প্রথম পাতা

তৃনমূল জয়ী হতেই গড়িয়ায় বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের উপর রাতের অন্ধকারে হামলা চলছে, ঘর, দোকান ভাঙচুর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই কড়া ব্যবস্থা পুলিশ ও নেতৃত্বের

অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ৫ই মে ২০২১ : ২০২১ সালের ফল প্রকাশে তৃণমূলের জয়জয়কার হতেই গড়িয়া স্টেশন এলাকায় রাজপুর সোনারপুর ৩ নং ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের উপর নির্মম হামলা চলায় স্থানীয় কিছু কাগুজে তৃনমূল কর্মী। এই ওয়ার্ডের কিছু কর্মী দলকে বদনাম করতে ও নিজেদের স্বার্থ কায়েম করতে ময়দানে নেমে পড়েছে। এই কর্মীদের মধ্যে মূলত নাম উঠে এসেছে শ্যামল সরদার, তপন হালদার, উজ্জ্বল মন্ডল ও তার কয়েকজন অনুগামীদের নাম।

এলাকায় ঢুকে শ্যামল ও তার অনুগামীরা এলাকার আরেক কাগুজে তৃনমূল কর্মীর প্ররোচনায় রাতের অন্ধকারে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি ঢুকে এবং দোকান ভাঙচুর চালায়। এমনও খবর আছে এই বিজেপি কর্মীদের থেকে মোটা টাকা আদায়ের হুমকিও দেওয়া হয় বলে এলাকার মানুষ অভিযোগ করে। ওয়ার্ডের বর্তমান ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর অশোকা মৃধা এব্যাপারে সোনারপুর উত্তর তৃনমূল দলের উচ্চ নেতৃত্ব নজরুল আলি মণ্ডলকে জানিয়েছেন বলেও খবর আছে। এব্যাপারে অশোকা জানায়, আমায় কিছু না জানিয়েই এই তান্ডব চালাচ্ছে তৃণমূলের নামে এলাকার কিছু সুবিধাবাদী মানুষ। আমরা কখনই এই আচরণকে সমর্থন করি না। মানুষ আমাদের তৃতীয়বারের জন্য সুযোগ দিয়েছে মানে হিংসা ছড়াতে নয়।আমাদের তাদের বুঝিয়ে দলে আনতে হবে, আতঙ্ক ছড়িয়ে নয়। একই মন্তব্য করেছেন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার বিদায়ী পৌরপিতা তরুণ কান্তি মন্ডল। তিনিও জানিয়েছেন দলে কয়েকদিন মাত্র এসেই অনেকে মনে করছেন বড় দলের শুভাকাঙ্খী বা দলের একনিষ্ঠ কর্মী কিন্তু পুরানো তৃনমূল কর্মীরা দিদি-র আদর্শের বাইরে গিয়ে কোন কাজ করে না।তারাই দলের আসল সৈনিক যারা দিদি-র সম্মানের কথা চিন্তা করে রাজনীতিটা করে।

গতকাল গড়িয়ার ৩ নং ওয়ার্ডে মাঝরাতে সন্ত্রাসের খবর পেয়ে নরেন্দ্রপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুখময় চক্রবর্তী নিজে পুলিশ বাহিনী নিয়ে পৌঁছে যান এবং এক স্বঘোষিত যুব নেতাকে হাতেনাতে ধরলে তিনি হাতে পায়ে ধরে নিজেকে ছাড়ান কারণ তার দৌড়ে পালানোর মত ক্ষমতাও নেই এবং বাকিরা চম্পট দেন। কথায় আছে না গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল সেরকম কিছু কর্মী নেতা সাজতে চাইছেন। এরপর আজ সোনারপুর উত্তর বিধানসভার উচ্চ নেতৃত্বের কাছে বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধা সকালে গেলে তাঁকে সরাসরি নজরুল আলি মন্ডল জানিয়ে দেন বিদায়ী পৌরমাতা হিসাবে তিনি এধরনের পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নিতেও যেন পিছপা না হন। এছাড়াও তিনি উপস্থিত শ্যামল সরদারকে সাবধান করে দেন এলাকায় যেন কোনরকম অশান্তি বা সন্ত্রাস না ছাড়ায়। অন্যদিকে লাগাতার তিনদিন এই সন্ত্রাসের পর এলাকার মানুষ খুবই ক্ষিপ্ত হয়ে আছে বলে খবর।

দেখুন অনুরাধা দাস যার স্বামী প্রসূন কুমার দাস কি বলছেন? আমাদের তিনি হোয়াটস অ্যাপ করে জানিয়েছেন। তিনি জানান তিনি তৃনমূল করেন এবং তার স্বামী বিজেপি করেন। এরকম বহু মানুষ আছে এই ওয়ার্ডে যারা তৃনমূল করতো আজ এই কর্মীদের অকথ্য অত্যাচারের ফলে বিজেপিতে গেছে কারণ তাদের আচরণ ভাল না। এই প্রভাতী হাউসে ঢুকে প্রসূন কুমার দাসকে না পেয়ে তার অসুস্থ বাবা-মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং বাড়িতে বোমা মারা ও দোকান ভাঙচুর চালায়। অনুরাধা দাসকে পর্যন্ত মারধোর করতে ছাড়ে নি। সামনে পৌরসভা নির্বাচন যারা ভাবছেন এটা করলে দল প্রশংসা করে নির্বাচনের টিকিট দেবে তা কিন্তু ভুল। এভাবে বিজেপি থেকে তৃনমূলে কাউকে আনা যায় না। শারীরিক ভাবে আনলেও মানসিক ভাবে আনা সম্ভব নয়। নেতৃত্বকে আই ওয়াশ করে দেখানো যায় কত মানুষ তার সাথে আর তাই দেখে নেতৃত্ব যদি টিকিট দেয় সেটা নেতৃত্বের বিবেচনা। কিন্তু যার গত বিধানসভা নির্বাচনে কোন প্রচার চিল না, শুধু একটা অস্থায়ী তৃনমূলের দলীয় অফিস করে শুধু ফেসবুকে ছবি দিয়ে বুঝিয়েছে “ভাবি আমি তোমার জন্য প্রাণ দিতে রাজি”, আর একটা পেটোয়া ডিজিটাল মিডিয়া ফিট করে দিশাহীন বক্তব্য রেখে যদি নেতা হওয়া যায় তবে মমতা ব্যানার্জিকে ১৫টা বছর কালঘাম ছুটিয়ে আজকে দলের এই অবস্থায় আনতে সময় লাগতো না। সব মিডিয়া মমতা ব্যানার্জির বাইট নিতে গত ২০ বছর ধরে মুখিয়ে ছিল। কখনও এই নেতার নামে গালাগালি কখনও ওই নেতার নামে কুৎসা এই যাদের চর্চা তারা নেতৃত্ব দেবে কিভাবে? প্রশাসনের সাহায্যের জন্য যদি কখনও এই পরিবারের রেকর্ডিং প্রয়োজন হয় তা আছে আমার কাছে প্রয়োজনে আমি তা সম্প্রচার করতে পারি এই অত্যাচার বন্ধ করতে। তাতে সেই রাতের শ্যামল সহ অনেকের নাম উঠে এসেছে।

এরকম আরও আছে, একসময় সিপিএমের পৌরমাতা ছিলেন মীনা মিস্ত্রি তার ছেলে বর্তমানে বিজেপি করছে, ওই এলাকায় গিয়ে লাইন ধরে ভাঙচুর চালায় এই বাহিনী। মানুষ আতঙ্কিত কিন্তু প্রশাসন এদের কিছুই করতে পারছে না। মানুষ বলছে প্রশাসনকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে এদের বিরুদ্ধে কিছু না করতে। এবার মানুষ রাস্তায় নেমে দলমত নির্বিশেষে এর প্রতিবাদ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *