রাম মন্দিরের ভিত্তি স্থাপনের জন্য সোনার ইট দান করবেন বাবরের বংশধর
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৯ : পাকিস্তানকে আক্রমণের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাশ্মীর নিয়ে অবস্থান ভারতীয়দের মুসলিম সম্প্রদায়কে বেশ চিন্তায় ফেলেছে। কিন্তু এর মাঝে রামমন্দির নিয়ে যা বললেন শেষ মুঘল বাদশাহ বাহাদুর শাহ জফর এর বংশধর হাবিবুদ্দিন তুসি (Habibuddin Tusi) তাতে আরও বিপাকে পড়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তিনি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের নির্মাণের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তুসি বলেন, অযোধ্যায় রাম মন্দিরের (Ram Mandir) নির্মাণের ভিত্তি স্থাপনের জন্য ওনার পরিবারের তরফ থেকে সোনার ইট দেওয়া হবে। কিছুদিন আগেই তুসি সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দাখিল করে অযোধ্যায় (Ayodhya) রাম মন্দির মামলায় নিজেকে মধ্যস্থতা কমিটিতে রাখার দাবি করেন। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ওনার আবেদন মান্যতা দেয়নি। ইংরেজি সংবাদ মাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় দেওয়া একটি ইন্টারভিউতে তুসি দাবি করে বলেন, রাম জন্মভূমি নিয়ে বিবাদ চলছে ঠিকই, কিন্তু ওই জমির মালিকানার কাগজপত্র কোন
পক্ষের কাছেই নেই। আর এই জন্য উনি মুঘল বংশের বংশধর হওয়ার সুবাদে আদালতে নিজের রায় পেশ করতে চান। উনি বলেন, আমি শুধু আদালতের সামনে নিজের বিচার পেশ করতে চাই। উনি আবেদন করে বলেন, মাত্র একবার আদালত আমার কথা শুনুক। তুসি বলেন, ১৫২৯ খ্রিষ্টাব্দে মুঘল শাসক বাবর নিজের সেনাদের নামাজ পড়ার জন্য বাবরি মসজিদের নির্মাণ করেছিল। ওই যায়গা শুধু সেনাদের নামাজ পড়ার জন্য ছিল, সেখানে আর কাউকে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হত না। যদিও উনি এর আগে ওই যায়গায় কি ছিল, সেটার প্রশ্ন এড়িয়ে যান। কিন্তু উনি বলেন, যদি হিন্দুরা ওই জায়গায় ভগবান রামের জন্মস্থল হিসেবে দাবি করে এবং সেখানে ভক্তি রাখে, তাহলে আমি একজন প্রকৃত মুসলিম হয়ে তাঁদের ভাবনার সন্মান করবো। জমির মালিকানা হকের কাগজ নিয়ে ওনাকে প্রশ্ন করা হলে উনি বলেন, ওনার কাছেও ওই জায়গার মালিকানার কাগজপত্র নেই, কিন্তু মুঘল বংশের উত্তরাধিকারি হওয়ার অধিকারে ওনাকে ওই জমির মালিক বলা যেতে পারে। উনি বলেন, আমাকে এই জমির মালিকানা দিলে,
আমি ওই জমি রাম মন্দির বানানোর জন্য দান করে দেবো। একই সাথে ওয়াকাফ বোর্ড-এর সদস্যরা রামমন্দির নির্মানের পক্ষে সহমত প্রকাশ করেছে।তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে সেখানে রামমন্দির নির্মানের জন্য তাঁরা জমি দান করতে প্রস্তুত। শিয়া ওয়াকাফ বোর্ড জানিয়েছে বাবরি মসজিদের মালিকানা একজন শিয়ার। সেন্ট্রাল শিয়া ওয়াকাফ বোর্ড সাম্প্রতিক সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে রামমন্দির নির্মানে তাদের কোন আপত্তি নেই। তাঁরা এমনও জানায় অযোধ্যা নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে তার নিস্পত্তির জন্য এলাহাবাদ কোর্টের রায়ে যে এক তৃতীয়াংশ জমি বাবরি মসজিদের জন্য দেওয়া হয়েছে তা তাঁরা
দান করে দিতে রাজি আছে। রামজন্মভুমি-বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত মামলায় তাঁরা দীপক মিশ্র-র বেঞ্চে জানায়। তাঁরা জানায়, বাবরি মসজিদের জায়গায় কখনো মসজিদ ছিল না, এটা শিয়া সম্প্রদায়ের সম্পত্তি ছিল আর সেখানে নতুন করে মসজিদ হতে পারে না।ইন্ডিয়া টুডে এক প্রদিবেদনে বলা হয় এটা শুধুমাত্র রামের জন্মভুমি তাই সেখানে রামমন্দির নির্মান করা যেতে পারে। এবিষয়ে শিয়া ওয়াকাফ বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়াসিম রিজভি চ্যালেঞ্জের সুরে জানান, বাবরের বংসধরেরা এই মামলায় পরাজিত হবে। কিন্তু সিনিয়র আইনজীবি রাজীব ধাওয়ান বলেন, এই বিষয়ে শিয়া ওয়াকাফ বোর্ডের কোন মন্তব্য করার অধিকার নেই।