সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় “বাংলার গর্ব মমতা” কর্মসূচীতে স্বীকৃতি সম্মেলনে সাড়া ফেললেন ফিরদৌসী
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১৫ই মার্চ ২০২০ : তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির “বাংলার গর্ব মমতা”-র প্রথম পর্বের তৃতীয় কর্মসূচী ছিল “স্বীকৃতি সম্মেলন”। এই “স্বীকৃতি সম্মেলন” সেই সব তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় যারা দীর্ঘদিন তৃণমূল দল করেছেন কিন্তু সাময়িক কারণে তাঁরা দলে আজ ব্রাত্য বা দলীয় কর্মসূচী থেকে ক্ষোভে বা বিদ্বেষে বসে গেছেন।আজ সকালে বোড়াল রক্ষিতের মোড়ে ফিরদৌসী বেগমের উদ্যোগে গোটা সোনারপুর উত্তর বিধানসভার সেই সব প্রবীণ ও নিষ্ক্রিয় কর্মীদের নিয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনারপুর উত্তর বিধানসভা অন্তর্গত রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি ও ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ সদস্য-সদস্যারা। তবে অনুষ্ঠানে ছিলেন না ৬ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা দিপালী নস্কর, ৪ নং ওয়ার্ডের পৌরপিতা বিভাস মুখার্জি ও ১ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা পাপিয়া হালদার। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর সরকার, সোনারপুর উত্তর বিধানসভার তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি পাপাই দত্ত, সোনারপুর উত্তর বিধানসভার জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি বিশ্বজিত দাস, সোনারপুর উত্তর বিধানসভা ছাত্র পরিষদ সভাপতি সমরজিত ব্যানার্জি সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের পদাধিকার ও কর্মীরা।
অনুষ্ঠানে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম, শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পতাকা উত্তোলন করেন নজরুল আলি মন্ডল এবং শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে মাল্যদান করেন বাকি নেতৃত্বরা। অনুষ্ঠানে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিধায়ক খুবই ইতিবাচক বক্তব্য রেখে বলেন দল কারও একার নয়, দল সকলের, তাই সকলকে নিয়ে চলতে হবে। প্রবীণদের মর্যাদা দিতে হবে, তাদের উপদেশকে সাথে নিয়ে দোলের কাজ করতে হবে। নজরুল আলি মন্ডল বলেন, দলে অনেকে মনে করেন তাঁরা তাদের এলাকায় শেষ কথা, বাস্তবে তা কিন্তু নয়, দল সবার শেষ কথা। দোলের জন্য আমরা, আমাদের জন্য দল কিন্তু নয়। দল থাকলে আমরা থাকবো, আমরা না থাকলেও দল থাকবে। গৌতম পাইন, কানাই কর্মকার ও খেয়াদহ ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, জেলা পরিষদের সদস্য রঞ্জন বৈদ্য তাদের মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেন। অনুষ্ঠান সূচনা হয় ভারতীয় সংবিধান শপথ পাঠের মাধ্যমে।সকলকে নিয়ে সংবিধান পাঠ করান বিধায়ক।
অনুষ্ঠানে “বাংলার গর্ব মমতা” কর্মসূচীর বিস্তারিত ভিডিও-র মাধ্যমে দেখানো হয়। দলের নিষ্ক্রিয় কর্মীদের উত্তরীয় ও উপহার দিয়ে প্রায় ৫০ জনকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। বিধায়ক বলেন, এই ৫০ জনের বাইরে যদি কেউ বাদ গিয়ে থাকেন তাদের নির্ধারণ করে সেই ওয়ার্ডে গিয়ে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্বর্ধিত করা হবে। এমনও যদি হয় কোন এই ধরনের কর্মীর নাম কোন অজানা কারণে বাদ যায় কিন্তু আমার কাছে সেই নাম উঠে আসে আমি নিজে গিয়ে তাঁকে সম্বর্ধনা জানাবো। অনুষ্ঠানের শেষে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শেষ হয় এবং সকলকে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।এই অনুষ্ঠানের নামকরণ নিয়ে মন্তব্য করেন প্রাক্তন গড়িয়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তপন দে। তিনি বলেন, আমরা দল ছেড়ে যাই নি, আমরা দলে ছিলাম তবে বিভিন্ন মান অভিমানের কারণে নিষ্ক্রিয় ছিলাম। এই অনুষ্ঠানের নামকরণ নিয়ে আমার আপত্তি আছে। স্বীকৃতি কেন হবে, সৌজন্য সম্মেলন হওয়া উচিত ছিল। স্বীকৃতি সম্মেলন মানে আমাদের নতুন করে স্বীকৃতি দেওয়া হল। আমরা তো আগে থেকে স্বীকৃত, আজ আর কি স্বীকৃতি দেবে। যদিও এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।