মালা রায় ইচ্ছাকৃত গোষ্ঠীকোন্দল বাঁধিয়ে হেনস্থা করতে চাইছে শোভনদেবকে
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৪ই নভেম্বর ২০১৯ : মালা রায় ও নির্বেদ রায় নিজেরাই জানে না কোন দলে কখন অবস্থান করবে। মালা রায় দীর্ঘদিন তৃণমূল দলের বাইরে ছিলেন। একসময় কর্পোরেশন নির্বাচনে সুব্রত মুখার্জির উস্কানিতে নির্দলের পক্ষে প্রার্থী হয়েছিলেন।তার আগে তিনি কংগ্রেসে ছিলেন। কোথাও কোন জায়গা না করতে পেরে বাধ্য হয়ে সেই মমতা ব্যানার্জিকে ঢাল করে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হলেন। কিন্তু তাঁকে তৃণমূল দলের অনেকেই মন থেকে মেনে না নিলেও দলের প্রার্থী হিসাবে সমর্থন করতে হয়েছে। তাতে মালা রায় নিজেকে ভেবে নিলেন তিনি তাঁর নিজের কারিশমায় জয়ী হয়েছেন। কিন্তু ঘটনা তা নয়, সবটাই মমতা ব্যানার্জির কারিশমা।কিন্তু শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এই দল থেকে ওই দল করে জায়গা করেন নি। তিনি প্রথমদিন থেকে একটাই দল নিয়ে রাজনীতিটা করেছেন। আর এটাই অনেকের কাছে হিংসার কারণ।দীর্ঘদিন ধরে মালা রায় রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে সহ্য করতে পারছিলেন না, তিনি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন কবে তাঁকে হেনস্থা করা যায়। সেই সুযোগ চলে এলো এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে। মমতা ব্যানার্জি সাধারণ মানুষের জন্য চলচ্চিত্র উৎসবে এক সুযোগ্য কর্মসূচী নিয়েছেন যেখানে পাড়ায় পাড়ায় মানুষের জন্য সিনেমা দেখানো হবে।
আর তার জন্য এলাকা অন্ধকার রাখাটা খুবই প্রয়োজন। ঠিক সেইভাবে রাসবিহারী বিধানসভায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় “পাড়ায় পাড়ায় সিনেমা”র আয়োজন করেছিলেন। তাতে এলাকার আলো বন্ধ রাখতে হয়েছে। বিপত্তির সূত্রপাত সেখান থেকে।যতই মালা রায় মুখে বলুন তিনি খুব বদান্যতার সাথে মন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন আলো চালু করার জন্য। কোন কারণে দুজনের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ার কারণে মালা রায় তাঁর বাহিনী নামায় রাস্তায়। গোটা রাসবিহারী চত্বর অবরোধ করে। খবর পেয়ে সেখানে মন্ত্রী শোভনদেব গেলে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল দলে সব থেকে প্রবীণ নেতা। দলের প্রথম বিধায়ক। কিন্তু তাঁর সব থেকে যেখানে সমস্যা তা হল তিনি কোন রকমের বেনিয়ম মানেন না, নিজেও করেন না। এর আগেও তাঁকে রাজ্যের আজকের একজন সাংসদ শ্রমিক সংগঠন নিয়ে হেনস্থা করেছেন। আবার রাজ্যের এক মন্ত্রীর ভাইয়ের সাথে দুরত্ব বাড়ে। কিন্তু শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছিলেন অবিচল। মালা রায় কি তবে এখন থেকেই তাঁর স্বামী নির্বেদ রায়ের জন্য রাস্তা করছেন রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের টিকিটের জন্য? তিনি খুব ভাল করে জানেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় থাকলে তাঁর পরিবারের কেউ সেখানে দাঁত ফোঁটাতে পারবে না। নির্বেদ রায় এতদিন কংগ্রেসের পক্ষে বিভিন্ন দুরদর্শন চ্যানেলে বসে এই মমতা ব্যানার্জির বিপক্ষে কটুক্তি করেছে কিন্তু শেষমেশ সেই মমতা ব্যানার্জির কাছে এসে সমর্পন করতে হয়েছে এই রায় দম্পতিকে। কিন্তু মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে হেনস্থা করার পর গতকাল রাসবিহারী মোড় থেকে গোটা রাসবিহারী বিধানসভায় ধিক্কার মিছিল পরিক্রমা করে। একটা ছোট্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নি মালা রায়।মালা রায় যেভাবে রাসবিহারী মোড় অবরোধ করতে সাহায্য করেছেন তাতে তিনি ঘুড়িয়ে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে একপ্রকারের জেহাদ ঘোষণা করলেন। কিন্তু তাঁর এখনও বোধগম্য হয় নি রাসবিহারীর মানুষ মন্ত্রী শোভনদেবকে চেনেন না, মানুষ শোভনদেবকে চেনেন। তাঁরা সকলে তাঁর ব্যবহার, সংস্কৃতিকে সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে, আর তাই তাঁরা মালা রায়ের কাছে এই হেনস্থার জবাব চাইতে এবার রাস্তায় নেমেছে। এই মিছিলে কোন নেতৃত্ব ছিল না, সকলেই ছিল বিধানসভার সাধারণ নাগরিক।এই করে কি মালা রায় পারবে রাসবিহারী বিধানসভার টিকিট নিজের স্বামীর জন্য আনতে?