বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে শুরু হচ্ছে “দুয়ারে সরকার”
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১লা ডিসেম্বর ২০২০ : আগামী ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে এবার রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে শুরু করছে “দুয়ারে দুয়ারে সরকার”। এই পদ্ধতির মাধ্যমে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও পৌরসভার সব নাগরিকদের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আনার একটা প্রয়াস করছে সরকার বিশেষ করে মহিলাদের। এই দুয়ারে দুয়ারে সরকার পদ্ধতিতে বিভিন্ন ব্লকে ক্যাম্পের মাধ্যমে মানুষকে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে যা নিয়ে রাজ্যে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন যা নীচে দেওয়া হল।
১.- স্বাস্থ্য সাথী – নগদ বিহীন এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর এবং পৌর ওয়ার্ড স্তরে আয়োজিত ক্যাম্পে আসতে হবে।
প্রথম রাউন্ডে কেউ এসওপি নিয়ে এলে দ্বিতীয় রাউন্ডেই কার্ড পেয়ে যাবেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে এসওপি দিলে তৃতীয় রাউন্ডে কার্ড পাবেন।
২.- জাতিগত শংসাপত্র – দ্বিতীয় প্রকল্পটি তফসিলি জাতি/উপজাতি/ এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য জাতিগত শংসাপত্র প্রদান করা হবে।
৩ ও ৪.- জয় জোহর এবং তফসিলি বন্ধু প্রকল্প- এই দুই প্রকল্পের মাধ্যমে আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর এবং অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দফতরের উদ্যোগে ৬০ বছরের উর্ধ্বে আদিবাসী, এবং দলিত সম্প্রদায়ের কোনও বরিষ্ঠ নাগরিক (যিনি আর কোনও সরকারি আর্থিক সুবিধা পান না, তাঁকে) মাসিক ১০০০ টাকা অর্থ সাহায্য পাবেন।
৫- খাদ্য সাথী – খাদ্য সাথী সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার জন্য এই ক্যাম্পে আবেদন করতে হবে। নাম ঠিকানা সংশোধন করা হবে। সিদা কুপন থেকে কার্ডে রূপান্তরিত করার জন্য ভিন্ন উপায়ে আবেদন করতে হবে।
৬- শিক্ষাশ্রী – অনগ্রসর শ্রেণী, তফসিলি জাতি এবং আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের বছরে ৮০০ টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন। ঐক্যশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা বৃত্তি পান।
. এই ক্যাম্প গুলির মাধ্যমে আমরা আরও দক্ষতার সাথে আমাদের প্রতিশ্রুতি পালন করব।
. এই প্রকল্পের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত কন্যাশ্রী প্রকল্পও আছে। রাজ্যের অধিকাংশ ছাত্রীই এই প্রকল্পের আওতাধীন কিন্তু কোনও ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে এই ক্যাম্পে যোগাযোগ করতে পারেন। রাজ্য জুড়ে ২০,০০০ ক্যাম্প করা হবে।
. রূপশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে একটি সুনির্দিষ্ট বয়সের পর বিবাহের জন্য কন্যাকে আর্থিক সাহায্য করা হয়। এই রূপশ্রী প্রকল্প সংক্রান্ত কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে ক্যাম্পে আসতে হবে।
. কৃষক বন্ধু প্রকল্প সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা, যেযমন পরচা, নথিভুক্ত করণ ইত্যাদি যে কোনও সমস্যায় ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা সাহায্য করবেন।
. ১০০ দিনের কাজ এবং জব কার্ড সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা হলে সাহায্য করা হবে।
এই কর্মসূচিটিকে জেলা এবং ব্লক স্তরে সাফল্যমন্ডিত করতে একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গড়ে তোলা হবে। বরিষ্ঠ আইএএস আধিকারিকরা নোডাল অফিসার হিসেবে কাজ করবেন এবং বিডিওদের ক্যাম্প পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক, জেলা পুলিশের আধিকারিক, মহকুমাশাসক এবং বিডিওদের সাথে একাধিক আলোচনা সভা সংঘটিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। লোকপ্রসার এবং লোক শিল্পীদের প্রচারের কাজে নিযুক্ত করা হবে।
- ক্যাম্পে উপস্থিতির হার গণনা করা হবে। এর পাশাপাশি আমরা সমস্যার কতটা সমাধান হয়েছে সেই ব্যাপারেও নজর রাখব। এই কর্মসূচির মুখ্য উদ্দেশ্য হল সরকারি পরিষেবাকে মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া।
একটি মাত্র সামগ্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দফতরের সরকারি সুবিধা এবং সমস্যার সমাধান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব।