বহুদিনের জ্বলন্ত সমস্যা গড়িয়ার পৌরসভা অফিসে পড়ল মদ, জুয়া, সাট্টার রমরমা ব্যবসার বিরুদ্ধে পোস্টার
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১৪ই জুন ২০২০ : মদ, জুয়া, সাট্টার ব্যবসা গড়িয়ে স্টেশন এলাকায় দীর্ঘদিনের ব্যবসা। একসময় গড়িয়া সান্ধ্য বাজারে ঢোকার মুখে চলতো রমরমা কালোবাজারি মদ ও সাট্টার ব্যবসা। মাঝে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের পৌরপিতা বিধাস মুখার্জির উদ্যোগে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল বাজারের এই ব্যবসা। যারা সেদিন এই ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিল তাঁরা আজ সেই একই জায়গায় বসে ফলের ব্যবসা এবং মাছ বিক্রি করছে। কিন্তু এই এলাকায় যদিও মদের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে তবে সাট্টার ব্যবসা একইভাবে চলছে বরং সেই সাট্টার পেন্সিলাররা এবার বাজারের মধ্যে আনাচে কানাচে বসে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছে। কখনও আবার অটো স্ট্যান্ডের পাশে ফাঁকা জায়গাতেও বসে চালাচ্ছে ব্যবসা অথবা ঝিলের পাড়ে বসে চালাচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ সবই জানে এটা মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে।কিন্তু একসময় গড়িয়া স্টেশন এলাকা সোনারপুর থানার অন্তর্গত থাকা অবস্থায় তৎকালীন আই সি অনিল রায় ও প্রসেঞ্জিত ব্যানার্জির আমলে সবটাই দমন করা গিয়েছিল। আজও তাদের নাম মানুষের মুখে মুখে উঠে আসে যে তাঁরা থাকাকালীন বন্ধ হয়েছিল।
এছাড়া তো গড়িয়া স্টেশন লাগোয়া ২ নং, ৩ নং ও ৪ নং ওয়ার্ডে আনাচে কানাচে বা খালের ধারে গজিয়ে উঠেছে কালোবাজারি মদের ব্যবসা, গাঁজা বিক্রির ব্যবসা আর জুয়া-সাট্টার ব্যবসা। এখনও মানুষের মুখে সেই একই কথা ঘুরছে প্রশাসন সবই জানে, এলাকার নেতারা সবই জানে। তাদের মদতেই তো চলছে এই সব ব্যবসা। আজ সকালে তারই একটা চিত্র দেখা গেল রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার গড়িয়া কার্যালয়ের দেওয়ালে। কে বা কারা প্রধান ফটকে যে ফলক লাগানো আছে তাতে এই মদ, জুয়া, সাট্টা ও গাঁজা বিক্রির বিরুদ্ধে একেবারে নাম ধরে অভিযোগ করে পোস্টার সাটিয়ে গেছে।
নরেন্দ্রপুর থানায় ফোন করে জানতে চাইলে থানার আই সি সুখময় চক্রবর্তী জানান, আমরা রোজ টহল দিচ্ছি এধরনের ব্যবসা বন্ধের জন্য। গতকাল আমরা আদর্শনগরের এক বাসিন্দা সহ ৪জনের দলকে গাঁজা সমেত গ্রাফতার করেছি, গতকাল রাতে গড়িয়া স্টেশন চত্ত্বরে সামনে সিগারেটের দোকান রেখে পিছনে মদ বিক্রি করে চলছিল এমন দুজন ব্যবসায়ীকে আটক করে কোর্টে চালান করেছি। পুলিশ সর্বদাই নজর রাখছে। তবে এমনটা চলতে দেওয়া যাবে না। গড়িয়া স্টেশনের বহু অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের বেপথে যাবার আতঙ্কে ভুগছেন। পোস্টারে সোজা দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
হাদু বাপ্পা সরদার ও মনোজ নস্করের নামে পোস্টার ফেলা হয়। কে এই হাদু বাপ্পা? এই হাদু বাপ্পাকে একসময় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব সভাপতি করা হয়েছিল। আর তাঁকে ঘিরে শুরু হয়েছিল ওই ওয়ার্ডে অনেকের মধ্যে বিতর্ক ও প্রশ্ন।ওয়ার্ডের নেতৃত্বদের থেকে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি বলেই তার ফল দেখা গিয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। মিমি চক্রবর্তী লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হলেও এই ওয়ার্ড থেকে বিজেপির কাছে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল। ওয়ার্ডে সেই সময় বলিউড নায়িকা ভাগ্যশ্রী ও আজকের মন্ত্রী সুজিত বসু এসেছিল ভাগ্য ফেরাতে কিন্তু ভাগ্য তো ফেরেই নি উলটে ভাগ্যের চাকাটা ঘুরেই দিয়েছে ওয়ার্ডের ভোটাররা। এবার ঠিক আবার পৌরসভা নির্বাচনের আগে জ্বলে উঠল সেই বিতর্ক। এলাকার মানুষের বক্তব্য স্থানীয় নেতা ও একশ্রেনী পুলিশের মদতে চলছে হাদু বাপ্পার রমরমা ব্যবসা। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারছে না কারণ হাদু বাপ্পা সেই স্থানীয় নেতাদের মদতে এলাকায় বোমা বাজি চালাচ্ছে। নিরীহ মানুষকে ধরে মারধোর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।কয়কদিন আগেও লকডাউন চলাকালীন হাদু বাপ্পার ব্যবসার বিরুদ্ধে ঢালুয়ার একদল প্রতিবাদ করায় রাতে ব্যাপক বোমাবাজি চলে।স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উপর মানুষ ধীরে ধীরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে তার সব থেকে বড় প্রমাণ আজকের এই পোস্টার।তাঁরা মনে করছে স্থানীয় নেতৃত্ব এব্যাপারে নিষ্ক্রিয় বলেই এদের এত বাড়বাড়ন্ত।বাসিন্দারা নিজেদের ও সন্তানদের সুরক্ষার জন্য আজ ভিক্ষাপ্রার্থী প্রশাসনের কাছে আর তাই তাঁরা এই পোস্টার দিয়েছে যাতে এই জ্বলন্ত সমস্যা বিধায়কের নজরে আসে।সকলে তাঁর হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে।