গড়িয়া স্টেশনে মোটের উপর ৭৫ শতাংশ ভোট হলেও ৫ নং ওয়ার্ডে বিশৃঙ্খলায় ভোটাররা বিরক্ত, অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা নিউজ, কলকাতা, ১লা জুন ২০২৪ : যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার গড়িয়া এলাকায় যে ছয়টা ওয়ার্ড আছে তাতে সর্বত্রই ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে হয়েছে। সেভাবে কোথাও তেমন কোন বড় অশান্তির খবর নেই। তবে ২নং ওয়ার্ডে পাঁচটা বুথে ইভিএম মেশিনের সমস্যা হয়েছে এবং ৫নং ওয়ার্ডে বিশ্ববানী স্কুলের বুথে ইভিএম মেশিন খারাপ হওয়ায় ভোট গ্রহণ পর্ব একটু থমকে যায় বলে খবর।
অন্যদিকে ১নং, ৩নং ও ৪নং ওয়ার্ডের মোটের উপর ভোট পর্ব ভালই হয়েছে শুধু ৪নং ওয়ার্ডে ২৩০, ২৩১, ২৩২, ২৩৩ ও ২৩৫ নং বুথে প্রচুর ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে, কারণ অজানা। যদিও শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টায় এই বুথগুলোতে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে নবগ্রামের সব বুথ থেকে ইভিএম মেশিন বাসে করে স্ট্রং রুমের দিকে রওনা দিলে হিমাংশু দে ও শিবু করের নেতৃত্বে একাধিক তৃনমূল কর্মী বাইকে পাহাড়া দিয়ে স্ট্রং রুম পর্যন্ত যায়।
৩ নং ওয়ার্ডে মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত ভোট প্রদান করে। শেষ পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ৩ নং ওয়ার্ডে ৭৯ শতাংশ ভোট প্রদান হয়েছে যার মধ্যে কাঠিপোতার ৪টে বুথে মোট ৮০ শতাংশ। ২ নং ওয়ার্ডে শেষ পর্যন্ত ৮০ শতাংশ ভোটদান হয়। ১ নং ওয়ার্ডেও প্রায় ৭৮ শতাংশ ভোট দান হয়েছে বলে জানা যায়। তবে বহু ভোটার ভোটার স্লিপ পায় নি বলে অভিযোগ করে। ৪ নং ওয়ার্ডে বেশ কিছু জায়গায় দলীয় সহায়তা কেন্দ্র চোখে পড়ে নি যার মধ্যে ছিল নাট্যমহল এলাকায়।
৫নং ওয়ার্ডে নবগ্রামের সব বুথে মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে ভোট প্রদানে অংশগ্রহন করে। কিন্তু বিশ্ববানী স্কুলে ইভিএম মেসিন বিভ্রাট হওয়াতে ভোট গ্রহণ পর্ব ব্যাঘাত ঘটে। বিকেল ৫টার খবর যেভাবে পুরুষ ও মহিলা লাইনে দাঁড়িয়ে তাতে রাত ৯টা পর্যন্ত শেষ হবে কিনা ঠিক নেই। তবে যা বোঝা গেল যারা এখনও লাইনে দাঁড়িয়ে তারা ভোট না দিয়ে কেউ বাড়ি যাবে না এটা নিশ্চিত। এখান থেকে পরিষ্কার এই ভোটাররা কোথায় ভোট দেবে। লাইনে থাকা প্রচুর মহিলা বিরক্ত প্রকাশ করছে, তাদের বক্তব্য ইচ্ছাকৃত এই বিশৃংখলা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বিজেপি অভিযোগ করছে ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা আতঙ্কে মানুষকে ভোট না দিতে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের প্ল্যান সফল হয় নি। লাইনে থাকা এই ভোটাররা পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারে নি তারা এবার সুযোগ পেয়েছে ভোট দেওয়ার তাই তারাও ছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভোট দিয়েই বাড়ি যাবে। তৃণমূল ভেবেছিল ভোটের লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে বিরক্ত হয়ে বাড়ি চলে যাবে, সেটা হয় নি। এছাড়া যেভাবে এই ওয়ার্ডে নরেন্দ্রপুর স্টেশনের পাশে সাট্টা বাজার বসে গেছে তা মানুষ ভালভাবে নেয় নি। এই মারক নেশা খেটে খাওয়া মানুষ ও তরুণ প্রজন্মকে শেষ করে দিচ্ছে। এব্যাপারে পুলিশের কোন ভুমিকা নেই। পরবর্তীতে ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রচুর পরিমাণে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী পরিস্থিতি সামাল দিতে কিন্তু পৌরমাতা ঘটনাস্থল থেকে অনেকটা দূরে দাঁড়িয়ে নজর রাখছিল। শেষ পর্যন্ত খবর ৫ নং ওয়ার্ডে নবগ্রামের বুথে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং রাত ৮.৩০ মিনিটে বিশ্ববানী স্কুলের ভোট গ্রহণ পর্ব শেষ হয়, সেখানেও প্রায় ৭৮ শতাংশ ভোট পড়ে।
তবে এটা অস্বীকারের কোন জায়গা নেই যে ঘটনা ঘটেছে তা সবটাই আতঙ্ক থেকে হয়েছে কারণ এবার এই ওয়ার্ডে একটা বিরোধী চোরা স্রোত ছিল। নেতৃত্ব সহ অনেকের কাছে খবর ছিল ৫নং ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে থাকবে কারণ একমাত্র এই ওয়ার্ডেই একটা বিজেপি-র পার্টি অফিস আছে, তার একটা প্রভাব পড়বে এই নির্বাচনে।