নির্বাচনে প্রার্থী পদে অনেকে এগিয়ে কিন্তু করোনা মোকাবিলায় মানুষের পাশে রাজপুর সোনারপুরের বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধা
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ১৬ই জুন ২০২১ : বর্তমানে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের ফলে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে রাজ্যে করোনার প্রভাব অনেকটা কমলেও এখনও করোনার থাবা থেকে মুক্ত হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না কারণ সামনেই তৃতীয় তরঙ্গের সম্ভাবনা আছে। মানুষ বেশ আতঙ্কেই আছে সামনের তৃতীয় তরঙ্গে কি হয় তা নিয়ে। এখনও মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও সংখ্যাটা অনেকটাই কম হয়েছে। বর্তমানে রাজ্য সরকার পূর্ণাঙ্গ লকডাউন ঘোষণা না করলেও বেশ কিছু বিধি নিষেধের মধ্যে দিয়ে মানুষকে চলতে হচ্ছে।
এই অবস্থায় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে কিছু তৃনমূল নেতা আগামী পৌরসভা নির্বাচনে নিজেদের তৃণমূলের প্রার্থী করতে ময়দানে নেমে পড়েছে। তারা এখনই প্রচার করতে শুরু করে দিয়েছে আগামী নির্বাচনে তারাই দলীয় প্রার্থী, তাদেরই ভোট দিতে হবে। কিন্তু মানুষ কিভাবে বাঁচবে তা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথা নেই। তাদের টার্গেট একটাই কোনভাবে একবার প্রার্থী হতে পারলে হয়, তারপর তো পাঁচ বছর আছেই। এই করোনার সময় মানুষকে কিভাবে ভ্যাকসিন পাইয়ে দেওয়া যায় বা করোনার সময় কিকরে আক্রান্ত পরিবারের বাড়িকে জীবানুমুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছে না মানুষ। তাদের এই সময়ে নিজেদের প্রচার দেখে মানুষ হাসছে আর সমালোচনা করছে। এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে মানুষ বলছে “নির্বাচনের কোন ঘোষণাই হল না, আদৌ এবছর হবে কিনা তার নেই ঠিকানা।এদের মানুষের পাশে থাকার মতো মানসিকতা নেই, কি করে এরা নিজেদের প্রার্থী হিসাবে দাবি করে।”
মানুষ এই সময় দেখতে পারছে সেই ১০ বছরের যিনি পৌরমাতা ছিলেন সেই অশোকা মৃধাকে। এলাকায় গিয়ে আক্রান্ত মানুষের পাশে থেকে এলাকা জীবানুমুক্ত সেই বাড়ি স্যানিটাইজ করা থেকে মানুষকে এই বিধিনিষেধ পরিস্থিতির মধ্যে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সবক্ষেত্রেই সেই অশোকা মৃধা, বাকিরা ফেসবুক হিরো। এবার তাদের দেখাদেখি সেই অশোকা মৃধাও ফেসবুকে ছবি দিয়ে পোস্ট করে পাল্লা দিয়ে জানান দিচ্ছেন মানুষের পাশে তিনি আছেন। কিন্তু বিগত ১০ বছরে অশোকাকে দেখা যায় নি ফেসবুক পোস্ট করে জানান দিতে। কিন্তু সমাজ বদলেছে, সময় বদলেছে, পরিস্থিতি বদলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ তাই সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিতে তিনিও পোস্ট করতে শুরু করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের জানান, আমি মনে করি মানুষের পাশে থেকে কাজ করাটাই একজন জনপ্রতিনিধির কাজ, সেটাই প্রচার। কিন্তু এখন দেখছি এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষের জন্য যত না কাজ তার থেকে দু একটা ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলেই বেশি প্রচারের শিরোনামে থাকা যায়। বড় বড় নেতৃত্বরা মানুষের বৃহৎ স্বার্থে ফেসবুকে পোস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেমন আমাদের বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম নিজের উন্নয়ন মানুষের কাছে বেশি করে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফেসবুক পেজ করেছেন যাতে মানুষ বেশি করে জানতে পারে কোথায় কোথায় কি ধরনের উন্নয়ন করছেন। এর ফলে অন্য এলাকার মানুষ সেই সমস্যা থাকলে উন্নয়নের কথা বলতে পারবে। এরফলে আরও উন্নয়ন হবে। কিন্তু আমি দেখিনি বিধায়ক বিধানসভায় যান বিভিন্ন মন্ত্রীর সাথে কথা বলেন, কখনও মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বা রাজ্যের অন্য মন্ত্রীদের সাথে ছবি পোস্ট করে জানান দিচ্ছেন যে কোন মন্ত্রীর সাথে তার কি সম্পর্ক। আমিও তাই ওয়ার্ডে কোথায় কি কাজ হচ্ছে তা জানানোর জন্য এই পোস্ট করা শুরু করেছি নাহলে অনেকে সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দিচ্ছে।অনেকে ওয়ার্ডের মানুষকে বোঝাতে শুরু করে দিয়েছে পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, পৌরমাতা বলে আর কিছুই নেই, এখন যা করবো আমরা আর বিধায়ক।এবার আমাকেই ভোটটা দিতে হবে।মানুষ এরফলে বিভ্রান্ত হচ্ছে যে আসল পরিষেবা কার কাছে গেলে পাবে, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। আমার নেতৃত্ব বলে দিয়েছেন, ওয়ার্ড তোমার, তাই তোমাকেই ওয়ার্ড দেখতে হবে, তুমি ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর, দায়িত্ব তোমার।তাই নেতৃত্বের কথা মেনে আমি মানুষের পাশে আছি ও থাকবো।