প্রথম পাতা

মণিপাল হাসপাতাল ই এম বাইপাস ও লেডিজ সার্কেল ইন্ডিয়ার উদ্যোগে “ম্যামো মিশন” – সচেতনতা ও স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন

অম্বর ভট্টাচার্য্য, তকমা নিউজ, কলকাতা, ১৩ই অক্টোবর ২০২৫ : স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস উপলক্ষে, ভারতের অন্যতম বৃহৎ হাসপাতাল চেইন মণিপাল হাসপাতালস গ্রুপ–এর একটি ইউনিট মণিপাল হাসপাতাল ই এম বাইপাস এবং লেডিজ সার্কেল ইন্ডিয়া (এলসিআই) যৌথভাবে আয়োজন করল একটি বিশেষ সচেতনতা কর্মসূচি। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে শিক্ষা, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ এবং আক্রান্ত মহিলাদের মানসিক সহায়তা প্রদান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডা. নেহা চৌধুরী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ডিপার্টমেন্ট হেড, সার্জিক্যাল অনকোলজি (ব্রেস্ট সার্জারি), মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুর ক্লাস্টার , ডা. পূজা আগরওয়াল, কনসালট্যান্ট – সার্জিক্যাল অনকোলজি (ব্রেস্ট সার্জারি), মণিপাল হাসপাতাল ই এম বাইপাস, এবং সিআর মানসি শাহ, ন্যাশনাল স্পেশাল ইভেন্টস কনভেনর, লেডিজ সার্কেল ইন্ডিয়া। তাঁরা তিনজনেই প্রথম দিকে ক্যান্সার শনাক্ত করার গুরুত্ব এবং সমাজে সচেতনতা ছড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।

এই বছরের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) থিম “Every Story is Unique, Every Journey Matters”–এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, এই কর্মসূচিতে প্রতিটি মহিলার ক্যান্সারের লড়াইকে সম্মান জানানো হয় এবং সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক যত্নের উপর জোর দেওয়া হয়।
লেডিজ সার্কেল ইন্ডিয়া তাদের দেশব্যাপী অভিযান “ম্যামো মিশন” শুরু করেছে, যার উদ্দেশ্য সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের মধ্যে শিক্ষা, সচেতনতা ও বিনামূল্যে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা। এই মিশনের বার্তা — “Check. Thrive. Protect.” — অর্থাৎ নিজেকে পরীক্ষা করুন, সুস্থ থাকুন, এবং নিজের যত্ন নিন। কলকাতায় এই উদ্যোগে তারা মণিপাল হাসপাতালের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিজের স্তন পরীক্ষা করার সহজ পদ্ধতি এবং নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিভিন্ন পেশার মহিলারা এই সচেতনতামূলক আলোচনা ও ইন্টার‌্যাকটিভ সেশনে অংশ নেন।

বিশেষভাবে, মণিপাল হাসপাতাল ই এম বাইপাস লেডিজ সার্কেল ইন্ডিয়ার সদস্যদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসক পরামর্শের সুযোগ দিচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজন হলে বিনামূল্যে ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা করা হবে। এই উদ্যোগে মোট ২০টি বিনামূল্যে ম্যামোগ্রাম স্ক্রিনিংয়ের সুযোগ দেওয়া হবে।
এই প্রসঙ্গে সিআর মানসি শাহ বলেন, “ম্যামো মিশন–এর মাধ্যমে আমরা প্রতিটি মহিলাকে, বিশেষত যারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে আছেন, জানাতে চাই যে আগেভাগে ক্যান্সার ধরা পড়লে জীবন বাঁচানো সম্ভব। আমরা চাই মহিলারা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হোন, নিয়মিত পরীক্ষা করুন এবং সুস্থ থাকুন। আমরা কৃতজ্ঞ মণিপাল হাসপাতালের প্রতি, যারা আমাদের সঙ্গে এই প্রাণবাঁচানো উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন।”
ডা. নেহা চৌধুরী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ডিপার্টমেন্ট হেড, সার্জিক্যাল অনকোলজি (ব্রেস্ট সার্জারি), মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুর ক্লাস্টার বলেন, “প্রতিটি স্তন ক্যান্সারের গল্প আলাদা, কিন্তু বাঁচার পথ শুরু হয় একই জায়গা থেকে — আগেভাগে পরীক্ষা। নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা ও ম্যামোগ্রামই আমাদের সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র। ভয়কে জ্ঞানে পরিণত করি, সচেতনতায় এক হই।”
ডা. পূজা আগরওয়াল বলেন, “জ্ঞান ও সময়মতো পদক্ষেপই জীবন বাঁচাতে পারে। ম্যামো মিশন–এর মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি যেন প্রত্যেক মহিলা সচেতনতা ও স্ক্রিনিংয়ের সুবিধা পান, কারণ প্রতিটি যাত্রা গুরুত্বপূর্ণ, এবং সঠিক সময়ে যত্ন নেওয়া ভয়কে পরিণত করতে পারে সাহস ও বাঁচার আশায়।”
এই সহযোগিতার মাধ্যমে লেডিজ সার্কেল ইন্ডিয়া সমাজে বাস্তব পরিবর্তন আনতে চায় শিক্ষা ও পরিষেবার মাধ্যমে। একইসঙ্গে, মণিপাল হাসপাতালও সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার প্রতিশ্রুতি আরও দৃঢ় করছে। একসঙ্গে কাজ করে তারা চায় স্তন স্বাস্থ্য সচেতনতাকে শুধু বার্তা নয়, এক সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *