You cannot copy content of this page. This is the right with takmaa only

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া এবং হলে রোগীকে কীভাবে বাঁচাতে হবে তা নিয়ে সচেতনতা তৈরি করছে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, কলকাতা

অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, কলকাতা, ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২২ : নাগরিকদের মানুষের জীবন বাঁচানোর যোগ্য করে তুলতে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, কলকাতা আজ সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করল। সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এমন এক অসুখ যাতে হৃদপিণ্ডের ইলেকট্রিক সার্কিটগুলো গোলমাল করে এবং হৃদস্পন্দন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া মানুষ আচমকা অজ্ঞান হয়ে যান। এ জিনিস যে কোনো মানুষেরই হতে পারে, এমনকি অ্যাথলিটদের মত সুস্থ সবল মানুষেরও।

হৃদপিণ্ডের ধমনীতে ব্লকেজ থাকার জন্য যে হার্ট অ্যাটাক হয় তাতে রোগীর বুকে ব্যথা হয়, শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি হয়, গা গুলোয় এবং প্রচণ্ড ঘাম হয়। এমনকি তিনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধও করতে পারেন এবং নিয়ে যাওয়ার সময়ও থাকে। কিন্তু সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এটা একেবারেই আচমকা ঘটে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীর মধ্যে কোনো রোগের লক্ষণই দেখা যায় না। সুতরাং রোগীর চারপাশে থাকা লোকেরা একমাত্র তাঁকে সচেতন করেই তাঁর জীবন বাঁচাতে পারেন।

কারোর শ্বাস প্রশ্বাস বা হার্টবিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত এমার্জেন্সি দেখা দিলে যে জীবনদায়ী কৌশল কাজে আসে তা হল কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন (CPR)। একজন রোগীকে CPR দিতে যাচ্ছেন এমন প্রশিক্ষণবিহীন ব্যক্তির প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শ হল, প্যারামেডিকরা পৌঁছনো পর্যন্ত মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ বার পর্যন্ত জোরে জোরে এবং দ্রুত বুকে চাপ দিন। যদি একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি রোগীর পালস না পান এবং নিশ্বাস পড়ছে না বোঝেন, তাহলে অবশ্যই ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ৩০ বার বুকে চাপ দিয়ে CPR করতে হবে। তারপর দুটো রেসকিউ ব্রেথ দিতে হবে। এই ব্যবস্থা প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের CPR দরকার হলে প্রযোজ্য কিন্তু নবজাতকদের (৪ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত) বেলায় প্রযোজ্য নয়।

এই উপলক্ষে ডাঃ আফতাব খান, কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট অ্যান্ড ইলেকট্রো ফিজিওলজিস্ট, অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, কলকাতা, বলেন “হার্ট যখন হঠাৎ থেমে যায় তখন মস্তিষ্ক, যা শরীরটাকে চালানোর জন্যে সবচেয়ে জরুরি অঙ্গ, সেটা আর রক্ত পায় না। আর মস্তিষ্ক যদি ৩ মিনিটও রক্ত না পায় তাহলেই স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, যাকে আমরা কোমা নামে চিনি। আর ১০ মিনিটের মধ্যে রোগী মারা যেতে পারে। যেহেতু ডাক্তার ডাকা বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মত সময়ও থাকে না, সেহেতু রোগীর পাশে যাঁরা থাকেন তাঁদেরই রোগীকে বাঁচানো জরুরি।”

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ সম্পর্কে ডাঃ সুরিন্দর সিং ভাটিয়া, ডিএমএস, অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, কলকাতা, বললেন “ভারতে ১ মিলিয়ন মানুষ সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হন এবং প্রতি ঘন্টায় এই শহরের প্রায় দুজন আক্রান্ত হন। আমাদের লক্ষ্য মানুষকে শেখানো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত ওইসব রোগীদের চিকিৎসা কেমন করে করতে হবে।”

CPR মস্তিষ্কে এবং অন্যান্য অঙ্গে অক্সিজেনপূর্ণ রক্তের প্রবাহ চালু রাখতে পারে, যতক্ষণ না এমার্জেন্সি মেডিকাল চিকিৎসা হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনতে পারে। CPR দেওয়ার জন্য মনে রাখতে হবে, সঠিক ধাপগুলো হল CAB। C- কম্প্রেশনস, A- ওপেনিং এয়ারওয়ে আর B- রেসকিউ ব্রিদিং।

CPR প্রক্রিয়া:

রোগীকে চিত করে কোনো শক্ত জায়গায় শোয়ানো দরকার। তারপর দুহাত দিয়ে একটা নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে রোগীর বুকে জোরে জোরে এবং দ্রুত চাপ দিতে হবে। কম্প্রেশনই CPR-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এক হাতের নিচের তালু (হিল) রোগীর বুকে, দুই বৃন্তের মাঝে রাখতে হবে এবং অন্য হাতটা ওই হাতের উপরে চাপাতে হবে। কনুই সোজা রেখে এবং কাঁধদুটোকে হাতের উপর নিয়ে এসে বুকের উপর সরাসরি চাপ দিয়ে (কম্প্রেস) অন্তত দু ইঞ্চি (৫ সেন্টিমিটার) নামিয়ে দিতে হবে কিন্তু কখনোই ২.৪ ইঞ্চি (৬ সেন্টিমিটার)-র বেশি নয়। কম্প্রেশনে সারা শরীরের ওজন (শুধু দুই হাত নয়), ব্যবহার করা খুব জরুরি।

একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি CPR করলে ৩০টা কম্প্রেশনের পর রেসকিউ ব্রিদিংও করতে পারেন। এক হাতের তালু রোগীর কপালে রেখে তাঁর মাথাটাকে ধীরে ধীরে পিছনের দিকে হেলিয়ে দেওয়া উচিত এবং অন্য হাত দিয়ে থুতনিটাকে ধীরে ধীরে উপরের দিকে তোলা উচিত যাতে এয়ারওয়ে খুলে যায়। এয়ারওয়ে খোলার পর নাক বন্ধ করে দেওয়া উচিত মাউথ-টু-মাউথ ব্রিদিংয়ের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *