প্রথম পাতা

“আনলক ১” স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মানুষের কথা মাথায় নিয়ে কাল থেকে নজরুল মন্ডলের উদ্যোগে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা মাছের পাইকারি কাটা খুলছে, খুলবে না সান্ধ্য বাজার

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১লা জুন ২০২০ : লকডাউনের প্রায় শুরু থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল গড়িয়া স্টেশনের নীচের মাছের কাটা যদিও কয়েকদিন খোলা ছিল উপরের মাছের কাটা যা পরবর্তীতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়।মাঝে কিশান মজদুর বাজার সহএই এলাকার বেশ কিছু বাজারের জীবাণুমুক্তকরণের জন্য উদ্যোগী হন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার সি আই সি ও সোনারপুর উত্তরের মূল সংগঠক নজরুল আলি মন্ডল। দীর্ঘদিন মাছের কাটা বন্ধ থাকার ফলে স্থানীয় মাছের পাইকারি ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন সাথে সমস্যায় পড়েছেন এলাকার ক্রেতারা।

এবার সেই স্থানীয় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কথা মাথায় নিয়ে নজরুল আলি মন্ডল উদ্যোগী হন গড়িয়া স্টেশনের দুটো কাটা চালু করার ব্যাপারে কিন্তু কোন অবস্থাতেই এখানে সন্ধ্যার সময় যে সান্ধ্য বাজার চলে তা খোলা যাবে না বলে জানিয়ে দেন নজরুল আলি মন্ডল। আজ দুপুরে মাছের পাইকারির জায়গা পরিদর্শন করতে উপস্থিত ছিলেন নজরুল আলি মন্ডল, সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি ও গড়িয়া স্টেশনের ৬টি পৌরসভা ওয়ার্ডের অবজারভার প্রবীর সরকার, সোনারপুর উত্তর বিধানসভার তৃণমূল যুব সভাপতি পাপাই দত্ত, গড়িয়া আই এন টি টি ইউ সি আহ্বায়ক পিন্টু দেবনাথ, সোনারপুর তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের সভাপতি সমরজিত ব্যানার্জি, ৪ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব সভাপতি অমিত পাল, জয়ন্ত সেনগুপ্ত সহ মাছ পাইকারি ব্যবসায়ীদের পক্ষে সুকান্ত মন্ডল সহ অনেকে।

আজ বাজার পরিদর্শনের পর নজরুল আলি মন্ডল সকলের সাথে বিশেষ বৈঠক করেন যেখানে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার বাস্তুকার শুভাশিস বসু ও উপরের উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গরা। বৈঠকে নজরুল আলি মন্ডল জানান, লকডাউনের দুই মাস এই মাছের পাইকারি বন্ধ রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র করোনা সংক্রমণের কারণে কিন্তু যখন রাজ্য সরকার আনলক ১ ঘোষণা করেছে তাই এখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে মাছের এই পাইকারি বাজার খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন স্থানীয় ২০জন ব্যবসায়ী আছে তাদের একদিন অন্তর একদিন করে বসতে হবে মানে প্রতিদিন ১০ জন পাইকারি ব্যবসায়ী তাদের ব্যবাসা খুলতে পারবেন।এই ব্যবসায়ীদের সাথে ক্রেতাদের বেশ কিছু নির্দেশিকা মানতে হবে। সকলকে মাস্ক পড়তে হবে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে, দুরত্ব বজায় রেখেই ব্যবসা করতে হবে। ব্যবসায়ী কমিটির পক্ষ থেকে দুজনকে এটা তদারকির জন্য রাখতে হবে।এছাড়া তিনি একটা নতুন কমিটি তৈরির কথা জানান। তিনি বলেন মাছ ও মাংস ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটা প্রাথমিক কমিটি তৈরি করবে যার দেখভালের জন্য একজন বা দুই বা তিনজন নেতৃত্বকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।

এরপর তিনি সান্ধ্য বাজার নিয়ে খুবই অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, এই সান্ধ্য বাজার নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে। এই সান্ধ্য বাজারের জন্য এলাকার মানুষ নবগ্রাম তথা শ্রীখন্ডায় যাওয়ার মূল রাস্তা ব্যবহার করতে পারে না। সবজি বাজারের বর্জ্য পদার্থ রাস্তার যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হয়। সান্ধ্য বাজারের মুখ থেকে অটো স্ট্যান্ডের শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যার পর প্রচুর অসামাজিক কাজকর্ম হয় বলেও অভিযোগ এসেছে।বাজার চলাকালীন রাস্তায় যেখানে সেখানে গাড়ি রাখা হয় যার ফলে স্থানীয় মানুষ যেমন চলতে পারে না তেমনিই এখান দিয়ে সুস্থ ভাবে গাড়ি চলতে পারে না, সৃষ্টি হয় যানজট যার উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই বাজার কমিটির। এই বৈঠকে বাজার কমিটির দীর্ঘদিনের হিসাব প্রকাশ না করা এবং বর্তমান বাজার কমিটির অসংখ্য বেনিয়মের অভিযোগ তোলে উপস্থিত অনেকে যার পরিপ্রেক্ষিতে নজরুল আলি মন্ডল বলেন আমরা পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে সান্ধ্য বাজার নিয়েও একটা নতুন কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি। এই বাজারে রাস্তার উপর গাড়ি থামিয়ে সবজি নামানো হয় যার ফলে মানুষের যাতায়াতের অসুবিধা হয় এবং বাজার সংলগ্ন ঝিলে যেমন ইচ্ছে ময়লা ফেলে ভরাটেরও অভিযোগ তোলেন অনেকে।

নজরুল আলি মন্ডল এব্যাপারে বলেন মাছের পাইকারি কাটা খোলাকে ঢাল করে সান্ধ্য বাজার নিয়ে এলাকার কয়েকজন বাজার গরম করার চেষ্টা করছে যে মাছের কাটা খুলে দেওয়া হলে কেন বাজার খোলা হবে না। আমি সাফ জানিয়ে দিচ্ছি মাছের কাটায় বাইরের কোন ব্যবসায়ী নেই, এখানে অধিকাংশ স্থানীয়, কিন্তু সান্ধ্য বাজারে অধিকাংশ ব্যবসায়ী বাইরের। আমরা বাইরের কোন ব্যবসায়ীদের অনুমতি দেবো না। মাছের বাজারের কমিটিকে বলা হয়েছে যারা স্থানীয় তাদের পরিচয় পত্র নিয়ে তালিকা তৈরি করতে যাতে বাইরের কোন ব্যবসায়ী না থাকে। এটাকে বিকৃত করে প্রশাসনিক মহলে জানানো হয়েছে যে মাছের বাজারে বাইরের ব্যবসায়ীরা এসে ব্যবসা করলে কেন সান্ধ্য বাজারে বাইরের ব্যবসায়ীদের অনুমতি দেওয়া হবে না। কিছু মানুষ এটাকে নিয়ে নোংরামি করার চেষ্টা করছে যা আগামীদিনে চললে প্রশাসনিক স্তরের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে কোন নোংরামি বরদাস্ত করা হবে না। এই মাছের পাইকারি বাজার পরীক্ষামূলক ভাবে দুদিনের জন্য খোলা হয়েছিল তাই নিয়ে কিছু মানুষ নোংরা রাজনীতি করেছে। ভুল তথ্য প্রদান করে বাকি ব্যবসায়ীদের উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছে। আমরা মাছের বাজারের তালিকা তৈরি হলে তা জেলা শাসকের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাবো এবং প্রয়োজন হলে সান্ধ্য বাজারের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি মেনে স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ীদের বসার অনুমিতি দেবো। আগামীকাল থেকে মাছের পাইকারি বাজার খুললেও একই জায়গায় সবজির সান্ধ্য বাজার খোলা হচ্ছে না বলে তিনি জানিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, মাছের পাইকারি ব্যবসায়ীরা নোংরা ফেলার জন্য ড্রামের ব্যবস্থা করবে যা পৌরসভার কনজারভেন্সির কর্মীদের দিয়ে তুলে নেওয়া হবে। এক্ষেত্রেও ময়লা কর্মীদের কোন অতিরিক্ত বাড়তি আর্থিক আবদার মেনে নেওয়া হবে না, এব্যাপারের বাস্তুকার শুভাশিস বসুকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কনজারভেন্সি কর্মীদের সাথে কথা বলে নেওয়ার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *