ধর্মতলা প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্য
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা নিউজ, কলকাতা, ২৮শে নভেম্বর ২০২৩ : আমার সঙ্গে বলুন ভারত মাতা কি জয়। ২০২৪ এ মোদিজিকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে কি না? ২০২৬ এ বাংলায় বিজেপি সরকার করতে হবে কি না? আমার সঙ্গে দুই হাত তুলুন এবং জোরের সঙ্গে বলুন ভারত মাতা কি জয়। মঞ্চে উপস্থিত ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি ড. সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারী, প্রভারি শ্রী মঙ্গল পাণ্ডে, শ্রী অমিত মালব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গণ, সাংসদ, বিধায়ক, পদাধিকারীগণ এবং আগত সকল কার্যকর্তা, মা, বোন, যুব সবাইকে নমস্কার। এই বাংলার পবিত্র ভূমিকে নমস্কার।
বন্ধুগন এই সেই ঐতিহাসিক ময়দান। এই ময়দানেই সুরাবর্দি ডাইরেক্ট অ্যাকশনের ডাক দিয়েছিলেন আর গোপাল মুখার্জি তা প্রতিহত করেছিলেন। ভারতীয় জনতা পার্টির জন্যও এই ময়দান খুব ভাগ্যশালী। আমি ২০১৪ এ এখানে এসেছিলাম। বাংলার মানুষকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম তৃণমূলকে হটানোর। আমি বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ দেব ১৮ জন সাংসদ এবং ৭৭ জন বিধায়ক দেওয়ার জন্য। বাংলার মানুষ ২ কোটি ৩০ লক্ষ ভোট দিয়েছেন।
বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারীকে দিদি দ্বিতীয়বার বিধানসভা থেকে বরখাস্ত করেছেন। কান খুলে শুনুন, আপনি শুভেন্দুবাবুকে বরখাস্ত তো করতে পারেন কিন্তু বাংলার মানুষের মন থেকে বিজেপিকে সরাতে পারবেন না। তৃণমূল বদলার ডাক দিয়েছিল। কিছু বদল হয়েছে কি? দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে? মোদি লক্ষ কোটি টাকা দেন বাংলায়। কিন্তু সেগুলো মানুষ অব্দি পৌঁছায় না।
তৃণমূল কংগ্রেস বাকি দলগুলি মিলে বাংলাকে শেষ করছে। দুর্নীতি, অনুপ্রবেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রুখতে পারেননি। অনুপ্রবেশের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদ চলতে দিতেন না। সেই মমতা বন্দোপাধ্যায় এখন খোলাখুলি অনুপ্রবেশকারীদের আধার কার্ড দিচ্ছেন। যে বাংলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা যেত এখন সেখানে বোমা বন্দুকের আওয়াজ শোনা যায়।
সব জায়গায় দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দারিদ্র্য কমেনি। যে বাংলা সাহিত্য, বিজ্ঞান, কলা, স্বাধীনতা, উদ্যোগের ক্ষেত্রে এক নম্বরে ছিল সেই বাংলাকে দিদি পিছিয়ে দিয়েছেন। আজ আমি বাংলার মানুষকে বলতে এসেছি আপনারা একবার পুরো দেশের বিকাশ দেখুন। মোদি কোটি কোটি মানুষের জীবন পরিবর্তন করেছেন। শৌচালয়, রেশন, বাড়ি, ৫ লাখের বিম, কোভিড টিকা দিয়েছেন। পুরো দেশে আতঙ্কবাদ বন্ধ হয়েছে। যে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ধারা ৩৭৭ এর জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন আজ মোদিজি সেটা রদ করেছেন। ভারতকে চন্দ্রযানের মাধ্যমে চাঁদে পৌঁছে দিয়েছেন। নতুন সংসদ ভবন পেয়েছি আমরা।
আপনারা বলুন রাম মন্দির হওয়া দরকার কি না? কংগ্রেস পার্টির এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাম মন্দির বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। মোদি ভূমি পূজা করেন এবং ২২ জানুয়ারি এই মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে। সবাই বলুন জয় শ্রী রাম।
মোদিজি সব ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে দিয়েছেন। আর এখানে কি হল? আমাদের ২১২ জন কার্যকর্তা খুন হয়েছেন। আমাদের কার্যকর্তারা আমাদের ভাই। পুরো দেশ এবং বাংলার এক একটি কার্যকর্তা এটার বদলা নেওয়ার জন্য তৈরি।
যদি আপনার সাহস হয় জ্যোতিপ্রিয়, অনুব্রত, পার্থকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করুন। আপনি পারবেন না। যে নিজে দুর্নীতিগ্রস্ত তারা এই রাজ্যকে দুর্নীতি মুক্ত করতে পারবে না। তৃণমূল সাংসদ সংসদকেও অপবিত্র করেছে।
আসামে বিজেপি সরকার হয়েছে। সেখানে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়েছে। আর এখানে ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ৩০ লক্ষ ভুয়ো অনুপ্রবেশ ঘটে সেখানে বিকাশ সম্ভব?
আমি এই সভা থেকে বলে যাচ্ছি CAA হল একটি আইন, একে কেউ রুখতে পারবে না। সকল হিন্দু ভাই বোনের দেশের উপর অধিকার রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন উনি বলেন, “মোদি কি দিয়েছে”। কান খুলে শুনুন, আপনার জন্য হিসেব এনেছি। ইউপিএ সরকার ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সালে ২ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। মনরেগায় তিনগুণ বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে। হাইওয়ের জন্য মোট ৭০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি ৮ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে।
আপনি সন্ত্রাস করে জিতেছেন। তাও আমরা ৭৭ টি আসন পেয়েছি। আমরা ২০২৬ এ দুই তৃতীয়াংশ ভোট নিয়ে জিতব। ২০২৪ এ মানুষকে অনুরোধ করব এত সিট দিন যাতে মোদী বলেন আমি প্রধানমন্ত্রী হয়েছি বাংলার জন্য। কমিউনিস্ট, তৃণমূল বাংলার ভালো করতে পারে না। বাংলার ভালো, সোনার বাংলা তৈরির কাজ কেবল বিজেপির করবে।
ভ্রষ্টচারী মমতা সরকারকে হাটাবেন? মমতাকে হারাবেন? অনুপ্রবেশ রুখতে হবে ? CAA আনতে হবে? সীমা সুরক্ষিত করতে হবে। বাংলার গরীবের বিকাশ করতে হবে। যদি সব করতে হয় তবে মমতার সরকারকে উপড়ে ফেলে বিজেপি সরকার বানাতে হবে। মোদিজির অন্যতম লক্ষ্য বাংলার বিকাশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার বিকাশ করতে দেবে না। মোদীজির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার করুন। নমস্কার। ভারত মাতা কি জয়