“স্বচ্ছ ভারত” সমাজের কালো মুখগুলোকে সামনে তুলে আনবে
নিজস্ব প্রতিনিধি, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৬শে জানুয়ারি ২০২০ : অবনী সেন একজন মধ্যবয়সী বাঙালি আয়কর দপ্তরে কাজ করেন। অবনী তাঁর দপ্তরে অতিরিক্ত পরিমানে ঘুষ খেত। অবনীর পরিবার বলতে তাঁর স্ত্রী ছন্দা ও একমাত্র কন্যা মামন। অফিসে প্রিয় বন্ধু বলতে শুধুমাত্র বিনয় তাঁর উপর হিংসা করতে শুরু করে কারণ গোটা দপ্তর এমনকি দপ্তরের প্রধান মিঃ ব্যানার্জি অবনীর উপর বেশি ভরসা করে।
এদিকে বিলাসী অবনীর জীবন ছিল আনন্দের।কিন্তু সেই আনন্দের দিন আরও একধাপ বেড়ে যায়, মেয়ে মামনের কাছে রাতারাতি হিরো হয়ে যায়।একদিন মেয়ের সামনে অবনী ঘুষ নিতে অস্বীকার করে।কিন্তু সেটা বাস্তবে একটা বৈদ্যুতিন চ্যানেলে স্টিং অপারেশন করেছিল। এই সংবাদমাধ্যম এই ঘটনা প্রকাশ করে। রাতারাতি অবনীর জনপ্রিয়তা প্রচন্ড বেড়ে যায়। পাড়ার প্রতিবেশী থেকে বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাঁর প্রশংসায় মূখর হয়ে ওঠে। এই ঘটনা অবনীকে ছুঁয়ে যায়। ধীরে ধীরে অবনী নিজেকে বদলে ফেলল এবং ঘুষ নিতে অস্বীকার করে। কিন্তু দপ্তরে অবনীর এই পরিবর্তনটা মেনে নিতে পারে নি। তাঁরা সকলে মিলে অবনীর সাথে অসহযোগিতা করতে শুরু করে। এমনকি অবনীর বস পর্যন্ত তাকে হুশিয়ারি দেয়। বাড়িতেও ছন্দা মেনে নিতে পারে নি, কথায় কথায় অশান্তি শুরু হতে থাকে, একদিন ছন্দা তাঁর মেয়ে মামনকে নিয়ে অবনীকে ছেড়ে চলে যায়।
এতকিছুর পরও অবনী নিজেকে বদলায় না। অবনী সিদ্ধান্ত নেয় সে চাকরি থেকে অবসর নেবে। এবার অবনী সিদ্ধান্ত নেয় মিডিয়ার সামনে এই ঘুষের বিরুদ্ধে সব তথ্য প্রকাশ্যে আনবে। কিন্তু অবনীর সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় কারণ মিডিয়ার কর্ণধার ভিকি নিজেই ঘুষ নিতেন।এবার ভিকি অবনীর বিরুদ্ধে গল্প ফাঁদতে শুরু করেন যাতে তাকে হেনস্থা ও বদনাম করা যায়। প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে সেই সাংবাদিক অরাত্রিকা যে অবনীর সংবাদ করেছিল তাকে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর তাঁর সেই বন্ধু বিনয়কে কাজে লাগায়। বিনয় ভিকির কথায় একদিন অবনীকে নিয়ে একটা বারে যায়। সেখানে মদ্যপান করতে করতে বিনয় সেই পুরানো দিনের কথা তুলে ধরে কিভাবে সে অফিসে ঘুষ নিত। তাদের দুজনের কথোপকথন ভিকির কর্মচারীরা বিনয়কে আড়াল রেখে ক্যামেরাবন্দী করে।এরপর সেই ভিডিও চ্যানেলে সম্প্রচার করে সকলের চোখে অবনীকে ভিলেন করে দেয়।
এরকম অবস্থায় অবনী ভেঙে পড়ে, অবসাদে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেই বন্ধু বিনয় তাঁর পাশে দাঁড়ায় কারণ ঘটনার পর বিনয় নিজেকে ভীষণভাবে অপরাধী মনে করতে শুরু করে। সে অরাত্রিকাকে সাথে নিয়ে এই সমাজের ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে মুখ খুলবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। বিনয় ফিরে আসে অবনীর কাছে, তার সাথে পুরানো বন্ধু হয়ে ওঠে এবং সমাজের এই কালো মুখগুলো খুলে দেয় সকলের কাছে।
এতক্ষন যা পড়লেন তা বাংলা ছবি “স্বচ্ছ ভারত”-এর প্রেক্ষাপট যার নির্দেশনা দিয়েছে জিৎ চক্রবর্তী এবং ছবির সুরকার জয় সরকার।এল আর পি এন্টারটেনমেন্ট ও মিঠু দাস প্রযোজিত “স্বচ্ছ ভারত” ছবিতে অভিনয় করেছেন স্বাস্বত চ্যাটার্জি, শ্রীলেখা মিত্র, দর্শনা বনিক, বিশ্বনাথ বসু, খরাজ মুখার্জি সহ অনেকে। আইডিয়া এন্ড এড মিডিয়া।