খেলা

টানটান উত্তেজনার মধ্যে ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবার জয়ী হল গোকুলাম কেরালা

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৫শে আগস্ট ২০১৯ : ১২৯ তম ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠেছিল মোহনবাগান ও গোকুলাম কেরালা।দুদলের খেলোয়াড়দের সাথে পরিচিতি পর্বের শেষে খেলার সূচনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও লেফঃ কর্ণেল মনোজ নারাভানে সহ অনেকে। যেহেতু বিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল ছিল না সেহেতু সল্টলেক স্টেডিয়াম ছিল অনেকটা ফাঁকা। তবুও মাঠ জুড়ে ছিল মোহনবাগান সমর্থকেরা। প্রথমার্ধ থেকেই গোকুলাম বিপক্ষ দল মোহনবাগানের এলাকায় নিজেদের দাপট দেখাতে শুরু করলে মোহনবাগান যেন তাদের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল।

Players are introduced with the guests WB Sports Minister Aroop Biswas, Lt Col Manoj Naravane

হঠাৎই মোহনবাগান গোলকিপার দেবজিত মজুমদার পেনাল্টি বক্সের উপর ফাউল করতেই পেনাল্টি পায় গোকুলাম।পেনাল্টি থেকে গোলে বল ঠেলে দেয় গোকুলাম অধিনায়ক মারকাস।এরপর স্বাভাবিক ভাবে সময় নষ্ট করতে শুরু করে গোকুলাম, শুধু অপেক্ষা কখন বিরতির বাঁশি বাজবে। দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান প্রথমদিকে জ্বলে উঠলেও সেভাবে মেলে ধরতে পারে নি। তাঁর মধ্যেও মোহনবাগানের সালভাদোর গোকুলামের গোলে বল ঠেলে দিয়ে সমতা ফেরায়। কিন্তু গোকুলামের অভিনায়ক মারকার খুব ঠাণ্ডা মাথায় ও সাবলীল খেলা প্রদর্শন করেছে। হঠাৎই সুযোগের সদব্যবহার করেছে মারকাস। নিজে একা নীচ মাঠ থেকে বল তুলে নিয়ে মোহনবাগানের ডিফেন্সকে ধোঁকা খাইয়ে তাঁর দ্বিতীয় গোল করে নিজেকে এই টুর্ণামেন্টে সর্বোচ্চ গোলদাতার শিরোপাটা রেখে দেয় নিজের কব্জায়। এরপর থেকে মোহনবাগান কিছুটা এলোপাথাড়ি ফুটবল খেলতে শুরু করে। বক্সের উপর গোকুলামের খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত হয়ে ওঠে মোহনবাগান শিবির। তার আগে গোকুলামের জাস্টিন জর্জ দুটো হলুদ কার্ড দেখাতে মাঠের বাইরে যেতে হয়। এবার মাঠের বাইরে থাকা ফ্রানসিস্কো মরান্তে রেফারির উপর উত্তেজনা প্রকাশ করলে তাঁকে মাঠের বাইরে থেকে লাল কার্ড দেখতে হয়।

মোহনবাগান দুজনকে পরিবর্তন করলে গোকুলামও দুজনকে পরিবর্তন করে। অবশেষে ডুরান্ড কাপে প্রথমবার জয়ী হয় গোকুলাম কেরালা। গোল্ডেন বুট জয়ী হয় গোকুলাম অধিনায়ক মারকাস এবং গোল্ডেন হ্যান্ডস জয়ী হয় গোকুলামের গোলকিপার এই টুর্ণামেন্টের সব থেকে চনমনে গোলকিপার উবেদ। তবে খেলার শেষে মোহনবাগানের কোচ জানান, পরপর খেলা থাকার ফলে অতিরিক্ত হাঁপিয়ে যাওয়ার জন্য হারতে হয়েছে। এছাড়া খেলার টার্নিং পয়েন্ট ছিল পেনাল্টি। কিন্তু আমরা টেকনিকালি পরিবর্তন করেছি আর গোকুলামের ছেলেরা ভাল খেললেও তারাও হাঁপিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবর্তন

করতে বাধ্য হয়েছে। আমি মাত্র ২ মাস সময় পেয়েছি মোহনবাগান খেলোয়াড়দের কচিং করার তবে বলবো খেলার মান আরও উন্নত করতে হবে। আধুনিক ফুটবল নিয়ে ভাবতে হবে। বলের সাথে খেলোয়াড়দের উঠানামা করতে হবে। আমি রক্ষনভাগ নিয়ে বেশ চিন্তিত। দুটো গোলই হয়েছে রক্ষনভাগের ব্যর্থতার কারণে। তবে রেফারির অতিরিক্ত উত্তেজনা ম্যাচে প্রভাব ফেলেছে। আমি ভেবেছিলাম প্রথম পেনাল্টিতে রেফারি বা লাইন্সম্যান অফ সাইড নজর করবে, কেউ করল না এমনকি চতুর্থ রেফারিও দেখলেন না। যদিও এটাই ফুটবল মেনে নিয়ে খেলতে হয়েছে। কিন্তু খেলা শেষ হবার সময় যেভাবে

মাঠের বাইরে থাকা মরান্তেকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছিল তাতে আমি বেশ বিস্মিত। ভেবেছিলাম খেলার শেষে রেফারি হয়তো দুঃখ প্রকাশ করবে কিন্তু তা করল না। আমি মানুষকে সম্মান জানানোকে শ্রদ্ধা করি। যে আমাকে বা আমার দলকে সম্মান করবে না তাঁকে কখনই ক্ষমা করতে পারবো না।পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর, রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ইস্টার্ণ কমান্ডের লেফঃ কর্ণেল মনোজ নারাভানে সহ অনেকে।ফোর্ট উইলিয়ামের তরফে জানানো হয় যদি রাজ্য সরকার এভাবে সহযোগিতা করে তবে প্রতিবছর ডুরান্ড কাপ কলকাতাতে হবে। ছবি : বিশ্বজিত সাহা ও চুনী পাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *