আমফান ঝড়ের জেরে ৫দিন বিদ্যুৎ বিছিন্ন অবস্থাকে দিনরাত এক করে গড়িয়া স্টেশনের প্রতিটা ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে মানুষকে স্বস্তি দিলেন সি আই সি নজরুল আলি মন্ডল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ২৫শে মে ২০২০ : আমফান ঘুর্নি ঝড়ের জেরে গোটা গড়িয়া স্টেশন সহ খেয়াদহ এবং কামরাবাদ এলাকার বেহাল অবস্থা হয়ে যায়। চারিদিকে শুধু বিদ্যুতের পোল আর ভেঙে পড়া গাছের ছড়াছড়ি। এই অবস্থার কারণে গড়িয়ে স্টেশন চত্বর সহ খেয়াদহ ও কামরাবাদ এলাকা টানা ৫দিন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটাতে হয় মানুষকে।কিন্তু রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে এই ভোগান্তি ছিল ৬দিনের। একদিকে যেমন ছিল না বিদ্যুৎ অন্যদিকে জলের হাহাকার। কোন বাড়িতে জলের পাম্প চালানো সম্ভব হয়নি যার কারণে মানুষ জলের কষ্টে ভুগেছে। ঘনঘন ফোন গেছে সেই মানুষটার কাছে যাকে খুব নিজের করে ভাবে গোটা সোনারপুর উত্তর বিধানসভার মানুষ। সেই মানুষটার নাম নজরুল আলি মন্ডল।
আজ সকাল থেকে নজরুল আলি মন্ডল বিদ্যুৎ দপ্তরের সোনারপুর শাখার পদস্থ আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। সারাদিন ভেঙে পড়া বিদ্যুৎ পরিষেবাকে উন্নত করতে ছুটে বেড়িয়েছেন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা বিভিন্ন জায়গার পরিদর্শনে। এতদিন গঙ্গাজোয়ারা সাব স্টেশনে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হত বানতলা পাওয়ার স্টেশন থেকে। কিন্তু বানতলার অধীনে থাকা একাধিক বিদ্যুৎ পোল ও হাইটেনশন লাইনের পোস্ট ভেঙে থাকার ফলে গঙ্গাজোয়ারা সাব স্টেশনে বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই কারণে সুভাষগ্রাম থেকে বিদ্যুতের লাইন কালিকাপুর হয়ে আনতে হয় গঙ্গাজোয়ারা সাব স্টেশনে। দিনরাত এক করে মেরামতের কাজ করেছে বিদ্যুৎ দপ্তর কিন্তু একই সাথে দিনরাত এক করে সমস্যাকে মোকাবিলা করেছেন রিজিওনাল ম্যানেজার অনুপ মল্লিক, ডিভিশনাল ম্যানেজার বানীব্রত রায়, নরেন্দ্রপুর থানার আই সি সুখময় চক্রবর্তী এবং রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার বিদায়ী সি আই সি ও বর্তমানের প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য নজরুল আলি মন্ডল।নজরুল আলি মন্ডল আজ সকলকে সকাল থেকে আশ্বস্ত করেছিলেন যেভাবেই হোক আজ বিদ্যুৎ সংযোগ করবেন, করলেনও তাই।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত সোনারপুর উত্তর বিধানসভার ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে খবর ছিল এবং তাই দুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক ফিরদৌসী বেগমের সাথে সরাসরি কথা বলেন এবং তাঁর বিভিন্ন দপ্তরকে পরামর্শ দেন সাহায্য করার জন্য। তিনি ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাপারে বিধায়কের সাথে আলোচনা করেন। সেইমত পরদিন সকাল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি আমলাদের সাথে যোগাযোগ চলে।এই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থাকে যিনি নেপথ্যে থেকে মোকাবিলা করেছেন তিনি সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম। তবে গোটা সোনারপুরের মানুষ বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম ও নজরুল আলি মন্ডলের এই উদ্যোগকে সকলে সাধুবাদ জানায়।এব্যাপারে নজরুল আলি মন্ডল বলেন, করোনার সময় থেকে আমফান ঝড় পর্যন্ত যা করেছি তা শুধু মানুষকে ভালোবাসি আর কাজ করতে ভালোবাসি বলেই। এগুলো যদিও আমার দপ্তরের কাজ নয় কিন্তু আমার বিধানসভার মানুষ ভাল থাকবে বলেই নিজে উদ্যোগ নিয়ে করেছি। আমি আজ গড়িয়ায় জলের গাড়ি পাঠিয়েছি, মানুষের পানীয় জলের সমস্যা হচ্ছে বলে পানীয় জলের পাউচ পাঠিয়েছি, পৌরসভার জলের পাম্প না চলার ফলে মানুষের জলকষ্ট মেটাতে ডিজিটাল জেনারেটারের ব্যবস্থা করে পাম্প চালিয়ে জল সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেছি এমনকি মোবাইল চার্জ করার জন্য চার্জিং কিয়স্কের ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। দিনের শেষে মানুষকে দেওয়া আশ্বাস রাখতে পেরেছি এটাই শান্তির। আগামীকাল থেকে খেয়াদহের দুটো পঞ্চায়েত এবং কামরাবাদ এলাকার কাজ করবো। এই এলাকার অবস্থা আরও খারাপ। প্রচুর পোল ও গাছ ভেঙে পড়ে আছে।