শুধু করোনা নয়, সারা বছর তহবিলের ৫০% অর্থ চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যয় করে বালি বিধানসভার বিধায়ক বৈশালী
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৫শে মার্চ ২০২০ : সারা বিশ্ব করোনা জ্বরে ভুগছে। লাফিয়ে লাফিয়ে মৃতের হার বাড়ছে। এই মৃত্যুর সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে তা কেউ জানে না। এখনও এই ভাইরাসের প্রতিশেধক আসে নি। প্রধানমন্ত্রী গতকাল রাতে ঘোষণা করলেন চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে আর্থিক অনুদানের কথা। কিন্তু এই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী অনেক আগেই এধরণের ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সব সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় করে দিয়েছেন। এছাড়া রাজ্যের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সাথী করে দিয়েছেন যা দিয়ে মানুষ তাদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে পারে। করোনার থাবা থেকে স্বাস্থ্য কর্মী, চিকিৎসক ও সাফাই কর্মীদের জন্য অতিরিক্ত ৫ লাখ টাকার বীমা ঘোষণা করেছেন। ইতিমধ্যে ভারতে করোনা আক্রান্ত ৫৬২ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১১।ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১০০ ও ইতালিতে ৬০০০।
কিন্তু চিকিৎসা ব্যবসথা নিয়ে অনেক আগে থেকেই ব্যাতিক্রম বালি বিধানসভার বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া।বৈশালী আমাদের জানায়, ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখেছি মানুষের পাশে থাকতে। ছোটবেলায় বাড়িতে দেখতাম অনেক মানুষ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বাবার কাছে আসতো। অধিকাংশ মানুষের আর্থিক সমস্যা থেকে স্বাস্থ্য সমস্যাটাই বেশি থাকতো। বাবাকে দেখতাম তাদের সাহায্য করতে। বিধায়ক হওয়ার পর তাই আমার একটাই লক্ষ্য ছিল আমার বিধানসভায় মানুষ যাতে যথেষ্ট চিকিৎসা পরিষেবা পায়। আমি আমার বিধানসভায় হাসপাতালগুলোকে একেবারে বদলে দিয়েছি। সব হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সক্ষম হয়েছি। হাসপাতালের আগের পরিবেশ আর এখন নেই।২০১৬ সাল থেকে বিধায়ক তহবিলের ৫০% টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা অনেক উন্নত করেছি।
আমরা বালিতে গিয়ে হাসপাতাল পরিক্রমা করে বৈশালী ডালমিয়ার কথার সাথে কাজে মিল খুঁজে পেলাম।একটা সময় ছিল সব হাসপাতাল এলাকাগুলো সমাজবিরোধীদের দখলে ছিল। হাসপাতালগুলোতে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্বের কারণে মানুষ হাসপাতালে যেতে ভয় পেত। কিন্তু এখন আর সেই পরিবেশ নেই। ভোল বদলে গেছে। হাসপাতালের চারিপাশে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।সত্যবালা হাসপাতালে পিপিপি মডেলে ডায়লেসিস বিভাগের কাজ চলছে। শিশুমৃত্যু ও মায়ের মৃত্যু কমাতে বি এস ইউ পরিষেবা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।মা ও শিশুদের জন্য শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ার্ড তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে রোগীর বাড়ির লোকেদের জন্য সুলভ সৌচালয় হয়েছে।রোগীদের সাথে আসা বাড়ির লোকেদের জন্য রাত্রিবাসের জন্য চারতলা আবাসনের কাজ চলছে, ২০২০ সালের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।অপারেশন থিয়েটারে উন্নত প্রযুক্তির চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়া হয়েছে যেমন ডিজিটাল এক্স রে মেশিন। এছাড়া হাসপাতালে অসুস্থ বয়স্কদের জন্য ও অসহায় মানুষদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন কিছু মানুষদের রাখা হয় যারা নিজেদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, কেউ তাদের দেখার নেই। এই সব মানুষদের চিকিৎসা ও সারাদিনের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা আছে। খুব তাড়াতাড়ি আইসিইউ ও এস এন এস ইউ বিভাগ খোলা হবে। আমার বিধানসভা কেন্দ্রের বাকি হাসপাতালগুলোকেও একইসাথে নজরে রাখি। কোথাও কোন অনিয়ম হতে দিই না। মানুষ যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিকঠাক পায় সেটা দেখাই আমার কাজ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর যেভাবে মানুষের জন্য এগিয়ে এসেছে সেটাকে আমার কেন্দ্রে কার্যকরি করাটা আমার একটা প্রধান দায়িত্ব।
বিধায়ক বৈশালী বলেন, আমি নিজে সত্যবালা হাসপাতাল, জসবাল হাসপাতালের চেয়ার পার্সেন হওয়াতে আমি নিজে হাতে এই সব হাসপাতালের পরিষেবা প্রতিটা সময় নজরে রাখি। হাসপাতাল সুপার থেকে নোডাল অফিসারের সাথে নিয়ম করে যোগাযোগ রাখি যাতে কোন রোগীর আউটডরে ও ভর্তির ব্যাপারে কোন সমস্যা না হয়।এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে লিলুয়ায় ভারতের বাইরে থেকে অনেক মানুষ ফিরে এসেছে।এই নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে। এই সব মানুষদের কোয়ারান্টাইনে রেখে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা আতঙ্কের জন্য একটা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। করোনা পরীক্ষা থেকে, বাইরে থেকে আসা মানুষদের বিমানবন্দর থেকে নামিয়ে তাদের পরীক্ষা করিয়ে বালি শহরে এনে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করেছি।