কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সার্বিক ব্যবস্থাপনা ঘোষণা করল অ্যাপোলো হাসপাতাল গোষ্ঠী—‘প্রোজেক্ট কবচ’
নিজস্ব সংবাদদাতা, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৭শে মার্চ ২০২০: কোভিড-১৯ সংক্রমণের মোকাবিলা ও আক্রান্তদের চিকিৎসা ও শুশ্রুষা করা এই মুহূর্তে বিশ্বজনীন বড় চ্যালেঞ্জ। আজ, বৃহস্পতিবার সেই লক্ষ্যেই দেশের দেশের বৃহত্তম হেল্থকেয়ার চেইন অ্যাপোলো হাসপাতাল একটি সার্বিক ব্যবস্থাপনার ঘোষণা করল। হাসপাতাল গোষ্ঠীর কর্ণধাররা এদিন চেন্নাই ও হায়দরাবাদ থেকে সেজন্য একটি ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠক করেন অনলাইনে। তাঁরা জানান, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় তাঁরা একটি সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘প্রোজেক্ট কবচ’। যার অর্থ একটি সামগ্রিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিয়ে তথ্য বিনিময়, স্ক্রিনিং, অ্যাসেসমেন্ট, পরীক্ষা, কোয়ারিন্টিনে রাখা এবং চিকিৎসা ও শুশ্রুষার ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্বজুড়ে এই যে মহামারী দেখা দিয়েছে, দেশের মানুষের জন্য তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রোজেক্ট কবচের আওতায় অ্যাপলো হাসপাতাল তাদের উৎকর্ষ চিকিৎসা ব্যবস্থার ষোল আনা দেবে।
অ্যাপোলো হাসপাতাল গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ডঃ প্রতাপ সি রেড্ডি বলেন, “আমরা একটি যুদ্ধ লড়ছি। তা শুধু বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়। আগামী প্রজন্মের জন্যও। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেশকালের সীমা বোঝে না। জাত, পাত, ধর্ম, শ্রেণি, সামাজিক অবস্থান সবই তার কাছে অর্থহীন। ফারাক করেনা সে। তাই নবীন-প্রবীণ সকলে মিলে এই সংকটের পরিস্থিতিতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একজোট হতে হবে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়ার জন্য। অ্যাপোলে হাসপাতাল পরিবার সময়জ্ঞান ভুলে এই জরুরি পরিস্থিতিতে সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দায়িত্ব পালন করে যেতে চায়। এবং এই যুদ্ধে জিততে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রোজেক্ট কবচের অবধারনা সেই কারণেই করা হয়েছে। যাতে সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে তাল ও সামঞ্জস্য রেখে এই যুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই চালিয়ে যেতে পারি আমরা”।
অ্যাপোলো হাসপাতাল গোষ্ঠীর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারপারসন শ্রীমতি শোভনা কামেনেনি বলেন, “করোনাভাইরাসের ঝুঁকি যাচাই করার জন্য অ্যাপোলো হাসপাতাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর একটি স্ক্রিনিং ও অ্যাসেসমেন্টের বিশেষ ব্যবস্থা শুরু করেছে। এটা ওয়েবসাইটেও রয়েছে। এর একটি অ্যাপও রয়েছে। এর মাধ্যমেই কোনও রোগী বা ব্যক্তি তাঁর ঝুঁকি পর্যালোচনা করতে পারেন। খুবই সরল এই পদ্ধতি। প্রাথমিক ভাবে এই ব্যবস্থায় সংক্রামিত হওয়ায় ঝুঁকি খতিয়ে দেখার পর প্রয়োজনে এই অ্যাপ তাঁকে কাছেই সার্টিফায়েড হেল্প সেন্টারে যাওয়ার জন্য গাইড করে দেবে”।
শোভনা আরও বলেন,“গোটা বিশ্বের তিরিশটি দেশের সাড়ে আট মিলিয়ন মানুষ ইতিমধ্যেই এই অ্যাপোলোর এই 24 । 17 অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যান করেছেন। এবং আশা করা হচ্ছে দশ মিলিয়ন তথা ১ কোটি ভারতীয় এই ব্যবস্থায় স্ক্যান করে তাঁদের রিস্ক স্কোর তথা ঝুঁকির সম্ভাবনা জেনে নেবেন। এই ডিজিটাল অ্যাপোলো 24 । 17 অ্যাপের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই কোনও রোগী অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকদের থেকে ভার্চুয়াল ব্যবস্থায় বা টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং তাঁদের থেকে জরুরি চিকিৎসা পরামর্শ নিতে পারবেন”।
শ্রীমতি শোভন কামেনেনি জানান, “গোটা দেশের ১৮ টি রাজ্যে অ্যাপোলো ফার্মেসির ৩৮০০টি দোকান রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও তারাও প্রস্তুত রয়েছে। ওষুধ, পরিষেবা, সাপ্লিমেন্ট যখনই দরকার পড়বে তারা সরবরাহ করতে প্রস্তুত। তাদের মজুতও বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। তা ছাড়া দামের উপর শুধু নজর রাখা হয়নি, নিয়ন্ত্রণও রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে হোম ডেলিভারি করার লোকজনও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আনুমানিক ৫ লক্ষ থেকে দশ লক্ষ মানুষকে প্রতিদিন পরিষেবা দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে এই ৩৮০০ ফার্মেসির”।
অ্যাপোলো গ্রুপের জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীমতি সঙ্গীতা রেড্ডি বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়ার জন্য টেস্টিং তথা আক্রান্ত সন্দেহ করা হচ্ছে এমন ব্যক্তির পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। অধিকাংশ অ্যাপোলো সেন্টারই কোভিড-১৯ টেস্ট করার জন্য অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। মার্চ মাসের মধ্যেই এই সংক্রান্ত পুরো পরিকাঠামো তৈরি হয়ে যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে। পূর্ণমাত্রায় তখন সেগুলি কাজ শুরু করে দেবে। এই ব্যবস্থায় পরীক্ষার জন্য হোম কালেকশনের ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। আবার অ্যাপোলো সেন্টারে এসেও কেউ নমুনা দিতে পারেন। একমাত্র রোগী ছাড়া হাসপাতালে পরীক্ষা করানো যথাসম্ভব এড়ানোর পরামর্শই দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া লোকজনের স্ক্রিনিংয়ের জন্য একটি পৃথক ফিভার ক্লিনিক তৈরি করা হয়েছে। যাদের টেস্ট করা অপরিহার্য। তারা এসে সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে টেস্ট করাতে পারবেন”।
শ্রীমতি সঙ্গীতা রেড্ডি আরও বলেন, “আমরা একবার জোরকদমে স্ক্রিনিং শুরু করে দিতে পারলেই দেখা যাবে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়়ে, যাঁদের তক্ষুণি আইসোলেট করার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা সাধারণত বাড়িতে সম্ভব হবে না। কারণ, অধিকাংশ বাড়িতে বা পরিবার ৬ থেকে ৭ জন সদস্য রয়েছেন। যাঁরা একটাই বাথরুম ব্যবহার করেন। তাই খুব শিগগির আমরা নতুন প্রোজেক্ট শুরু করব—তার নাম হবে, ‘প্রোজেক্ট স্টে-I’। এই প্রকল্পের আওতায় রোগীকে কোনও হোটেল বা হোস্টেলে চিকিৎসা-নজরদারিতে কোয়ারেন্টিন রাখা হবে। একেবারে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে যাতে তাদের আলাদা করে রাখা যায়। এসব ক্ষেত্রে দেখা যাবে, অন্তত ৫০ শতাংশেরই চিকিৎসার জন্য স্রেফ প্যারাসিটামল এবং আইসোলেশনের ব্যবস্থাতেই কাজ হবে। চেন্নাই, মুম্বই, হায়দরাবাদ, কলকাতা, বেঙ্গালুরু এবং দিল্লিতে এই মেডিকেল রুমের ব্যবস্থা করা হবে। প্রাথমিক ভাবে প্রতি শহরে এরকম ৫০ টি মেডিকেল রুমের ব্যবস্থা করা হবে। তার পর প্রতি তিন অন্তর আর ৫০ টি করে রুমের ব্যবস্থা করা হবে। টার্গেট হল গোটা দেশে এরকম পাঁচ হাজার রুমের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজন অনুযায়ী এই সংখ্যা বাড়ানো হবে।”
এভাবে পরিকাঠামো বাড়ানো এই কারণেই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে যে বর্তমান পরিস্থিতি ভাল নয়। ভাইরাস আক্রান্ত এক জন মানুষ অন্তত চার থেকে পাঁচ জনকে সংক্রামিত করতে পারে। রোগী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে উৎকন্ঠা কাজ করছে তা প্রশমিত করতেই অতিরিক্ত এবং প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা রাখা জরুরি। যাতে গোটা দেশের মানুষ সঠিক এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা পায়। শ্রীমতি সঙ্গীতা রেড্ডি বলেন, “ প্রোজেক্ট স্টে-I এর আওতায় এক মাসে দশ থেকে পনেরো হাজার রোগীকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলেই আমরা আশা করছি। এর ফলে অন্তত ৫০ লক্ষ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো আটকে দেওয়া যেতে পারে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের সঙ্গে সমন্বয় ও আলোচনা করে চলছি। আশা করছি শনিবার এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানাতে পারব। ওই দিন প্রোজেক্ট স্টে-I আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করা হবে।”
অ্যাপোলো হাসপাতাল গ্রূপ-এর ভাইস চেয়ারপারসন, শ্রীমতি পৃথা রেড্ডি বলেন, “একই সঙ্গে আমরা বর্তমান রোগীদেরও সমান গুরুত্ব ও যত্নের সঙ্গে চিকিৎসা ও শুশ্রুষার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ।
ওয়ান অ্যাপোলো ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় দু’কোটি ঝুঁকিপূর্ণ রোগী উপকৃত হবেন। অ্যাপোলো কেয়ারের উদ্যোগে যাঁদের কোনও না কোনও অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে, নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছে, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের মতো অসুখ রয়েছে, তাঁরা এই ব্যবস্থায় সরাসরি সুবিধা পেতে পারবেন। এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, নিয়মিত শুশ্রূষা ও চিকিৎসা। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ঘটা কোভিড ১৯ অসুখ থেকে নিরাপদে থাকার জন্য এই চিকিৎসা ব্যাহত হতে পারে। তাই তাঁদের জন্য টেলি-মেডিসিন ব্যবস্থা এনেছে অ্যাপোলো, ব্যবস্থা করেছে চিকিৎসকদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করার। বাড়ি থেকে কোনও পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে বাড়িতে রিপোর্টও পাঠানো হবে এই ব্যবস্থায়। পৌঁছে দেওয়া হবে ওষুধ।
যোগাযোগের জন্য হেল্পলাইন নম্বর: ১৮৬০৫০০১০৯৯, ওয়েবসাইট: www.askapollo.com
তিনি আরও বলেন, “অ্যাপোলো হাসপাতালে কোভিড ১৯ আক্রান্ত রোগীদের সবরকম চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য একটি বিশেষ স্বাস্থ্যকর্মীদের দল নিযুক্ত রয়েছে, যাঁরা এ ব্যাপারে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। নিজেকে সংক্রমণ মুক্ত রাখা থেকে রোগীর উপসর্গ বুঝতে পারা এবং সন্দেহ হলে সেই তথ্য যথাযথ পথে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়া, রোগনির্ণয় হলে চিকিৎসা– এই সবই তাঁদের বিশেষ দক্ষতা। এই গোটা প্রকল্পটিকে বলা হচ্ছে ‘প্রোজেক্ট কবচ’। একদম গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত সঠিক ভাবে কোভিড ১৯-এর চিকিৎসা হবে এই ব্যবস্থায়।
শুধু তাই নয়, অ্যাপোলো মনে করে, এই ধরনের কাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মানুষকে শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা। তাই আমাদের তরফে অনলাইনে কোভিড ১৯ কোর্স করানো হচ্ছে বিনামূল্যে। ৫০ হাজার মানুষ এই কোর্স পড়ে অনেক কিছু জেনেছেন। এর আগেও নিরাপদে কাজ করা নিয়ে আমাদের কর্পোরেট শিক্ষা ২৫০-এরও বেশি কর্পোরেট সংস্থার কাজে লেগেছে।”
অন্ধ্রপ্রদেশ, ভুবনেশ্বর– ইত্যাদি যে সমস্ত জায়গায় সরকারি ভাবে কোভিড ১৯ অসুখের চিকিৎসার জন্য আাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সব জায়গাতেই অনেকগুলি বেড এবং অন্যান্য পরিষেবা দিয়ে সরকারকে সাহায্য করছে অ্যাপোলো। এই করোনাভাইরাস যদি পরের স্টেজে পৌঁছে যায়, অর্থাৎ কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু করে দেয়, তাহলে কী হতে পারে, সে বিষয়েও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে অ্যাপোলো গ্রুপ।
অ্যাপোলো হসপিটালস গ্রূপ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মিস সুনীতা রেড্ডি বলেন, “আমরা আশা করছি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যন্ত পৌঁছবে না এই অসুখ। তবু ঘটনাক্রমের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তেমন হলে, আশঙ্কাজনক রোগীদের চিকিৎসায় অতি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের এবং বিশেষ চিকিৎসা পরিকাঠামোর প্রয়োজন হবে একটানা। অ্যাপোলো গ্রুপের ৭০টি হাসপাতালে বহু সংখ্যক আইসোলেশন এবং আইসিইউ ব্যবস্থা রয়েছে। যে কোনও সময়ে একসঙ্গে ২৫০ জন এই ধরনের অসুখে আক্রান্ত আশঙ্কাজনক রোগীর চিকিৎসা করার ক্ষমতা আছে অ্যাপোলোর, তা বাড়িয়ে করা হবে ৫০০। প্রতি মাসে এরকম ২০০০ রোগীর চিকিৎসা আমরা করতে পারব বলে আশা করছি।”
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সবরকমভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হচ্ছে অ্যাপোলো হাসপাতালে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আপৎকালীন অবস্থার আরও বেশি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের থাকার জন্য আলাদা কোয়ারেন্টাইন কোয়ার্টারের ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে প্রত্যাকের জন্য আলাদা আলাদা ঘর রয়েছে। তাছাড়াও কোয়ারেন্টাইন কোয়ার্টারে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ, চিকিৎসার সরঞ্জাম, ভেন্টিলেটর, নেগেটিভ প্রেসার রুম, জরুরিকালীন অবস্থার জন্য যাবতীয় সুযোগসুবিধা। কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজার, বিশেষ পোশাক-সহ (পিপিই -পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট) সবকিছুরই ব্যবস্থা রয়েছে।
অ্যাপোলো হাসপাতাল গ্রূপ-এর চেয়ারম্যান ড. প্রতাপ সি রেড্ডি বলেছেন, জটিল পরিস্থিতিতে দ্রুত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন হাসপাতাল কর্মীরা। অ্যাপোলো পরিবারের সদস্যদের নিরলস পরিশ্রম ও উদ্যোগের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি হাসপাতালের কোনও বেড খালি থাকলেও কর্মীদের বেতন কাটা যাবে না। তাঁদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ও সচেতন থাকবে অ্যাপোলো পরিবার। কোনওভাবে যাতে স্বাস্থ্যকর্মীরা সংক্রামিত না হন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে সিঙ্গপুর-মডেল অনুসরণ করছে অ্যাপোলো গ্রুপ। সেখানে এমনভাবে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছে, যাতে একজন স্বাস্থ্যকর্মীও আক্রান্ত হননি, বা কারও সংক্রমণে মৃত্যু হয়নি। সরকারি নির্দেশিকা মতোই কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থার কথা মাথায় রাখা হয়েছে। বিপুল জনসংখ্যার দেশে মারণ ভাইরাসের মহামারী আটকাতে লকডাউনই আদর্শ উপায়। কারণ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে এখনও দেশজুড়ে আরও ৫০ হাজার আইসোলেশন বেডের দরকার। তার জন্য ভুবনেশ্বর ও অন্ধ্রপ্রদেশে কাজ করছে অ্যাপোলো গ্রূপ। আরও বেশি সংখ্যক আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন বেডের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গেই ইলেকট্রনিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (EICU) জন্য একটি প্রোটোকল সেট করা হয়েছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা কাজ করবেন অ্যাপোলো গ্রূপ-এর বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, পালমোনোলজিস্ট ও ইনটেনসিভিস্টরা।
সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “দেশের সুরক্ষা ও সুস্বাস্থ্যের জন্যই তৈরি অ্যাপোলো হাসপাতাল। সঙ্কটের এই সময় আমাদের অ্যাপোলো পরিবার পুরোপুরি তৈরি। যে কোনও পরিষেবায় নিরলস পরিশ্রম, স্বার্থত্যাগ করবে এই গ্রূপ। যতদিন না মিশন শেষ হয় কেউ বিশ্রাম নেবে না।”
দেশের এতবড় কর্মযজ্ঞে আমাদের অবদান সামান্যই, তবে আমরা আমাদের সামর্থের থেকেও বেশি চেষ্টা করব এবং অবশ্যই দেশবাসীকে সেরাটা দেব। প্রচার : অ্যাড ফ্যাক্টর