করোনা আনলক ১-এ শারীরিক সুস্থতার জন্য এবার জিম খোলা নিয়ে সরব হল অভিনেত্রী মাফিন, জিমে গেলে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৪ই জুন ২০২০ : করোনার ফলে গোটা দেশে লকডাউন শুরু হয় ২২শে মার্চ থেকে যা এখনও চলছে। তবে ১লা জুন থেকে আনলক ১ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিন্তু এর সাথে সবটাই ছেড়ে দিলেন রাজ্য সরকারের উপর। এই রাজ্যের সরকার বাস, অটো, ট্যাক্সি চালু করলো, রেস্তোরাঁ ও হোটেল খুলে দিল, সরকারি ও বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হল, শুটিংও শুরু হল নতুন করে। কিন্তু এগুলোর সাথে খোলা হল পার্লার ও স্পা তবে বাকি থাকে কেন জিম। জিম খোলা নিয়ে সরকারের কোন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হল না কেন? কথাগুলো যুক্তি দিয়ে দেখতে গেলে বাস্তবে ঠিক। কিন্তু সরকারের নিয়মবিধির উপর তো কারো কিছু করার নেই।
এবার এই বিষয় নিয়ে সরব হলেন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মাফিন চক্রবর্তী। মাফিন বলেন, সরকার সব খুলে দিচ্ছে কিন্তু জিম খোলার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেই কেন? তবে কি জিমটা মানুষের জীবনে কোন গুরুত্ব নেই? সব জায়গায় যদি সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলতে পারে তবে সেটা জিমের ক্ষেত্রে লাঘু হবে না কেন? আনলক ঘোষণার পর আইন হল বাসে যতজন বসতে পারবে ততজন উঠতে পারবে কিন্তু আদতে কি তাই হচ্ছে। মানুষ বাসে সেই আগের মতই ঝুলে যাচ্ছে। কোথায় সামাজিক দুরত্ব? কিন্তু জিমে যদি একটা নিয়ন্ত্রণ করে জিম চালানো যায় তবে সেখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখেই সব করা যায়। এছাড়া জিমে যাওয়া মানে কিন্তু একটা ফ্যাশন নয়, জিমে মানুষ যায় নিজের শরীরকে ফিট রাখতে, সুস্থ রাখতে। জিম করলেও কিন্তু ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে যা করোনা মোকাবিলার জন্য খুবই প্রয়োজন।
এছাড়া একটা জিম খোলা মানে সেখানে একটা মোটা অঙ্কের টাকা লাগে যা অনেকে ব্যাঙ্ক লোন নিয়েই করে। জিম বন্ধ থাকলে সেই লোন শোধ করতে বিঘ্ন ঘটবে। শুধু তাই নয় জিমের সাথে যুক্ত মানুষগুলো আজ আর কিছু করে খেতে পারছে না। জিম ইন্সট্রাক্টাররা তো বাজারে মাছ বা সবজি বা চায়ের দোকান করে বসতে পারবে না। তাঁরা জানে শুধু মানুষকে কিকরে সুস্থ রাখতে হয়। আজ তাঁরা এই লকডাউন হোক বা আনলক হোক সম্পূর্ণ বেকার। গোটা রাজ্যে প্রায় হাজার হাজার জিম আছে যা আজ বন্ধ হয়ে আছে মানে একটা ছোট জিমে যদি ৫০ জন সদস্য তাদের শরীর ফিট রাখতে যায় মানে গোটা রাজ্যে কম করে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই ফিটনেস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর একটা জিমে যদি ৫টা ইন্সট্রাক্টার থাকে তবে গোটা রাজ্যে কম করে ৫০০০ থেকে ১০০০০ ইন্সট্রাক্টার আজ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে আছে। তাই সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ যদি পার্লার ও স্পা খুলতে পারে তবে জিম খোলা হোক। পার্লার বা স্পা-তে গিয়ে রূপচর্চা যত না জরুরী তার থেকে বেশি জরুরী জিমে গিয়ে নিজেকে ফিট রাখা। এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সকলেই স্থুলতায় ভুগছে কারণ সকলেই বাড়িতে কোন শারীরিক কসরত ছাড়া বসে আছে। আমার নিজের নাচের স্কুল আছে সেটা নিয়ে আমি কিছুই বলছি না কারণ এখনও কোন স্কুল খোলে নি, আর স্কুলে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সম্ভব নয়। এছাড়া স্কুলে নাচ শেখাটা প্রাথমিক নয়, কয়েকমাস নাচ না শিখলে কিছু আসবে যাবে না। তাছাড়া নাচ শিখতে ছোটরা আসবে সেখানে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে কারণ তাদের ইমিউনিটি পাওয়ার ততটা মজবুত নয় কিন্তু একটা জিমে প্রাপ্তবয়স্করা যায় যাদের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে।জিম একটা মেডিক্যাল সায়ন্স, সরকারের এটা বোঝা উচিত এবং বিবেচনা করা উচিত।