দুঃস্থ মানুষের জন্য এবিপিতকমা-র খাদ্য সামগ্রীর আবেদনে সাড়া দিলেন মানবিক সাংসদ মিমি চক্রবর্তী
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১০ই এপ্রিল ২০২০ : সাংসদের বর্ণনা হয়তো অনেকেই জানেন না কারণ অনেকেই তাদের সাংসদকে সেভাবে দেখেন না। সাংসদ সাধারণত বিধায়কদের সাথে যোগাযোগ রেখেই কাজ করে থাকেন, কিন্তু ব্যতিক্রমী যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। মিমি চক্রবর্তী পাটুলিতে নিজস্ব অফিসে নিয়মিত বসেন মানুষের অভাব অভিযোগ শোনার জন্য। এছাড়া বর্তমানে করোনা দুর্জোগের জন্য তিনি বাড়িতে ১৪দিন কোয়ারান্টিনে থাকার কারণে সামনে না আসতে পারলেও তাঁর আপ্ত সহায়ক অনির্বান ভট্টাচার্যের মারফৎ তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের সর্বত্র সাহায্য করে চলেছেন।
এই অবস্থায় এবিপিতকমা-র সম্পাদক হিসাবে আমি নিজে ফোনে যোগাযোগ করলে অনির্বান ভট্টাচার্য উদ্যোগী হয়ে আমার এলাকার বেশ কিছু দুঃস্থ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য উদ্যোগী হয়।বেশ কিছু মানুষ এরকম আছেন যারা বৃদ্ধ অথবা বৃদ্ধা বাইরে বেরোতে পারে না বা এমনও কিছু মানুষ আছে যারা তাদের অসহায়তার কথা কাউকে বলতে পারেন না। এরকম কিছু মানুষকে সাহায্য করার কথা আমি জানিয়েছিলাম। সাথে সাথে অনির্বান ভট্টাচার্য পরেরদিন সেই খাদ্য সামগ্রীর সাহায্য করার কথা জানায় এবং যেমন কথা তেমন কাজ। ঘড়ি ধরে সঠিক সময় সাংসদের গাড়িতে খাদ্য সামগ্রী এনে উপস্থিত আমার এলাকায়। তখন বেশ কয়েকজন মানুষ আমার অনুরোধে এসে উপস্থিত হয়েছেন, অনির্বান ভট্টাচার্য গাড়ি থেকে নেমেই সেই মানুষগুলোর জন্য আনা খাদ্য সামগ্রী নামিয়ে দেন। আমি অনুরোধ করি তাঁকে উপস্থিত ৪০জন দুঃস্থ অসহায় মানুষগুলোর হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার জন্য। এরপর তাঁকে একজন অসহায় বৃদ্ধাকে খাদ্য সামগ্রী বাড়িতে গিয়ে তুলে দিতে অনুরোধ করি। অমায়িক অনির্বান সোজা সেই বৃদ্ধার বাড়িতে চলে আসেন এবং তাঁকে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। বৃদ্ধাকে দেখে অনির্বান নিজেই প্রশ্ন করেন আপনি বাড়ির বাইরে যাবেন না। বৃদ্ধা বলেন, তাঁর কেউ নেই, নিজেকেই সব করতে হয়।
বর্তমানে ওষুধ নেই, খেতে পারছেন না। চোখেও ঠিক করে দেখতে পারেন না, হয়তো ছানি পড়েছে। শুনে অনির্বান সাথে থাকা সাংসদ প্রতিনিধি মিঠুন মিত্রকে বলেন প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে অবিলম্বে ওষুধের ব্যবস্থা করতে এবং বৃদ্ধাকে আশ্বস্ত করেন লকডাউন কাটলে তাঁর ছানি অপারেশন করিয়ে দেবেন সম্পূর্ন সাংসদের টাকায়। তিনি এমনও বলেন, সপ্তাহে তাঁর কাছে সাংসদের অফিস থেকে একজন প্রতিনিধি এসে খোঁজ নিয়ে যাবে অথবা যেহেতু আমার এলাকার বাসিন্দা কোন অসুবিধা হলে যেন আমাকে তিনি জানান।
সেখান থেকে বেরোতেই মেসে থাকা কয়েকজন পাথরপ্রতিমার বাসিন্দা পেশায় ছাত্র, লকডাউনের কারণে বাড়ি যেতে পারে নি। তাদের কাছে কোন খাবারের মত অবস্থা নেই। সামনে থাকা রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি এবং গড়িয়া টাউন জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি নিজে দায়িত্ব তুলে নেন এই চারজন যুবকের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য।তাদের সাথে ছিলেন বানী দত্ত দঃ ২৪ পরগণা জেলা জয়হিন্দ বাহিনীর সদস্যা। সাথেসাথে চাল, ডাল, সাবান, তেল, মশলা, সোয়াবিন, ৩০টা ডিম, শ্যাম্পু, মুড়ি নিয়ে পৌঁছে দেয় অরিন্দম ও বানী। অন্যদিকে তারাই অনির্বানের কথা অনুযায়ী বৃদ্ধাকে ওষুধ এনে দেয়।
এটাই আমার স্বার্থকতা, যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানুষের জন্য নিজেকে বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছেন যাতে মানুষ সুস্থ থাকে, যাতে মানুষ অনাহারে না মারা যায় সেই কারণে। আমিও সেই রাজ্যের একজন নাগরিক হিসাবে অনির্বান, মিঠুন, অরিন্দম ও বানীর মত মানুষকে পাশে পেয়ে কিছু মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলাম।