কলকাতা পৌরনিগমের ৬৮ নং ওয়ার্ডের সাফাই কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে গড়িয়ার বাড়িতে, উপস্থিত ৫ নং ওয়ার্ডের পৌরপিতা তরুণ সহ পাপাই ও মিন্টু কুন্ডু
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১৯শে মে ২০২০ : হঠাৎই আমার হোয়াটসঅ্যাপে নরেন্দ্রপুর থানার আই সি সুখময় চক্রবর্তীর ম্যেসেজের ঝলক দেখে চমকে উঠলাম। তাতে লেখা আছে রামপ্রসাদ দাস (৫০) গড়িয়া নবগ্রাম করোনায় আক্রান্ত।তখন সময় ১১.৩০ মিনিট, সামনেই উপস্থিত ছিলেন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার পৌরপিতা তরুণ কান্তি মন্ডল। খবরটা তাঁকে দিতেই তিনি সাথেসাথেই রওনা দেন ঘটনাস্থলে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌরপিতা নিশ্চিত করেন বিষয়ের সত্যতা। এরপর এই রামপ্রসাদ দাসকে নিয়ে চলে এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক। সবটাই তৎপরতার সাথে সামাল দেন তরুণ কান্তি মন্ডল।আমি নরেন্দ্রপুর থানার আই সি-কেও সেইমত ঘটনার বিবরণ দিই। জানা যায় রামপ্রসাদ দাস কলকাতা পৌরনিগমের ৬৮ নং ওয়ার্দের সাফাই কর্মী, গড়িয়ায় এক ভাড়া বাড়িতে থাকেন। এই বাড়িতে আরও ৩৩জন বাস করেন।
কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স এসে উপস্থিত হয় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের নবগ্রামের মিডিল ব্লকের রামপ্রসাদ দাসের বাড়ির সামনে। গোটা বাড়ি ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। রামপ্রসাদ দাসকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পৌরপিতা তরুণ কান্তি মন্ডল, সোনারপুর উত্তর বিধানসভার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পাপাই দত্ত, ৫ নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সম্পাদক মিন্টু কুন্ডু সহ এলাকার বহু আতঙ্কিত মানুষ। এই ওয়ার্ডে এতদিন ধরে করোনা নিয়ে বেশ সন্তোষজনক অবস্থায় ছিল কারণ এই ওয়ার্ডকে এতদিন স্পর্ষকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি। গতকাল থেকে এই ওয়ার্ডকে স্পর্ষকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গতকাল একজন মহিলা সোনালি দাস এই ওয়ার্ডে তাঁর জামাই-এর ফ্ল্যাটে (নরেন্দ্রপুরে স্টেশন সংলগ্ন সুখার ফ্ল্যাট) এসে পা ভেঙে ফেলেন লকডাউনের প্রথমদিকে। কিন্তু এই বাড়ি থেকে এই বৃদ্ধাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক নার্সিংহোমে। এরপর তাঁকে তাঁর নিজের পাটুলির (১১১ নং ওয়ার্ড) বাড়িতে রেখে আসা হয়।তিনদিন আগে তাঁকে ভর্তি করা হয় মেডিকা হাসপাতালে, সেখানে পরীক্ষায় ধরা পড়ে করোনা পজেটিভ। এরপর তাঁর মেয়ে ও জামাইকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ আবার রামপ্রসাদ দাস আক্রান্ত হলেন। এবার এই বাড়ির ৩৩জন সদস্যদের পরীক্ষা করার ব্যবস্থা হবে বলে আশা করা যায়।
এই দুটো ঘটনার সাথে জোরালো ভাবে স্পর্ষকাতর এলাকা হিসাবে চিহ্নিত হল রাজপুর সোনারপুরের ৫ নং ওয়ার্ড। আগামীকাল এলাকা জীবাণুমুক্তের কাজ হবে বলে জানান পৌরপিতা তরুণ কান্তি। তিনি এও জানান, আগামীকাল থেকে এলাকার সব বাজার ও দোকান বন্ধ থাকবে, থাকবে পুলিশের কড়া নজরদারী। বিশেষ করে নবগ্রাম ও নবশ্রী বাজার বন্ধ থাকবে। এই দুটো ঘটনায় এলাকার মানুষ বড় ধরনের আতঙ্কের মধ্যে পড়ে গেল। তবে পৌরপিতা বলেন, মানুষের পাশে থেকে মানুষের আতঙ্ককে দূর করতে হবে।সকলে মিলে যে কোন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।আজ গোটা বাংলায় একটা চরম দুর্যোগের মুহুর্তে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে মোকাবিলা করার জন্য। আমরা অবশ্যই এর থেকে মুক্ত হব।বস্তুত এটাই এই ওয়ার্ডের করোনা আক্রান্তের প্রথম রোগী। তবে এবার থেকে সকলকে সাবধানে থাকতে হবে। Follow us at : www.facebook.com/abptakmaa.newspaper/
www.twitter.com/abptakmaa