কোলাহলের প্রচেষ্টায় ম্যাকবেথের অনুবাদে “মুখোশতন্ত্র” মঞ্চস্থ হল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৫ই মার্চ ২০২১ : “মুখোশতন্ত্র” – বিখ্যাত ইংরেজী নাট্যকার William Shakespeare এর বহুচর্চিত নাটক ম্যাকবেথকে প্যাসটিশ ফর্মে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা – এটাই আমাদের কোলাহল থিয়েটার ওয়ার্কশপের চতুর্থ এবং সাম্প্রতিকতম প্রচেষ্টা। প্যাসটিশ অর্থাৎ অন্য গ্রন্থকারের অনুকরণে রচিত সাহিত্য । আমাদের এই “একটু অন্য ধরণের” প্রয়াসটিকে দর্শকদের সামনে প্রথমবার মঞ্চস্থ করার সুযোগ যিনি করে দিয়েছেন তিনি শ্রীমতি সর্বাণী চক্রবর্তী – আসানসোলের অনুভব আবৃত্তি সংস্থার প্রেসিডেন্ট। তাঁর ডাকে, ৪ঠা এপ্রিল আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে প্রথমবার মঞ্চস্থ হতে চলেছে “মুখোশতন্ত্র “। এই নাটকটির হাত ধরেই, প্রখ্যাত অভিনেতা এবং সমাজসেবী নাইজেল আকারা মঞ্চে প্রত্যাবর্তণ করছেন দীর্ঘ সাত বছর পরে। ম্যাকবেথের ছায়া অবলম্বনে রচিত এই নাটকটিকে নির্দেশক শ্রী প্রাজ্ঞ দত্ত বিভিন্ন উপাদানে সাজিয়ে তুলেছেন – এই কালোত্তীর্ণ নাটকটিতে যুদ্ধের দৃশ্য যেমন আছে, ঠিক তেমনি আছে বিভিন্ন প্রদেশের লোকনৃত্য ; আছে মার্শাল আর্টের ধারালো প্রয়োগ এবং তার পাশাপাশি ক্ষুরধার সংলাপ।
একদিকে যেমন বাংলা লোকনৃত্যের যুদ্ধের নাচ ছৌ আর রায়বেশে ব্যবহৃত হয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই এসেছে দক্ষিণ ভারতীয় যুদ্ধের নাচ কালারী এবং সিলামবামের ব্যবহার। আবার তার পাশাপাশিই আছে ফিলিপিনো আর্ট ” কালি” এবং মাওরি আর্ট ” হাকার ” ব্যবহার। এই নাটকের আলোকসজ্জার দায়িত্বে আছেন শ্রী কল্যাণ ঘোষ, পোশাক দিয়ে আমাদের সাজিয়েছে “সাজসজ্জা ” এবং শব্দ প্রক্ষেপণের দায়িত্বে আছেন শ্রী বন্দন মিশ্র। এই নাটকের বেশিরভাগ চরিত্রেই অভিনয় করেছেন কোলাহলের কলাকুশলীরা এবং নাটকের মুখ্যচরিত্রে, অর্থাৎ ম্যাকবেথের চরিত্রে আছেন শ্রী নাইজেল আকারা। লেডি ম্যাকবেথের চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী অস্মিতা মুখার্জি, কবি এবং অভিনেতা দেবাশিস সরকার অভিনয় করেছেন ডানকানের চরিত্রে এবং ম্যালকমের ভূমিকায় আছেন স্বয়ং নির্দেশক প্রাজ্ঞ দত্ত। যদিও নাটকের মুখ্যচরিত্ররা অপরিবর্তিতই আছে, কিন্তু তারা সকলে এই নাটকে একটা কাল্পনিক ঘেরাটোপে আবদ্ধ, যেখানে সকলের মুখই মুখোশে ঢাকা- যেখানে ভালোর মধ্যে লুকিয়ে আছে খারাপ আর খারাপের মধ্যে লুকিয়ে আছে ভাল। নাট্যকার Shakespeare এর ভাষায় – ” জীবনটা অনেক শব্দ আর অভিযোগের মিশেলে একটা গল্প মাত্র, যে গল্পের গল্পকার একজন নির্বোধ মানুষ এবং এই গল্পের সবটুকুই অর্থহীন। “আমাদের এই নাটক যতোটা প্রকৃত ঘটনা অবলম্বনে, ততোটাই এতে আছে কল্পনার মিশেল। নাট্যকারের সময়কার সহজ সরল মনস্তত্ত্বের সাথে এই প্যাসটিশে আমাদের নির্দেশক মিশিয়ে দিয়েছেন আজকের সমাজের অবক্ষয়ের ছবি ।