এতদিন বিধায়কদের কাছে মানুষ যেত এবার মানুষের কাছে এবার যেতে হবে : জাবেদ খান, আমি সামিল হতে পেরে ভাগ্যবান মনে করছি : সায়নদেব, উঠে এল “দিদিকে বলো” নিয়ে বড় অভিযোগ
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০১৯ : আজ কলকাতা কর্পোরেশনের ৯২ নং ওয়ার্ডে মমতা ব্যানার্জির “দিদিকে বলো” কর্মসূচীর সূচনা করলেন স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী জাভেদ খান এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক সায়নদেব চ্যাটার্জি ঢাকুরিয়া স্টেশনের পাশে দলীয় কার্যালয় থেকে। আজ সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান এই কর্মসূচীর দায়িত্ব তুলে দিলেন রাজ্য যুব নেতা সায়নদেবকে। গত ২৯শে জুলাই নজরুল মঞ্চ থেকে একটা অসাধারণ কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করেন “দিদিকে বলো”।গত ৩রা সেপ্টেম্বর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি নির্দেশ দেন বিধায়কদের পাশাপাশি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রতিটা অঞ্চল সভাপতিদের এই কর্মসূচীকে সফল করার জন্য দলের নির্দেশে এলাকায় পরিক্রমা করে এই “দিদিকে বলো” কর্মসূচীকে আরও বেশি সফল করতে।এই “দিদিকে বলো” কর্মসূচীর উদ্দ্যেশ্য একটাই তা হল মানুষের সাথে জনসংযোগ স্থাপন করা ও মানুষের কাছে গিয়ে এলাকার অভিযোগ বা দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা কোন বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এমনকি রাজ্যের উন্নতি অথবা এলাকার উন্নতির ব্যাপারে উপদেশ শোনা। এবিষয়ে সায়নদেব চ্যাটার্জি সাংবাদিকদের জানান, আমি থাকি ভবানীপুর এবং আমি অধিকাংশ সময় রাসবিহারী বিধানসভা নিয়ে ব্যস্ত থাকি কিন্তু আমাদের সর্বভারতীয় যুব সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি ও সর্বোপরি দলীয় নেত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে কসবা বিধানসভার কলকাতা কর্পোরেশনের ৯২ নং ওয়ার্ডে এই “দিদিকে বলো” কর্মসূচী সফল করতে এসেছি।
যদিও এই ওয়ার্ডের সাথে আমার একটা আত্মিক যোগাযোগ আছে। আমার মা এই এলাকায় স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন, আমি ছোটবেলায় এখানে মায়ের স্কুলে এসে অনেক খেলেছি। আর আজ আমার পাশে যাদের এই কর্মসূচী সফল করার জন্য পেয়েছি তাঁরা সকলেই আমার প্রনম্য কারণ তাঁদের আমি খুব ছোটবেলা থেকে চিনি। আমার বাবা-মায়ের সাথে তাঁদের একটা পারিবারিক যোগাযোগ আছে। এককথায় আমার পাশে এইধরনের অভিভাবকদের পেয়ে এই কর্মসূচীকে আরও বেশি সফল করতে মনোবল জোগাবে। আমার সাথে আজ এখানে উপস্থিত আছেন এই এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাভেদ খান, এই ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অশোক দত্ত ও এই ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি তরুণ বোস, সুজাতা গুপ্ত সহ ওয়ার্ডের সব তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থক।মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, এই কর্মসূচী খুবই কার্যকরি
কারণ মানুষের বরাবরই একটা অভিযোগ থাকে বিধায়ককে সারা বছর দেখা যায় না, কোন প্রয়োজনে বিধায়কের কাছে দৌড়াতে হয়, এলাকার নেতাদের কাছে কোন কাজ নিয়ে গেলে ঘুরতে হয় কিন্তু এই কর্মসূচী মাধ্যমে এবার প্রতিটা বিধায়ককে নিজের বিধানসভার মানুষের কাছে যেতে হবে, এরফলে জনসংযোগ অনেক বাড়বে।তিনি এমনও বলেন যে এই কর্মসূচীর মাধ্যমে উন্নয়নের হার অনেক বেড়ে যাবে এবং মানুষ অনেক বেশি সন্তুষ্ট হবে। এরই সাথে তৃণমূল যুব কংগ্রেসকে সামিল করে আরও ভাল হয়েছে কারণ নতুন প্রজন্মের অনেকে আছে যারা হয়তো আমাদের কাছে নিজেদের প্রয়োজনের কথা বলতে সংকোচ বোধ করবেন কিন্তু তারা তাদের বয়সের কাউকে পেলে অনেক বেশি সহজ বা সাবলীল ভাবে সমস্যার কথা বলতে পারবে।আজকে সায়নদেবের মত তরুণ নেতারা সাথে এলে আমাদের কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে কারণ আমাদের থেকে ওরা অনেক বেশি উদ্যম নিয়ে দৌড়াতে পারবে। দল সকলকে নিয়ে তাই সকলে যদি এই কর্মসূচীতে যুক্ত থাকে কাজ অনেক ভাল হবে।এরপর সকলে মিলে
“দিদিকে বলো” কর্মসূচী শুরু করেন। সামনেই বাজার এলাকায় থাকা পথচলতি মানুষ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে শুরু হয় জনসংযোগের কাজ ও “দিদিকে বলো” কার্ড ও স্টিকার বিলি। এরপর সায়নদেব এই ওয়ার্ডের শহীদ স্মৃতি এলাকায় গিয়ে দলের নির্দেশে পাঁচজন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বুদ্ধিজীবি মানুষের সাথে দেখা করেন।তাঁদের সাথে কথা বলে, অভিযোগ ও উপদেশ শোনেন। এমনকি রাস্তায় স্থানীয় মানুষের ২০ বছরের সমস্যার কথাও শোনেন। এলাকার বাম কাউন্সিলার থাকার ফলে তার সেভাবে সহযোগিতার কথা যেমন উঠে আসে একই ভাবে রাস্তার আলো, পুকুর ভরাট, আবর্জনা নেওয়া নিয়ে কর্পোরেশনের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুকুর সংস্কার, প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে নিকাশি ব্যবস্থার বিপর্জয়, “দিদিকে বলো” কর্মসূচীর জন্য প্রতিটা এলাকায় মন্তব্য ও মতামত জানানোর জন্য
একটা করে ড্রপ বক্সের আবদার।”দিদিকে বলো” নিয়ে সব থেকে বড় সমস্যা উঠে আসে, অনেকে জানান “দিদিকে বলো” ওয়াবসাইটে একজন একবারের বেশি কোন অভিযোগ জানাতে পারছে না কারণ সেখানে একটা মোবাইল নম্বরে একবারই অভিযোগ জানানো যাচ্ছে, যদি তা আলোচনার মাধ্যমে অভিযোগ বা মতামত জানানোর সংখ্যাটা বাড়ানো যায়। রাতে সায়নদেব এলাকার এক কর্মীর বাড়িতে রাত্রিবাস করেন এবং জানান রাতে তিনি সব কর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন যাতে এই অভিযোগ ও উপদেশ স্থানীয় স্তরে কার্যকরি হয় নাহলে রাজ্যস্তরে জানিয়ে তা করতে হবে।স্থানীয় মানুষের অভিযোগ সাথেসাথে লিপিবদ্ধ করা হয়।তিনি আরও জানান আগামীকাল শহীদ স্মৃতি মোড়ে সব কর্মী ও স্থানীয় নেতৃত্বদের নিয়ে দলীয় পতাকা তুলবেন।আজকে এটা পরিস্কার হয়ে গেল যে “দিদিকে বলো” কর্মসূচী মানুষের কাছে কতটা জনপ্রিয় হয়েছে কারণ মানুষ দিদিকে একাধিক অভিযোগ জানাতে পারছে না অথবা একাধিক সমস্যা তুলে ধরতে পারছে না এমনকি একাধিক সুচিন্তক মতামত দিতে পারছে না বলে অভিযোগ জানাচ্ছে। মানুষ চায় বাংলায় আরও উন্নয়ন হোক, বাংলা আরও এগিয়ে যাক।