ওয়ার্ডের সব কোন্দলকে উড়িয়ে ৩ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা অশোকার উদ্যোগে সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় ফিরদৌসীর সমর্থনে সভা হল, পাল্টা সভা অন্য গোষ্ঠীর
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ২৬শে নভেম্বর ২০২০ : ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা প্রায় বেজেই গেছে। সব দলই তাঁদের নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সোনারপুর উত্তর বিধানসভা নিয়ে বেশ উত্তেজনা শুরু করেছিল তৃণমূল দলের একাংশ। তখন অনেকেই দিশাহারা হয়ে পড়েছিল যে কি হতে চলেছে সোনারপুর উত্তর বিধানসভায়। সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় গত ১১বছর বর্তমান বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম উন্নয়ন নিয়ে মানুষকে তৃপ্ত করেছেন। করোনা সময় বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম যেভাবে মানুষের পাশে থেকেছেন তাতে মানুষ বেশ সন্তুষ্ট।
কিন্তু তৃণমূল দলের একাংশ দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার জন্য এক এক সময় হাওয়ায় ঘুরছে এক এক জনের নাম যাতে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যায়।অনেকে এমন রটনা করে দেন যে এবার সোনারপুর উত্তর বিধানসভা তপশীল জাতি সংরক্ষিত, তাই এবার আর ফিরদৌসী বেগম আর প্রার্থী হবেন না। কিন্তু যেখানে কোন সরকারি নির্দেশিকা জারি হয় নি সেখানে সোনারপুরের কিছু নেতৃত্ব জানলো কোথা থেকে? কোনটাই যে বাস্তবে ঠিক নয়, তা গতকাল রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে গত ২বারের বিধায়ক ফিরদৌসী বেগমকে তৃতীয়বারের জন্য ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে জয়ী করার সমর্থনে সভা করলেন এই ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধা।উন্নয়ন দেখে মানুষ এখনও সেই ঘরের মেয়ে ফিরদৌসী বেগমকে চান সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় এটা স্পষ্ট।
দীর্ঘ ১০ বছরের তৃণমূল পৌরমাতা অশোকা মৃধা এলাকার উন্নয়ন করে চলেছেন বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম ও বর্তমানের প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য নজরুল আলি মন্ডলের সহজগিতায়।কিন্তু এই ওয়ার্ডে সমস্যা অন্য জায়গায়, সমস্যার মূল একসময়ের গড়িয়া টাউন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জয়ন্ত সেনগুপ্ত। সাংগঠনিক দক্ষতা না থাকার ফলে বর্তমানে জয়ন্ত সেনগুপ্ত গড়িয়া যুব তৃণমূল কংগ্রেসের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আসীন।যদিও এই পদ তাঁর খুব পছন্দের না হওয়ায় জয়ন্ত ৩নং ওয়ার্ডে মানুষকে ভুল বার্তা দিয়ে বিভ্রান্তিতে ফেলছে এবং বিজেপির হাত শক্ত করে তুলছে। এই ওয়ার্ডে জয়ন্ত ও তাঁর গুটিকয়েক অনুগামী যেমন অন্যতম শ্যামল সরদার মানুষকে বোঝাচ্ছে এবার জয়ন্ত পৌর নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন এবং শ্যামল ওয়ার্ড সম্পাদক। তাঁর প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারটা নাকি বিধায়ক ও বিধানসভার নেতৃত্ব আশ্বস্ত করেছে।কিন্তু কিভাবে আশ্বস্ত করল তাঁর নেতৃত্ব? দল তো এখনও প্রার্থী নিয়ে কোন নির্দেশিকা প্রকাশ করে নি বা এই নিয়ে কোন আলোচনাও করে নি।এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে হাসাহাসি।
সব বিতর্ককে উড়িয়ে দিয়ে অশোকা মৃধা বিধায়ক ও নজরুল আলি মন্ডলের নির্দেশ অনুযায়ী ওয়ার্ডের সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সভা করে বুঝিয়ে দিলেন দলের বিধায়ক হিসাবে ফিরদৌসী বেগমকে তৃতীয়বার জয়ী করতে তাঁরা প্রস্তুত। এই আমন্ত্রণে জয়ন্ত সেনগুপ্ত উপস্থিত হন নি বরং এই সভার পাল্টা একই সময় জয়ন্ত সভা করেন কয়েকজনকে নিয়ে বলে জানান অশোকা মৃধা। এই সভায় কিন্তু অশোকাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় নি।ওয়ার্ডে এই দুই গোষ্ঠীর রেষারেষিকে ভাল চোখে নিচ্ছে না মানুষ।এব্যাপারে আশোকা মৃধা বলেন, বর্তমানে পৌরসভা নির্বাচনের কোন সম্ভাবনা নেই তাই সেই নির্বাচন নিয়ে মাথা ব্যাথাও নেই। এই মুহুর্তে বিধানসভায় তৃণমূল দলকে সরকারে তৃতীয়বারের জন্য দায়িত্ব তুলে দিতে হবে। এখন কে পৌরমাতা হবে আর কে পৌরপিতা হবে এটা ভাবার সময় নয়। আর এটা আমি ভেবে কি করবো? এটা তো দল ভাববে আর সোনারপুরের মূল নেতৃত্ব ভাববে।দল যেভাবে বলবে সেভাবে কাজ করবো। না পারলে বসে থাকবো কিন্তু বিতর্ক বা বিভ্রান্তির মাধ্যমে দলের ক্ষতি করবো না। বাজারের অনেক কথাই কানে আসছে কিন্তু আমি বুঝি শুধুমাত্র বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম ও নজরুল আলি মণ্ডলকে।এই বিষয়ে আমার কাছে কোন কর্মী বা সদস্যের বক্তব্যের কোন গুরুত্ব নেই। যে কেউ মন্তব্য করতেই পারে কিন্তু বুঝতে হবে যে বলছে তাঁর গুরুত্ব কতটা এবং তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কতটা। জয়ন্ত সেনগুপ্ত সম্পর্কে সোনারপুরের অনেকেরই মতামত যদি তিনি প্রার্থী হন তবে বিজেপিকে সরাসরি ওয়াকওভার দেবে তৃণমূল। আবার অনেকে মনে করছেন দুজনের এই টানাপড়েনে যদি নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ না করে তাহলেও বিজেপি সুবিধা পাবে। এখন নেতৃত্ব জানে কিভাবে এই পরিস্থিতিকে সামাল দেবে।এই নিয়ে বহুবার উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন অশোকা মৃধা।অশোকা মৃধার বক্তব্য অনুযায়ী পৌরসভার বাস্তুকার শুভাশিস বসু তাঁকে আড়াল করে উন্নয়নের কাজ করছেন। তিনি জানতেও পারছেন না কোথায় কোন কাজ হচ্ছে।