দিল্লি, মুম্বাই, কেরলের পর কলকাতা করোনার থাবা, “বাংলার গর্ব মমতা”য় করোনা, চিন্তার ভাজ
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৭ই মার্চ ২০২০ : করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।গোটা বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যে ৭৫০০ হাজার ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০ যার মধ্যে মহারাষ্ট্রে ৩২, কেরলে ২২, দিল্লিতে ২০ কিন্তু কলকাতায় সংখ্যাটা কম হলেও উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। কলকাতায় মোট ১১জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহ করা হলেও ৫ জনের নেগেটিভ পাওয়া যাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার সতর্কতা হিসেবে ব্যবস্থা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। প্রথমে স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাতেও থেমে থাকেন নি তিনি, রাজ্যের সব থিয়েটার হল, সিনেমা হল, শপিং মল এবার বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছেন। এই নির্দেশের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব দিয়েছেন করোনা নিয়ে সচেতনতার জন্য প্রচার করার জন্য। এমনকি সিনেমা ও সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ রাখার অনুরোধ রাখার কথাও বলেছেন। রাজারহাটে করোনা ভাইরাসের থেকে রাজ্যবাসীর নিরাপত্তার জন্য করেন্টাইন কেন্দ্র নির্ধারিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস্টিকে।করোনা প্রভাবিত দেশ থেকে আগত ষাটোর্ধ এবং ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানিতে আক্রান্তদের করোনা লক্ষণ না থাকলেও ১৪ দিনের জন্য আলাদা করে রাখার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন। বন্ধ থাকবে ICDS সেন্টারগুলিও। ইতিমধ্যে রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রে “বাংলার গর্ব মমতা” কর্মসূচীতে প্রচুর প্রবীণ নাগরিকদের সাধানতার জন্য মুখের মাস্ক বিতরণ করেছেন।
এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস পুরো বিশ্বে প্রচণ্ড আতংকের সৃষ্টি করেছে।সমস্যা হচ্ছে, কেউ আক্রান্ত হলে তার দেহে এই ভাইরাসের চিহ্ন বা লক্ষণ খুঁজে পেতে অনেকদিন সময় লেগে যায়। সাধারণত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জ্বর বা কাশি নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তার ফুসফুসের ৫০% ফাইব্রোসিস (সূক্ষ্ম অংশুসমূহের বৃদ্ধি) তৈরি হয়ে যায়, যার মানে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাইওয়ানের বিশেষজ্ঞরা কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কি না, সেটা নিজে নিজেই পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যেটা কেউ প্রতিদিন সকালে উঠেই কয়েক সেকেন্ডে একবার পরীক্ষা করে নিশ্চিন্ত হতে পারেন।
পরীক্ষাটা হলো; পরিচ্ছন্ন পরিবেশে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে সেটাকে দশ সেকেন্ডের কিছুটা বেশি সময় ধরে আটকে রাখুন।যদি এই দম ধরে রাখার সময়ে আপনার কোনো কাশি না আসে, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব না হয়, মানে কোনো প্রকার অস্বস্তি না লাগে, তার মানে আপনার ফুসফুসে কোনো ফাইব্রোসিস তৈরি হয়নি অর্থাৎ কোনো ইনফেকশন হয়নি, আপনি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত আছেন।জাপানের ডাক্তাররা আরেকটি অত্যন্ত ভালো উপদেশ দিয়েছেন যে, সবাই চেষ্টা করবেন যেন আপনার গলা ও মুখের ভেতরটা কখনো শুকনো না হয়ে যায়, ভেজা ভেজা থাকে। তাই প্রতি পনেরো মিনিট অন্তর এক চুমুক হলেও জল পান করুন। কারণ, কোনোভাবে ভাইরাসটি আপনার মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করলেও সেটি জলের সাথে পাকস্থলীতে চলে যাবে, আর পাকস্থলীর এসিড মুহূর্তেই সেই ভাইরাসকে মেরে ফেলবে।