গড়িয়া স্টেশনে সি-৫ বাস স্ট্যান্ডে রাতে দাঁড়িয়ে থাকা বাগবাজার ও পাইকপাড়া বাসে চলে এলোপাথাড়ি ভাঙচুর, সরকারি বেনিয়মে পারমিট ছাড়াই রুট চলছে
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর,১৬ই জুন ২০১৯ ঃ রাত তখন ১.৩০ গড়িয়া স্টেশনের সি ৫ বাস স্ট্যান্ডের মাঠে ও রাস্তার উপর বাগবাজার, পাইকপাড়া, নাকতলা-হাওড়া মিনিবাস, গড়িয়া স্টেশন-বি বি দি বাগ রুটের সব বাস গ্যারেজ করা ছিল। অনেক বাসে ড্রাইভার, খালাসি বা কন্ডেক্টার ক্লান্তিতে ঘুমোচ্ছে। এমন সময় আচমকা সেই দাঁড়িয়ে থাকা বাসের উপর আচমকা এলোপাথাড়ি ইট বৃষ্টি হতে থাকে। এরফলে বহু বাসের সামনের কাঁচ ভেঙে যায়। বহু বাসে ঘুমন্ত বাসকর্মীরা আহত হয়। এই প্রসঙ্গে বলা ভাল প্রতিদিন বাগবাজার ও পাইকপাড়া রুটের বাস গড়িয়া স্টেশনে জামজটের কারণ। স্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়ার পর তারা অলোকা মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে যাত্রী তোলার জন্য। এটা রোজকার একটা পরিচিত চিত্র। এছাড়া এর থেকেও বড় সমস্যা হল মিনিবাস স্ট্যান্ডে পার্কিং করলেও এই বাগবাজার ও পাইকপাড়া রুটের বাস বেপরোয়া ভাবে রাস্তার উপর পার্কিং করে। এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বহুদিনের। আজকের ঘটনা সেই ক্ষোভের প্রকাশ বলেই মনে করছেন অনেকে। গড়িয়ে স্টেশনের বাসিন্দারা এমনও বলেছেন আমরা এই সমস্যা সমাধান না হলে একদিন এই বাস চালানো বন্ধ করবো প্রয়োজনে আন্দোলনে পথে নামবো।
এবার আসি সব থেকে বড় সমস্যায়। বাগবাজার ও পাইকপাড়া রুটের কোন বাসের সরকারি রুট পারমিট নেই।এই বাস চলছে শুধুমাত্র সরকারি আবেদনের উপর। পরিবহণ দপ্তরে শুধুমাত্র একটা আবেদনের ভিত্তিতে চলছে এই দুটো রুটের বাস। ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতের ঘটনা জানতে গিয়ে এই তথ্য পাই এই রুটের কিছু কর্মীদের থেকে। তারা জানায়, এই রুটের যত বাস আছে সেগুলোর বিভিন্ন রুটের পারমিট আছে। সেই রুটে না চালিয়ে এই রুটে চালানো হচ্ছে। উদাহরণ দিয়ে তারা জানায় ২০৬ নং রুটের পারমিট আছে কিন্তু মালিকের সেই রুটে চালানোর ইচ্ছে নেই, সেই বাস এই রুটে চলছে। আর টি ও-র কাছে যখন সি এফ করতে যাচ্ছে তখন সেই পারমিট অনুযায়ী করা হচ্ছে। বাইপাসে শুধুমাত্র বারাসাত-গড়িয়া ও বারাসাত-বারুইপুর রুটের অনুমতি রয়েছে বাকি সব বেসরকারি রুটগুলো বেআইনি ভাবে চলছে।
তবে ভাবুন এবার সরকারি স্তরে কিভাবে বেআইনি চলছে। পরিবহণ দপ্তরের কোন নজর নেই এই বেনিয়মের উপর। প্রতিদিন এই রুটের বাসে হাজার হাজার যাত্রী অফিসে ও স্কুলে যাচ্ছে যেখানে কোন রুট পারমিট নেই। রাস্তায় চলার সময় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে কে তার দায় নেবে? বাসের কর্মীদের প্রশ্ন করা হল, পুলিশ যখন কেস দেয় তখন কিভাবে দেয়? তারা জানায়, রুট পারমিটের উপর তো কোন কেস হয় না। ড্রাইভারের লাইসেন্স বা বীমা কাগজের উপর কেস হয়। অধিকাংশ সময় পুলিশ স্পট ফাইন করে। এবার ভাবুন রোজকার যাত্রীদের জীবন নিয়ে পরিবহণ দপ্তর কিভাবে ছিনিমিনি খেলছে। সরকারের কোন নজরই নেই এই বেনিয়মের উপর।
যাইহোক ঘটনা ঘটার পর পুলিশ আসে এবং কে বা কারা করেছে তার তদন্তে নেমেছে। এই আচমকা আক্রমণে কয়কজন বাসকর্মী যখম হয়। তবে জানা যায় বাসের যা ক্ষতি হয়েছে তা মালিকপক্ষের থেকে মেরামত করা হবে এবং আবার সোমবার থেকে নিয়মিত চালু থাকবে।