ব্রিগেডে ফের বাঙালিকে অপমান করলেন বিজেপি পরিচালিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৮ই মার্চ ২০২১ : বিজেপি দলটার মূল উদ্যোক্তা ডাঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। বিজেপি নেতৃত্ব সকলেই এই কথা মুখে বলেন কিন্তু সামনে দেখা যায় একজনেরই নাম ও ছবি, তিনি হলেন নরেন্দ্র দামোদর মোদী। সব জায়গায় তাঁর কাট আউট, সব পোস্টারে তাঁর ছবি আর তাঁর সাথে থাকেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবি। তৃনমূল থেকে চাটুয়া নেতারা মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সংস্কৃতি কোথায় গিয়ে ঠেকেছে মহিলা মোর্চা নেত্রী লকেট চ্যাটার্জি জোর গলায় আওয়াজ তুলছেন “মোদী”, রাজীব ব্যানার্জি চেঁচিয়ে বলছেন “মোদী”, মুকুল রায় আরও জোরে হাঁকছেন “মোদী”। মোদী কথাটা যেন খুব সাধারণ, তাদের সকলের খুব ছোটবেলার আড্ডার বন্ধু। অন্ততঃ “মোদীজি” কথাটা বলা যায়, তাতে তারা ছোট হবেন না বরং প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা বাড়বে।
ব্রিগেডেও তার কোন ব্যাতিক্রম ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নেরেন্দ্র মোদী মুখে বললেন ডাঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির দুটো স্বপ্ন ছিল “এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত” আর অন্যটা “এক বিধান, এক নিশান, এক প্রধান”, আর এটাই বিজেপি-র আদর্শ। কিন্তু ব্রিগেডে মঞ্চে যে ব্যাকড্রপ ছিল তাতে এক বিশাল নরেন্দ্র মোদী, এক বিশাল দিলীপ ঘোষ কিন্তু ছোট্ট করে সব মনিষীদের ভিড়ের মাঝে ডাঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। যাকে আদর্শ করে চলছে দলটা তাকেই এত ছোট করে দেখার প্রধান কারণ কি তবে তিনি একজন বাঙালি? তাঁকে যদি সবার থেকে বড় করে দেখানো হয় তবে গুজরাট খুব সমস্যায় পড়বে? যদি তাঁকে সকলে দেখে নেয় তবে বাঙালিরা অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠতে পারে এই আশঙ্কা? তবে কেন সেই প্রতিষ্ঠাতাকে সামনে রেখে ভোট ময়দানে রাজনীতিটা করতে প্রস্তুত নয় দল? কেন দল এই বাঙালি সেন্টিমেন্টকে সবার সামনে তুলে ধরতে রাজি নন? তবে কি সেই মানুষটার মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য চাপে পড়বে গুজরাতি শাসিত বিজেপি কেন্দ্রীয় দল? এর কোন উত্তর নেই বাংলার বিজেপি শিবিরের কাছে। হায় রে বাঙালি! প্রধানমন্ত্রী বললেন আজ থেকে ২৫ বছর পর অর্থাৎ ২০৪৭ সালে বাংলা আবার চালকের জায়গা নেবে, শ্রেষ্ঠ আসন পাবে। ততদিনে গতকাল যারা ব্রিগেডে উপস্থিত ছিল নেতা থেকে মন্ত্রী, সাধারণ কর্মী থেকে সমর্থকদের মধ্যে অনেকেই থাকবে না।নরেন্দ্র মোদী নিজেও হয়তো আর থাকবেন না। কিন্তু বাঙালিকে একটা বড় সান্তনা পুরস্কার দিয়ে গেলেন যার জন্য বাঙালিকে অপেক্ষা করে থাকতে হবে আরও ২৫টা বছর।ছবি : অসীম পাল