প্রথম পাতা

পাপাই দত্ত বিপদ্গ্রস্থ কাশ্মীরিদের পাশে থেকে দেখিয়ে দিলেন বিপদে মানুষকে সাহায্য করতে হয়, অবহেলা বা বিতৃষ্ণা নয়

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ৬ই এপ্রিল ২০২০ : সারা দেশে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে লকডাউন পরিস্থিতি আর তার মধ্যে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৮১ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ১১১। এই সংখ্যার মধ্যে জম্মু কাশ্মীরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০৯ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ২। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে এই কাশ্মীর থেকে ব্যবসায়ীরা বাংলার বহু জেলায় আসে। ঠিক সেভাবে গড়িয়ায় বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি আসেন তাদের ব্যবসা করতে। এবারও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু করোনার থাবার ফলে সারা দেশে লকডাউন হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের আর ফিরে যাওয়া হয়নি।জম্মু শ্রীনগর নিবাসি ১১ জন শীত বস্ত্র ব‍্যাবসায়ি, সারা দেশ জুড়ে চলা লকডাউন এর জন‍্য তাদের নিজ রাজ‍্যে ফিরতে না পারার দরুন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার অন্তর্গত ৫নং ওয়ার্ডে আটকে পড়ে, এখানে ব‍্যাবসা সংক্রান্ত সমস্ত লেনদেন ও বন্ধ হয়ে যায়,তারা তাদের বকেয়া টাকাও তুলতে অক্ষম হয়ে পড়ে,তাদের জমানো অর্থ যতটুকু সঞ্চয় করে রাখাছিলো সেটাও শেষ পর্যায় এসে পৌছায়, বকেয়া বাড়িভাড়া মেটাতে না পাড়া, মুদিখানায় বকেয়া পড়ে যাওয়ার ফলে তারা অসহায় হয়ে পড়ে। এমত পরিস্হিতিতে তাদের মধ‍্যেই একজন মুন্না মনজুর রাজ‍্যের মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা ব‍্যানার্জীর সাথে টুইটার এ যোগাযোগ স্হাপন করে সমস্ত বিষয়টি বিস্তারিত জানায়, তৎখনাৎ মখ‍্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দঃ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে বিষয়টি গরুত্ব সহকারে দেখবার নির্দেশ পাঠানো হয়, জেলাশাসক-এর দপ্তর হইতে নির্দেশ আসে বারুইপুর মহকুমা শাসকের কাছে, তৎখনাৎ মহকুমা শাসক ফোনে যোগাযোগ করেন সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম ও রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার জল দপ্তরের সি.আই.সি নজরুল আলি মন্ডলের সাথে, এবং অনুরোধ করেন যেন বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। সাথে সাথে বিধায়ক নির্দেশ দেয় সোনারপুর উত্তরের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পাপাই দত্ত-কে যাতে অবিলম্বে সেই সমস্ত মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তাদের নিত‍্যপ্রয়জনীয় খাদ‍্যসামিগ্রী ব্যবস্থা সহ অন্য সব সমস্যা মেটাবার জন্য।সেইমত যুব তৃণমূলের কর্মীরা তাদের ১৫ দিনের খাদ‍্য সামিগ্রীর ব‍্যবস্হা করে দেয় এবং তাদের বাড়িভাড়া মুকুব সহ মুদিখনার বকেয়া মেটানোর ও দায়িত্ব কাধে তুলে নেয় বলে জানায় সোনারপুর উত্তর তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি পাপাই দত্ত।

প্রতিবছর তাঁরা নবগ্রামে বাড়ি ভাড়া করে থাকে, এবছর তাঁরা নবশ্রী বাজার এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিল। করোনার লকডাউনে তাঁরা আটকা পড়ে যায়। ভাবুন তাঁরা এইরকম একটা পরিস্থিতিতে নিজেদের পরিবারকে কাশ্মীরে রেখে বাংলায় আছে শুধুমাত্র পেটের দায়ে তাও আবার অর্থহীন অবস্থায়। কতটা অসহায় পরিস্থিতি ও দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে বাংলায় পড়ে আছেন।

পাপাই আমাদের জানায় সোনারপুরের সোনার মেয়ে ফিরদৌসী বেগম আমাদেরকে এই দায়িত্ব অর্পণ করে আমাদের মানুষের সেবার সুযোগ করে দিয়েছেন যার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এই মানুষগুলো এই রাজ্যে ব্যবসা করতে আসে আমাদের ভরসায়। এখানে এসে বিপদে পড়েছে খবর পেয়েই আমরা এগিয়ে গেছি।এখানে কোন ধর্ম, রঙ বা জাত দেখা কারও কাম্য নয়। এমন পরিস্থিতিতে বুঝতে হবে কাশ্মীরেও একই পরিস্থিতিতে আঁটকে আছে বহু বাঙালি।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কতটা মানবিক সেটাই ফের একবার প্রমাণিত হল।আমি মমতা ব্যানার্জির শিক্ষায় ও আদর্শে শিক্ষিত। তিনি কোনদিনও এমন শিক্ষা দেন নি মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রাজনীতি করতে। তাঁরা কাশ্মীরি মানে তাঁরা মুসলিম হতে পারে কিন্তু সবার আগে তাঁরা ভারতীয়, আমার ভাই।আমায় এই কাজে সহযোগিতা করেছে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অরিন্দম দত্ত ও অসংখ্য যুব তৃণমূল কর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *