খবরাখবর

বিধায়ক ফিরদৌসীর উদ্যোগে মুক্ত হবে গড়িয়া স্টেশনের দীর্ঘদিনের জানযট সমস্যা

অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ৯ই জুলাই ২০২১ : গড়িয়া স্টেশনে সান্ধ্যবাজার নিয়ে দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা ছিল। প্রথমে এই বাজারে যত্রতত্র দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছিল যা গত লকডাউনের সময় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার সিআইসি তথা প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য নজরুল আলি মন্ডলের উদ্যোগে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছিল।কিন্তু লকডাউনের সময় যত শিথিল হতে লাগলো আবার সেই সমস্যা বাড়তে থাকে। এই রাস্তা দখল করে দোকান বসা নিয়ে নবগ্রামের রাস্তায় দীর্ঘ জানযটের সমস্যা শুরু হয়। যেখানে লকডাউনের সময় সেভাবে রাস্তায় গাড়ি চলছে না সেখানে এই নবগ্রামের রাস্তায় জামযট বজায় থেকেই যাচ্ছে।

এব্যাপারে আজ সন্ধ্যায় সান্ধ্যবাজারের ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম, নজরুল আলি মন্ডল ও নরেন্দ্রপুর থানার পক্ষে থেকে প্রবীর শাসলম সহ রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার বাস্তুকার শুভাশিস বসু। বাজার কমিটির পক্ষে থেকে উপস্থিত ছিলেন সুকান্ত মন্ডল। সভায় নজরুল আলি মন্ডল সুকান্ত মন্ডলের নেতৃত্বে এই জামযটের সমস্যার সমাধানের সূত্র পরিস্কার করেন।সভায় উপস্থিত ছিলেন হিমাংশু দে, অমিতাভ কুন্ডু, শিবু কর সহ অনেকে।

এই সভায় নজরুল আলি মন্ডল সাফ জানান, রাস্তা দখল করে কোন ব্যবসা করা যাবে না। বাজার এলাকায় বর্তমানে যাদের পাকা দোকান আছে শুধু তারাই ব্যবসা করতে পারবে। কিন্তু তার মানে এই নয় দোকানের বাইরে রাস্তা দখল করে ব্যবসা করবে। সেটাও আর করতে দেওয়া যাবে না। গড়িয়া স্টেশনের মুখ থেকে নবগ্রামের প্রবেশ পথে রাস্তায় দখল করে কোন দোকান করা যাবে না। এছাড়া সান্ধ্যবাজার এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে রাস্তার উপর লাগামহীনভাবে বাজার করতে আসা ক্রেতাদের সাইকেল, বাইক রেখে দেওয়া হয় যার ফলে নিত্য পথযাত্রীদের প্রতিনিয়ত সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়। এবার আর তাও করা চলবে না। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী থাকবে এটা দেখার জন্য এবং তারা বাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করবে যাতে কেউ ইচ্ছে মত বাইক বা সাইকেল রেখে বাজারে না যায়। কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কাউকে রেহাত করা হবে না। নজরুল আলি মন্ডল আরেকটা ব্যাপারে আলোকপাত করে বলেন, বাজারের বর্জ্য পার্শবর্তী ঝিলে ফেলা যাবে না। প্রতিদিন পৌরসভার বর্জ্য দপ্তরের কর্মীরা এসে নিয়ে যাবে। যদিও এই কথা এর আগের সভাতেও বলেছিলেন নজরুল আলি মন্ডল। মাছ বাজারের ক্ষেত্রে যদিও সম্ভবত মানা হয়েছে তবে সান্ধ্যবাজারের ক্ষেত্রে সেভাবে মানা হয় নি। এখন দেখার এবার তা মানা হয় কিনা।

সভায় বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম বলেন, গড়িয়া স্টেশন থেকে নবগ্রামের রাস্তার কাজ শুরু করা হবে এবং ঝিলপার ধরে সৌন্দ্যর্যায়নের কাজ হবে যুব সংঘ ক্লাব পর্যন্ত। রাস্তায় হাইমাস্ট লাইট লাগানো হবে এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হবে। তিনি এমনও বলেন যারা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার ধারে দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন তাদের কোনভাবেই উচ্ছেদ হতে হবে না। যাদের বিকল্প কোন দোকান নেই তাদের কথা চিন্তা করা হবে কিন্তু যতক্ষণ না কিছু উপায় করা হচ্ছে ততক্ষণ তারা রাস্তা দখল করে দোকান লাগিয়ে ব্যবসা করতে পারবে না।এই সমস্যা দীর্ঘদিনের এবং বিভিন্ন ভাবে মানুষের ক্ষোভ আমাদের কাছে এসেছে তাই এবার এই সমস্যা সমাধান করতেই হবে। এভাবে রাস্তা আটকে বাইক সাইকেল রাখার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে বাকবিতণ্ডাও হয়েছে বহুবার যা পরবর্তীতে অশান্তিতে পরিণত হয়েছে। এবার যদি সেই একই পরিস্থিতি তৈরি হয় তবে ক্রেতা ও বিক্রেতার প্রতি প্রশাসন কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

সত্যিই, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। অফিস টাইমে স্কুল পড়ুয়ারা ও অফিসযাত্রীদের এই জানযটের কারণে হেনস্থা হতে হয়। দীর্ঘক্ষণ এই জামযটে আটকে থাকার ফলে সময়মত স্কুল ও অফিসে পৌঁছাতে পারে না। যদিও আজ লকডাউনের বিধি নিষেধের ফলে স্কুল বা অফিসে সেভাবে যাওয়ার ব্যাপার নেই।বিধিনিষেধের কারণে স্কুল বন্ধ আর অফিসে উপস্থিতি এখন অর্ধেক হয়ে গেছে। তবে এখন থেকে সবটাই যদি ব্যবস্থা নেওয়া যায় তবে পরিস্থিত স্বাভাবিক হলে আর অসুবিধা হবে না। কিছু নেতা দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের পকেট ভরতে রাস্তার উপর দখলদার দোকান বসার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের এবার বেশ সমস্যা বাড়লো তাহলেও মানুষের আশির্বাদ ও শুভেচ্ছা লাভ করবেন বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম। এভাবেই দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো সমাধান করতে থাকেন তবে তিনবার কেন আজীবন বিধায়ক হিসাবেই মানুষ তাঁকেই চাইবেন যতই কিছু মতলবি তৃনমূল নেতা মানুষের কান ভরে বলুক “গোটা রাজ্যে তো তৃনমূল জিতবে, সরকারও তৃনমূল করবে, সোনারপুর উত্তরে তৃনমূল হারলে কিছু হবে না, আর সংখ্যালঘু প্রার্থীকে ভোট নয়।” মানুষ সেই কথাকে আমোল না দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে কাকে ভোট দিতে হয়। সেই সব নেতারা তলে তলে বারুইপুর বিজেপি জেলা অফিসে গিয়ে দেখাও করতে গিয়েছিল। ভেবেছিল এবার রাজ্যে পরিবর্তন হবে আর তারা নিজেদের জায়গা অব্যাহত রাখবে। কিন্তু নির্লজ্জ সেই সব নেতারা আজ বিজেপি অফিস থেকে প্রত্যাক্ষিত হয়ে আবার সেই তৃনমূলেই থেকে গেছে। গড়িয়া স্টেশনের প্রতিটা গলিতে এই নিয়ে চর্চা হচ্ছে, কান পাতলেই শোনা যায়। কিন্তু সেই নেতারা মানুষের সামনে এসে জোর গলায় বলছে কালিঘাট থেকে এবারে পৌরসভার প্রার্থী তালিকায় আমাদের নাম পাকা হয়ে গেছে। এবার তো আমাদেরই ভোট দিতে হবে। এরা বোধহয় নিজেদের মুখটা একবার আয়নায় দেখেও না বলে মনে হয়। যাদের পিছনে জনগন নেই, গুঁটিকয়েক নেওটা ছাড়া দলের প্রকৃত কর্মী নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *