প্রথম পাতা

হরিমিট্টি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সবুজায়নের মধ্যমে বিশ্ব অরণ্য দিবস

‌অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৯শে মার্চ ২০২১ : ‌হরিবংশ–‌ চিলড্রেন অফ টুমরো— কিছু সচেতন নাগরিকের একজোট হয়ে গড়ে তোলা উদ্যোগ, যারা বিশ্ব উষ্ণায়নকে প্রকৃত বিপদ বলে মনে করে, গড়ে তুলতে চায় সুস্থ পৃথিবীকে। গত কয়েক দশকে যে সবুজ আমরা ধ্বংস করেছি, তা কি ফিরিয়ে দিতে পারি?‌ কেউ নিশ্চিতভাবে এর উত্তর দিতে পারে না। তবুও, আমাদের কোথাও একটা থেকে শুরু করতে হবে। আর তার জন্য বিশ্ব অরণ্য দিবসের চেয়ে আর কোন দিনই বা শুভ হতে পারে!‌

গত দশ বছরে আমরা এমন সব পুরুষ ও মহিলাদের প্রশংসার কথা শুনেছি, যাঁরা সবুজায়নের লক্ষ্যে নিজেদের হাতে গাছ পুঁতে একটা আস্ত অরণ্যই গড়ে তুলেছেন। আমাদের অনেকের মধ্যেই সুপ্ত ইচ্ছে, এই সবুজ–‌যোদ্ধাদের লড়াইয়ে শরিক হই, যাঁরা প্রতিদিনই ধূসর মাটিকে রঙিন করে তোলার কাজে নিজেদের প্রতিটি মুহূর্ত ব্যয় করছেন। এই সবুজ বলতে নিছক সবুজ হয়ে থাকা নয়। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতিচ্ছায়া এবং নানান রঙ আছে, যা অরণ্যভূমিতে জীবন্ত হয়ে ওঠে। ছোট্ট বুনো ফুল, পাখি ও পোকামাকড়, ছোট ছোট প্রাণী, এমনকি বড় জন্তুজানোয়ারও প্রকৃত ছবিটিকে তুলে ধরে। লোকে অবাক হতে পারে এই ভেবে যে, এত কিছু আমরা করতে পারি শুধুমাত্র একটা গাছ পোঁতার মাধ্যমেই?‌

এর উত্তরটা নিজেরাই খুঁজে বের করুন। আমরা আবেদন জানাচ্ছি, এক হাজার গাছের চারা পুঁতুন এবং তার যত্ন নিন, যতক্ষণ না তারা নিজেরা বেঁচে থাকতে শিখছে এবং বাধাহীনভাবে বেড়ে উঠতে পারছে। আপনারা আবার প্রশ্ন তুলতে পারেন, কয়েকশো চারাগাছ পুঁতে এটা কী করে সম্ভব?‌ আসল লক্ষ্য তো, আরও আরও অনেক অনেক বেশি চারা পোঁতা। শুধু কিছু সংখ্যা আর এলাকায় আটকে থাকা নয়। মূল ভাবনা হল, আরও অনেকের কাছে পৌঁছনো, আরও বহু মানুষকে এই উদ্যোগে শরিক করা।

এত কিছু তালগোল পাকানো কাজের মধ্যেও আমরা সঙ্গোপনে একটা জিনিস লালন করে চলেছি। অরণ্য–‌সৃজনে যত সেরা মানুষজন রয়েছেন, তাঁদের অন্যতম হলেন জাপানি পথিকৃৎ আকিরা মিয়াওয়াকি। চারা রোপণের যত অপ্রথাগত পদ্ধতি রয়েছে, তার তুলনায় মিয়াওয়াকির পদ্ধতিতে আরও বেশি যেসব সুবিধা পাওয়া যায়, তার তালিকা নিচে দেওয়া হল।

১। প্রথাগত রোপণ পদ্ধতির চেয়ে কম করেও ৩০ গুণ বেশি গাছ পোঁতা যায়
২। প্রথাগত রোপণ পদ্ধতির চেয়ে একই অঞ্চলে কম করেও ৩০০ শতাংশ বেশি প্রজাতির গাছ পোঁতা যায়
৩। প্রকৃত অর্থে শব্দ ও ধুলোর দূষণ কমানো যায় ৩০০০ শতাংশ
৪। প্রথাগত অর‌ণ্যের চেয়ে ৩০ গুণ বা তারও বেশি কার্বন ডাই–‌অক্সাইড শোষিত হয়
৫। নিশ্চিতভাবেই বছরে কম করেও এক মিটার বেড়ে ওঠে গাছগুলো
৬। প্রথম তিন বছর পর বিনা পরিচর্যাতেই গড়ে ওঠে বন্য এবং স্থানীয় অরণ্য
৭। পুরোপুরি রাসায়নিক সার–‌মুক্ত অরণ্য, যা নিজেই বেড়ে ওঠে এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র‌্যে সাহায্য করে।

‘‌হরিবংশ–‌ চিলড্রেন অভ টুমরো’‌ আগামী প্রজন্মের জন্য প্রকৃত উপহার, যারা এই সুন্দর বিশ্বের উপহার ভাগ করে নিতে পারবে। জৈববৈচিত্র‌্য আর বাস্তুতন্ত্রের সমন্বয়ও এই কার্যক্রমের অংশ হওয়া উচিত, যার বর্তমান লক্ষ্য পেশাদারি চমৎকারিত্ব অর্জন। এই সব কঠোর নিয়মানুবর্তী কাজকর্মের মধ্যেও কিছু গাছকে তার পায়ের তলার মাটি খুঁজে নিতে সাহায্য করার এই প্রচেষ্টা সহজ–‌অনাড়ম্বর জীবনযাপনে উৎসাহ ‌ও উদ্দীপনাও জোগায়। প্রচারে : লঞ্চার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *