বাইকার্স ক্যাফেতে নারী দিবসে আলোচনায় উঠে এল নারীদের সমাজিক বিপ্লব
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৭ই মার্চ ২০২০ : আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আয়োজন করা হয় দক্ষিণ কলকাতার বাইকার্স ক্যাফেতে। নারী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আর জে রূপসা দাশগুপ্ত, সাংবাদিক হেম ছায়া দে, নৃত্যগুরু সঞ্চিতা ভট্টাচার্য, উডল্যান্ডসের প্রশাসক রূপালি বসু, রূকসানা কাপাডিয়া, আর জে স্মৃতি, অভিনেত্রী প্রিয়া দেবনাথ, ইপ্সিতা গাঙ্গুলি, সঙ্গীত শিল্পী পরমা ব্যানার্জি, চিত্রশিল্পী এলিনা বনিক, নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী ও শেফ প্রিয়াঙ্কা এম। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ক্যানডিড কমিউনিকেশনের প্রতিষ্ঠাতা পারমিতা ঘোষ।
নারী দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা চক্রে প্রথমে সকলে আত্মপরিচয় দিয়ে শুরু করে। এরপর শুরু হয় সকলের মনে নারী দিবস নিয়ে কি ভাবনা। সকলের সমগ্র ভাবনায় উঠে আসে বছরে একদিনের জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের যদিও কোন মাহাত্ম নেই কারণ পতিদিনই নারী দিবস পালন করা যায়। তবে একটা বিশেষ দিন এই কারণে করা হয়েছে যাতে আমরা সকলে বিভিন্ন স্তরে একত্র হতে পারি।আমরা সকলে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে পারি, পাশে দাঁড়াতে পারি, উৎসাহ জোগাতে পারি। কোন একদিনকে বিশেষ করে মহিলা দিবস হিসাবে পালন করার প্রয়োজন হয় না। এছাড়া আজকের নারীরা আর ঘরবন্দি থাকতে রাজি নয়, তারাও আজ স্বাধীনতা চায়, নিজেকে সমাজের সামনে মেলে ধরতে চায়। প্রযুক্তি উন্নতির সাথে সাথে প্রান্তিক নারীরাও নিজেদের স্বাধীনতা খুঁজে পেয়েছে। এই পুরুষ শাসিত সমাজে আজও নারীদের দাবিয়ে রাখার প্রবণতা আছে। কিন্তু সমাজে ও সংসারে আমাদের গুরুত্ব ও প্রাধান্য থাকা প্রয়োজন কারণ আমাদের ছাড়া একটা সমাজ তৈরি হতে পারে না।
আলোচনায় এমনও উঠে আসে নারীদের উচিত প্রথমে একজন ভাল মানুষ তৈরি হওয়া। নারীদের কিছু সমস্যা থাকার কারণে হিংসা তৈরি হয়। আর এই হিংসা থেকেই শুরু হয় সামাজিক অশান্তি। একজন নারী সবদিক সামলে চলতে জানে। একদিকে যেমন তাঁকে ঘর সামলাতে হয় তেমনই অন্যদিকে তাঁকে বাইরের দুনিয়াও সামলাতে হয়। কিন্তু আজও কর্মজীবনে নারীদের হেনস্থা হতে হয়। আজও নারীদের বেতনের দিকে বৈষম্যতা প্রকাশ পায়। আজও মনে করা হয় নারীরা পুরুষদের থেকে পিছিয়ে। নারীরা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। আলোচনায় উঠে আসে পুরুষরা নারীদের উপর বহুধরনের মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করে যার প্রতিবাদ হওয়া খুবই প্রয়োজন। আমদের উচিত এসবের বিরুদ্ধে একত্রিত প্রতিবাদের ঝড় তোলা। নিজের জীবনের সুখ ও শান্তি খুঁজে নেওয়াটা নারীদের একটা স্বাধীন সত্ত্বা হওয়া উচিত। জীবনে কাকে নিয়ে চলবে তা নিজেদের ঠিক করে নিতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত হয় যে একজন পুরুষকে নিয়ে জীবন কাটাতে হবে, প্রয়োজনে একজন নারীকে নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে বেঁচে থাকা যায়।
বাইকার্স ক্যাফের কর্ণধার মনোজ রাঠি বলেন, আমাদের জীবনে বলুন আর সংসারে বলুন নারীরা হল সেই অটুট বন্ধন, যার দ্বারা সম্পর্ক টিকে থাকে। তা সে মা হতে পারে, স্ত্রী হতে পারে, বোন হতে পারে, বান্ধবী হতে পারে। জীবনের চলার পথে নারীদের বিভিন্ন রূপ একটা পুরুষকে সম্পূর্ণ করে। আমাদের সকলের উচিত নারীদের সম্মান করা। সে যে রূপেই হোক।সমাজে তাদের ভূমিকা ভোলার নয়।
প্রবীণ অভিনেতা বরূন চন্দ বলেন, আমার জীবনে দুজন নারীর ভূমিকা খুবই মারাত্মক, একজন আমার মা আর অন্যজন আমার স্ত্রী। আজকের সমাজে তাই বলা হয় “আমরা নারী, আমরাই পারি”। সত্যিই তাই একটা নারী পারে একজন পুরুষকে সোজা পথে চালিত করতে, আবার একজন নারী পারে পুরুষকে বিপথে নিয়ে যেতে। তাই নারীকে অবহেলা করা উচিত নয়। প্রচারে : ক্যানডিড কমিউনিকেশন।