ভীষণ শরীরগন্ধী বলে সে গানকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো
বিশেষ প্রতিবেদক, তকমা নিউজ, কলকাতা, ২৮শে জুলাই ২০২৩ : ও পি নাইয়ারের সঙ্গে আশার আন্তরিক সম্পর্কের গুঞ্জন ফিল্ম-মহল্লায়। এই ও পি নাইয়ারকে গুরু দত্তের সঙ্গে আলাপ করিয়ে তাঁকে ‘ব্রেক’ দিয়েছিলেন গীতাই। চিরকালের বিতর্কিত ও পি কৃতজ্ঞতা নিয়ে মাথা ঘামান না। তাঁর যা ভাল লাগে তাই করেন। গীতার গলায় তাঁর সৃষ্টি ‘যাতা কহাঁ হ্যায় দিওয়ানে’ তখন সকলে গোপনে শোনে। কারণ ওই আবেদনকে হজমই করতে পারেনি পঞ্চাশের সমাজ। ভীষণ শরীরগন্ধী বলে সে গানকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো। অনেক সমালোচনাতেও ও পি নিজেকে বদলাননি। তিনি দেখলেন, গীতার মাদক-স্বরই তাঁর প্রয়োজন। কিন্তু গীতার অনেক বাধা। কাজেই অন্য কাউকে দিয়ে গাইয়ে নিলেই হয়। আশা খাটতে প্রস্তুত। পরে তিনি নিজেই এ কথা স্বীকার করেছেন। বলেছেন, আশার প্রতি পক্ষপাত করে তিনি গীতার প্রতি অন্যায় করেছেন। গুরু দত্তের শর্ত, সংসার ও সন্তানের অগ্রাধিকার শিরোধার্য করেও সুরকাররা ঠিক একটি করে গান গীতার জন্য তুলে রাখছিলেন। সেই গানই সিনেমার তুরুপের তাস হয়ে উঠত। এই রাস্তাতেই গীতা-ও পি-র জুটি ফিরেছিল শক্তি সামন্তের ‘হাওড়া ব্রিজ’-এ। ভায়োলিন, ড্রামবাদ্য, হেলেনের তুফান-নৃত্য সব থাকলেও, সে গান আজ এত দূর আসতই না, যদি না গীতা তাঁর রঙিন স্বরটি ছোঁয়াতেন।
সুরকারের দাক্ষিণ্যে, লোকে বলে বিশ্বাসঘাতকতায়, ভ্যাম্পের বদলে হিরোইনের কণ্ঠের গান পেতে শুরু করলেন আশা। আর ‘সিনিয়র’ গীতার কপালে নর্তকীর গান! ‘আইয়ে মেহেরবান’ গেয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে আশা ভোঁসলে ঘুরে দাঁড়ালেন। কিন্তু ওই এক ক্যাবারে গানেই মাত করলেন গীতা। আশার গান মুগ্ধ করল, গীতার গান শিরা-উপশিরার রক্ত চঞ্চল করে দিল। পরে অভিনেত্রী হেলেন বলেছিলেন, ‘দিদি আগুন লাগিয়ে দিতেন গানে। শটে আপনিই আমার সেরাটা বেরিয়ে আসত! কেয়া শোখি, জজ়বাত, অদা, নজ়াকত!’
এই কালজয়ী ‘চিন চিন চু’ গীতা-ও পি জুটি-র শেষ গান! ‘ও পি নায়ার ক্লাসিকস’-সংকলনে আশা ভোঁসলের গান ৮১। আর গীতা দত্ত জ্বলজ্বল করছেন মাত্র ১৮টি রত্নের জৌলুসে। হিটের স্ট্রাইক-রেটে অনেক অনেক এগিয়ে গীতা দত্ত।