সগৌরবে বাংলার অক্ষয় কুমার লাহার ১৫০ বছর পূর্তীতে চিত্রশিল্পকলা শিল্পীদের সম্মান
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৭ই জানুয়ারি ২০২০ : কলকাতার এক ঐতিহ্যপূর্ণ ল্যান্ডমার্ক একসময়ের অক্ষয় কুমার লাহা তাঁর প্রতিষ্ঠার ১৫০ বছরের উদযাপন করেছেন। অক্ষয় কুমার লাহা কেবলমাত্র রঙের দোকান নয়; এটি কলকাতায় প্রাক-স্বাধীনতা সময়ের একটা স্বপ্নের উদ্যম ও প্রচেষ্টা ছিল।সুতরাং এই মূল্যবান মুহূর্তটি পালন করতে স্টোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরের চিত্রকর্মী এবং যে ওয়ালপেপার প্রযুক্তিবিদরা আমাদের শহরকে আরও রঙিন করার জন্য তাদের দক্ষতা এবং সময়কে উৎসর্গ করেছে এমন ১০ জন শিল্পীকে সম্মান জানায়। এই উপলক্ষে কলকাতা পৌর কর্পোরেশনের মেয়র পারিষদ সদস্য দেবাশীষ কুমার এবং অক্ষয় কুমার লাহার পরিবারের প্রবক্তা সুভময় লাহা এবং দেবায়ন লাহা উপস্থিত ছিলেন। বাঙালিরা এককভাবে ব্যবসা করার জন্য সবসময় অসমর্থিত হিসাবে বিবেচিত।যদিও বৌদ্ধিক দক্ষতা বা শিক্ষাগত বা পেশাগতভাবে যতদূর দেখা যায় ভদ্রলোক ব্রাহ্মণ, বৈদ্য এবং কায়স্থকে ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তাকে অসমর্থ হিসেবে বিবেচিত করা হত। ব্যবসায় ও শিল্পে বিপথগামী ব্যক্তিরা অসফলতার কারণে সম্মানজনক জায়গা বা সত্যিকারের ভদ্রলোকের জায়গা দেওয়া হত না, কিন্তু রবীন্দ্রসংগীত, সত্যজিৎ রায়, কার্ল মার্কস এবং ফুটবলের স্বল্প জগতে বাঙালি নিজেকে আরও সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন।কিন্তু এই ধারণাকে উড়িয়ে দিয়ে ১৮৭০ সালে টিপু সুলতান মসজিদের বিপরীতে এসপ্ল্যানেডে লেনিন সরণীতে অক্ষয় কুমার লাহা যখন তাঁর রং তুলির দোকান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, উপরোক্ত হিসাবে এ জাতীয় সাধারণ ক্যারিক্যাচারগুলিকে এই দূরদর্শী বাঙালি ব্যবসায়ী অক্ষয় কুমার লাহা সেই সব অভিযোগকে তাঁর প্রচেষ্টা দিয়ে নিষ্ক্রিয় প্রমাণ করেছিলেন।
এমন একটা অভিযোগের কারণ হল, “সেই সময় দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৩৬ সালে একটি ইংরেজী এজেন্সি আলেকজান্ডার অ্যান্ড কং থেকে রানীগঞ্জ কয়লাখনি কিনেছিলেন এবং কলকাতা ও হুগলির মধ্যে তিনি টাগবোট পরিচালনা, কলকাতা এবং এলাহাবাদকে সংযুক্ত করার জন্য স্টিমবোট পরিষেবা এবং একটি বাষ্প চালিত ভাসমান ফেরি হুগলি জুড়ে পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন যেখানে মূলত এই কয়লাখনি থেকে খনন করা কয়লা ব্যবহার করা হত।দ্বারকানাথ ঠাকুর এমনকি তাঁর রানীগঞ্জের কয়লাখনি থেকে কলকাতা পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার রেললাইনটি কল্পনা করেছিলেন, এটি একটি প্রকল্প যা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে “নেটিভ ম্যানেজমেন্ট” এর অধীনে একটি ভারতীয় সংস্থা দিয়ে পরিচালনার আবেদন নাকচ করেছিল। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে একজন বাঙালি হয়ে আমার ঠাকুরদা এমন একটা উদ্যোগের কল্পনা করেছিলেন এবং আমরা এই ঐতিহ্যকে বর্তমানে অব্যাহত রাখতে পঞ্চম প্রজন্ম যারা ব্রতী হয়েছি” বলে জানান সুভময় লাহা। তিনি আরও বলেন,”সুতরাং সেই উপলক্ষে এই ১৫০ তম বর্ষ উদযাপনটি কেবল অক্ষয় কুমার লাহার প্রচেষ্টা উদযাপন করাটা একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, আমরা চাই যারা এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে আসল কারিগর সেই খাঁটি-পরিশ্রমী মানুষদের চিহ্নিত করে প্রকাশে আনতে চাই।এই কারণেই আমরা প্রতি বছর এই শিল্পে প্রযুক্তিবিদ এবং চিত্রশিল্পী ও হস্তশিল্পকর্মে তাদের পরিষেবার স্বীকৃতি হিসাবে সম্মান জানাতে চাই।” প্রচারে নিলাদ্রী শেখর গাঙ্গুলি।