২০২১ সালের নির্বাচনে সোনারপুর উত্তর কি হবে? তৃণমূলের হাতে কি থাকবে? সমীক্ষা কি বলছে দেখুন
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২০ : সোনারপুর উত্তর দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তৃণমূলের দখলেই আছে, মানে যেদিন থেকে রাজ্যে পরিবর্তন হয়েছে সেদিন থেকেই সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ঘরের মেয়ে ফিরদৌসী বেগম। অনেকে হয়তো বলবেন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে তোষামোদি করছে সরকার তাই এই কেন্দ্রে প্রার্থী পরিবর্তন হয় নি। কিন্তু সোনারপুরের মানুষ বলবে অন্য কথা। তাঁরা বলে ফিরদৌসী বেগম নামটার সাথে যদিও সংখ্যালঘুর গন্ধ আছে কিন্তু তাঁর কাজের সাথে কিন্তু সেই গন্ধ কিন্তু নেই। বরং ঠিক উল্টোটাই দেখা গেছে। সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় সংখ্যালঘু এলাকা ঠিক কতটা যদি দেখা হয় তবে দেখা যাবে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ২৭ নং ওয়ার্ডের একটা অংশ, ২৮ নং ওয়ার্ডের একটা অংশ, ৭ নং ওয়ার্ডের একটা বড় অংশ মানে নরেন্দ্রপুর টাউনের একটা বড় অংশ আছে। এছাড়া যদি গড়িয়া টাউন ধরা হয় তবে ৬ নং ওয়ার্ডের সামান্য একটা অংশ ছাড়া বাকি ওয়ার্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও তেমনভাবে নেই।এবার যদি বোড়াল টাউন দেখা হয় সেখানেও দুই থেকে তিনটে ওয়ার্ড বাদ দিলে সবটাই সংখ্যাগরিষ্ট অধ্যুষিত। এবার যদি পঞ্চায়েত ধরা হয় খেয়াদহে দুটো অঞ্চল এবং কামরাবাদ অঞ্চলে তেমন একটা বড় সংখ্যায় নেই আবার বনহুগলির দুটো অঞ্চলে আছে। তবে ফিরদৌসী বেগমকে অধিকাংশ কাজটাই করতে হয় সংখ্যাগরিষ্টদের জন্য।তবে সংখ্যালঘু তোষামোদি তকমাটা টিকলো না। দেখা যাচ্ছে হিন্দু এলাকা বেশি থাকার ফলে তাঁদের জন্যই কাজ করেন তিনি। নিন্দুক বা বিরোধীদের এই অথ্য ভুল হয়ে গেল।
এবার যদি সামাজিক অনুষ্ঠান দেখা হয়, ফিরদৌসী বেগমকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সংখ্যালঘুদের অনুষ্ঠানের থেকে বাকিদের অনুষ্ঠানে সারা বছর আসতে তা সে হিন্দুদের হোক আর আদিবাসীদের হোক। গণেশ পুজো থেকে শুরু করে বিশ্বকর্মা পুজো, দুর্গা পুজো, কালী পুজো এমনকি হনুমানজির পুজোতেও তাঁকে দেখতে পাওয়া যায়।এমনকি পিঠে পুলি থেকে রান্না পুজো সবেতেই তাঁর অংশগ্রহণ মানুষ উপলব্ধি করে।কোথাও কোন ক্রীড়া অনুষ্ঠান হোক বা কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হোক তাঁকে দেখা যায়।
এবার যদি আসি উন্নয়নের নিরিখে সেখানেও দেখা যায় নিজের এলাকা সৌন্দর্যায়ন করা থেকে রাস্তা, আলো (হাই মাস্ট, লো মাস্ট), হকার পূনর্বাসন দিয়ে রাস্তা সম্প্রসারণ, নিকাশির জন্য হাইড্রেন, নিজে দায়িত্ব নিয়ে পৌরসভার তত্ত্বাবধানে থেকে বিভিন্ন প্রকল্প দেখভাল করেন। প্রতিটা ওয়ার্ডে পানীয় জল পৌঁছানো থেকে মানুষের জন্য সরকারি সাহায্যে বাড়ি নির্মান ও আমফানে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা থেকে পঞ্চায়েত এলাকায় কোথায় কোন উন্নয়ন প্রয়োজন দক্ষতার সাথে দেখভাল করেন। উন্নয়ন বিধায়ককে বলে দিতে হয় না, তিনি নিজে প্রয়োজনমত উন্নয়নের জায়গা খুঁজে নেন।পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যে বহু কাঁচা রাস্তা পিচের হয়ে গেছে। বাকি তো থাকবেই, পরবর্তীতে হবে।
এবার দীর্ঘদিন বিধায়ক পদে থাকার ফলে কখনও কারো মনে হতেই পারে যে যদি একবার এই পদে আসা যায় তবে সাধটা পূরণ হত। কিন্তু রায় তো দেবে মানুষ। মানুষ কি দেখছে সেটা একবার দেখে নেওয়া যাক।বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সাহায্যের জন্য সহযোগিতা, কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, রূপশ্রী সাহায্যের ব্যাপারে সহযোগিতা, বিভিন্ন পরিচায়পত্র নেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা বিধায়কের অফিসে সময়মত পৌঁছালে পাওয়া সম্ভব। কাউকে ফিরে আসতে হয় না। এছাড়া বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যা বা ব্যক্তিগত সমস্যার ক্ষেত্রেও সমাধান সূত্র মারফৎ সাধ্যমত সহযোগিতা করেন।
সব থেকে বড় উদাহরণ সাম্প্রতিক করোনা মোকাবিলা যেভাবে বিধায়ক নিজে রাস্তায় নেমে মানুষের জন্য করেছেন তা মানুষ দেখেছে। কখনও খাদ্য সামগ্রী, কখনও ১৫ দিন ধরে রান্না করা খাবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া , কখনও করোনা আক্রান্ত এলাকায় স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করে দেওয়া, আবার আমফানে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় গাছ বিলি করা। সব থেকে বড় পাওনা বিধায়ককে সময় ও অসময়ে রাস্তায় পাওয়া যায় মানুষের পাশে। সাবলীলভাবে মুখে সবসময় একটা সতঃস্ফুর্ত ও প্রাণবন্ত হাসি দেখা যায় বিধায়কের মধ্যে। সবসময় ব্যস্ত থাকেন মানুষের সমস্যা সমাধানে। এলাকা ও এলাকার বাইরের কোন ব্যক্তি যদি বিধায়কের ফোনে কখনও ফোন করেন সাধ্য অনুযায়ী কোন বিশেষ কারণে ব্যস্ত না থাকলে তিনি তাঁর উত্তর করেন।
বিধানসভায় বিজেপি যে বিজেপি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে নি তা বলা যাবে না। বিজেপি আছে কিন্তু বিধায়কের বিরোধিতা কোন বিরোধী দলের করার ক্ষমতা নেই। বর্তমানে যারা বিজেপিতে আছে তাঁরা একসময় তৃণমূলে বা সিপিএমে ছিল।কামানোর মজবুত রাস্তার সন্ধানে আশাহত হয়ে রাজ্যে নতুন দল বিজেপি এসেছে বলে গুরুত্ব ও রোজগারের লোভে ঝাপ মেড়েছে। এই বিধানসভায় বিরোধী ভোট সব চুরমার হয়ে গেছে।
এবার আসি সোনারপুর উত্তর বিধানসভার সমীক্ষার ফল কি বলছে, দেখে নি একবার
১) বিধায়ক কে প্রয়োজনে পাওয়া যায়? ৮৫% বলছেন হ্যাঁ।
২) বিধানসভায় আশানুরূপ উন্নয়ন হয়েছে ? ৯০% বলছেন হ্যাঁ।
৩) উন্নয়ন কি এখনও হতে বাকি আছে ? ৩০ % বলছেন হ্যাঁ।
৪) এখনও কি বিধানসভায় পিছিয়ে থাকা এলাকা রয়ে গেছে ? ৩৫% বলছেন হ্যাঁ।
৫) বিধায়কের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেন নাকি মারফৎ হয়ে বলতে হয়? ৯৫% বলছেন হ্যাঁ।
৬) ১০ বছর একই বিধায়ক কে পেয়ে কি খুশি ? ৯৭% বলছেন হ্যাঁ।
৭) বিধায়ক কি সাংস্কৃতিক, সৃজনশীল ও সহবেদনশীল ? ৮০% বলছেন হ্যাঁ।
৮) ২০২১ সালে সেই একই মুখ দেখলে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী ? ৮৫% বলছেন জিতবেন।