশক সুজিত কুমার পালের নির্দেশনাও খুবই বেমানান হয়ে গেছে। ছবিতে অভিনয় করেছেন অর্পিতা চ্যাটার্জি, সৌমিত্র চ্যাটার্জি, মনোজ মিত্র, জয় সেনগুপ্ত, অঞ্জনা বসু, অর্পিতা মজুমদার, বিশ্বজিত চক্রবর্তী, শঙ্কর দেবনাথ, মানসী সিনহা, দেবলিনা কুমার সহ অনেকে। ছবিতে এতগুলো প্রতিষ্ঠিত শিল্পী থাকতে এভাবে একটা দুর্বল প্রযোজনা হবে তা প্রথমে বোঝা যায় নি। সৌমিত্র চ্যাটার্জি, অর্পিতা চ্যাটার্জি, মনোজ মিত্র, অঞ্জনা বসু, বিশ্বজিত চক্রবর্তী, দেবলিনা কুমার, মানসী সিনহা, সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা সহ এতগুলো প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা-অভিনেত্রী থাকতেও কোথাও যেন একটা খামতি ছিল। প্রবীণ অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জি, অর্পিতা চ্যাটার্জি, মনোজ মিত্র, বিশ্বজিত চক্রবর্তী, মানসী সিনহা কোন ছবিতে থাকলেও ছবি দর্শকদের মনে দাগ কাটতে পারলো না।
ছবির নাম “আমার আর্তনাদ” কিন্তু সেই আর্তনাদ দর্শকদের কাছে পরিষ্কার হল না। স্কুলের ছোট্ট ছাত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন হয়, যা আজকাল হয়েই থাকে বিভিন্ন স্কুলে। এরপর সেই ছাত্রীর চুপ করে থাকা ছাড়া আর কোন প্রতিক্রিয়া ছিল না। এছাড়া অর্পিতা চ্যাটার্জি আইনজীবির ভুমিকায় বেশ ফুটিয়েছেন। কিন্তু ফসকো আইনে কি হল তা দেখানো হল না।ছবিতে আর্তনাদের জায়গায় ছবি এতটাই ধীর গতিতে ছিল যা দর্শকদের মোটেই ভাল লাগে নি। রাস্তায় মোমবাতি মিছিল, প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ যা হয় তাই দেখানো হয়েছে ছবিতে। মনোজ মিত্রের চিরাচরিত ভঙ্গিতে অভিনয় দর্শকদের মন কেড়েছে। মানসী একজন স্কুল কর্তিপক্ষের ভুমিকায় বেশ মানিয়েছে। দেবলিনা কুমার সহকারী আইনজীবির ভুমিকায় তেমন একটা অভিনয়ের জায়গা না থাকলেও ভাল অভিনয় করেছেন।শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগের কারণে সেই শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা প্রতিক্রিয়া ভালোই ফুটিয়ে তুলেছে। কিন্তু হাসির জায়গা হল যখন পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে এলো তখনই এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করতে হাজির হয়ে গেল। সায়ন্তনীর চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ, আতঙ্কের ছাপ বেশ ভাল ফুটিয়েছিলেন।
সবশেষে যা হয় আমাদের বিচার বিভাগে তাই দেখানো হয়েছে। যেখানে অভিযোগকারীরা শিক্ষকের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযোগ তুলছে, প্রমাণ দেওয়ার চেষ্টা করছে অন্যদিকে অভিযুক্ত বলছে তিনি নির্দোষ সেখানেই প্রমাণের অভাবে বিচার হল না অভিযুক্তের। বিচার পেল না ছোট্ট শিশুটা ও তার পরিবার। শিশুর অভিভাবকেরা বারবার নিজেদের অসহায় মনে করেছেন।আইনের উপর তাদের ভরসা উঠে গেছে। বারবার তাঁরা পিছিয়ে আসার কথা বলেছেন কিন্তু চিকিৎসক অঞ্জনা বসু-র বলিষ্ঠ অভিনয়ে হয় নি। সবটাই ঠিকঠাকই ছিল তবুও দর্শক আরও কিছু যেন চাইছিল বলে মনে হল। গোটা গল্পটাতে কোথাও একটা খামতি ছিল যা দর্শকদের তৃপ্ত করতে পারে নি।আর একটু সাসপেন্স, আদালতে জোরালো সওয়ালের প্রয়োজন ছিল। অবশেষে অর্থের কাছে যে হার মানতে হয় আইন ও আদালতকে তাই হয়েছে। এর প্রমাণ নির্ভয়া কান্ড। ফাঁসির আদেশ হলেও এখনও তা হল না।আমাদের দেশে আইন ও আদালত যে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে তাই দেখানো হয়েছে ছবিতে।অভিনয়ের কথা ছেড়ে সামনে শুধু চলে আসছে গল্পের বলিষ্ঠতার কথা।প্রচারে রিদ্যম এনটারটেন্মেন্ট।