রাজপুর সোনারপুরের ৬ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতার নেতৃত্বে বন্ধ হল জীবন নাশক নেশা “লোটো, ২ জন গ্রেপ্তার
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ৮ই জুন ২০২২ : গড়িয়া স্টেশন এলাকায় একদিকে যেমন সাট্টার রমরমা তার পাশাপাশি আবার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লোটো। একসময় গড়িয়ার নবগ্রামে প্রচুর লোটো-র কাউন্টার হয়েছিল যা আজ অনেককে সর্বশান্ত করে বন্ধ হয়েছে। সেই মরণ ফাঁদ এবার শুরু হয়েছে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে কয়লাপট্টিতে। দীর্ঘদিন এই ব্যবসা চলছে সকলের চোখের আড়ালে। স্থানীয় রাজেন দাস ও তার পুত্র পিন্টু দাস পার্কসার্কাসের এক ব্যবসায়ীকে তার দোকান ভাড়া দেয় কিন্তু তিনি নাকি জানেন না যে সেখানে কিসের ব্যবসা হয়, এটাও মানতে হবে।
আজ সন্ধ্যায় রাজপুর পৌরসভার বর্তমান বোর্ডের উদ্যোগে আগামী ১লা আগস্ট থেকে প্লাস্টিক পলি ব্যাগ পুরোপুরি বর্জনের জন্য সচেতনতা বাড়াতে সভা করে এবং প্রতিটা ব্যবসায়ীদের লিখিত আর্জি জানিয়ে আবেদন জানাতে বেড়িয়েছিলেন পৌরমাতা দিপালী নস্কর। তিনি একদিকে যেমন একজন অধ্যাপিকা অন্য দিকে একজন পৌরমাতা, তাই তার দায়িত্বটা অনেকটাই বর্তায়। এছাড়া ৪৫ নং বাসস্ট্যান্ড থেকে কয়লাপট্টি এলাকায় কোন ব্যবসায়ী আর ফুটপাথে বসে বা দখল করে ব্যবসা করতে পারবে না তারও নজরদারি চালাচ্ছিলেন। এমনসময় তার চোখে পড়ে এই বিশেষ দোকানে প্রচুর ভিড়। আর এই ভিড়ের সূত্র খুঁজতে গিয়ে নজরে আসে লোটো মানে এক কথায় উন্নতমানের সাট্টা ব্যবসা। তখনই দোকানের প্রকৃত মালিকের খোঁজ করতে উঠে আসে রাজেন ও তার পুত্র পিন্টু-র নাম। এবার জিজ্ঞাসাবাদের পর দোকানের কর্মরত কর্মচারীকে এই ব্যবসা নিয়ে প্রশ্ন করতে তিনি জানান পুলিশের অনুমতি নিয়েই চলছে এই ব্যবসা। এটা শুনে উপস্থিত সকলের চোখ মাথায়। সাথে সাথে দিপালী ফোন করেন নরেন্দ্রপুর থানায়। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ হাজির। জানা যায় কর্মচরী মাত্র ৩০০ টাকা রোজে কাজ করে, মালিক পার্কসার্কাসের বাসিন্দা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দোকানের মালিক রাজেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ, সুস্থ অবস্থায় না থাকার ফলে সঠিক উত্তর পাওয়া সম্ভব হয় নি। কর্মচারী ও রাজেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে সাথে লোটোতে ব্যবহৃত কম্পিউটার, মনিটর আটক করে নিয়ে যায়।
এদিকে তার বিপরীত পারে সান্ধ্যবাজার এলাকায় কাকভোর থেকে শুরু হয়ে যায় সাট্টার প্যাড। বহু অভিযান হয়েছে। সাময়িক বন্ধ হয়েছে কিন্তু স্থানীয় কিছু তোলা আদায়কারীর মদতে রমরমিয়ে চলছে এই ব্যবসা। আগে যদিও লুকিয়ে চুরিয়ে চলতো কিন্তু এখন প্রকাশ্যে প্রায় মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে সেই পরিস্থিতি। সান্ধ্য বাজারের সামনে থাকা গড়িয়া স্টেশন- নরেন্দ্রপুর অটো স্ট্যান্ড থেকে বাজারের মুখ পর্যন্ত চলছে সাট্টারাজ। কিছু বলতে গেলে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বলে তাদের নাকি স্থানীয় সব থানায় মাসহারা করা আছে। কেউ অভিযোগ জানালে পুলিশ আসার আগে তাদের কাছে খবর করে দেয় থানা থেকে যাতে তারা সেখান থেকে সরে যায়। এটা কিছুটা সত্যি তার কারণ আমি নিজে থানার আই সি-কে ফোন করে জানিয়েছি এমনকি ঘটনাস্থল থেকে ছবি তুলে পাঠিয়েছি তেমন কোন সুরাহা হয় নি। চিত্রটা একই থেকে গেছে। পুলিশ এলেও কাউকে ঘটনাস্থলে দেখতে পায় নি।