রাজনীতি

রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে “বঙ্গধ্বনি যাত্রা” মঞ্চে নজরুল ও পার্থ-র গলায় একই সুর ওয়ার্ডের সুবিধাবাদী কর্মীদের সজাগ করে দিল, দলে বিভাজন নয়

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ২০শে ডিসেম্বর ২০২০ : মমতা ব্যানার্জির মস্তিষ্কপ্রসূত “বঙ্গধ্বনি যাত্রা” দলের মধ্যে বহুক্ষেত্রে একতা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। দলের অনেকে নিজেদের সুবিধার জন্য নেতৃত্বকে ভুল বুঝিয়ে, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। আর এরকমই একটা অবস্থা রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধা বিরুদ্ধে ওয়ার্ডের তৃনমূল যুব কংগ্রেসের একাংশ আওয়াজ তুলে দিয়েছে আগামী ২০২০ সালের পৌরসভা নির্বাচনে তৃনমূলের টিকিটে প্রার্থী হচ্ছেন একসময়ের গড়িয়া টাউন তৃনমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি জয়ন্ত সেনগুপ্ত, এমনকি জয়ন্ত সেনগুপ্ত নিজেও বহু জায়গায় জানিয়েছেন এবার বিদায়ী পৌরমাতার দিন শেষ হয়ে গেছে। আগামীদিনে তিনিই দলের নিশ্চিত প্রার্থী। ওয়ার্ডের অনেকেই এই কথা শুনে বিভ্রান্তিতে পড়ে যান যেখানে দল কোথাও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে নি সেখানে জয়ন্ত সেনগুপ্ত এতটা নিশ্চিত হলেন কি করে? আমাদের প্রশ্ন সেখানেই যে দলনেত্রীর উপরে কি একজন কর্মী? কে তাকে নিশ্চিত করল? যে নিজের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের টাউন সভাপতির পদ আগলাতে পারেন না, সাংগঠনিক দক্ষতা না থাকার কারণে হারাতে হয় সেখানে প্রার্থী হবেন কিভাবে? আর এটা প্রতিষ্ঠিত করতে কখনও প্রকাশ্যে না এসে আবার কখনও সরাসরি পৌরমাতার সাথে বিতর্কে জড়িয়ে গিয়ে ওয়ার্ডের বহু উন্নয়নে বাধাও দিয়েছে ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃনমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল সরদার বলে ওয়ার্ডের অনেকের অভিযোগ।এব্যাপারে বিভ্রান্তিতে ছিলেন অশোকা মৃধা, কিন্তু বিভিন্ন সভায় নজরুল আলি মন্ডল ও এর আগে বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম থেকে সেই বিভ্রান্তিকে দূর করে দিয়েছেন, বেড়েছে মনোবল।

কিন্তু এই ওয়ার্ডে সাম্প্রতিক “বঙ্গধ্বনি যাত্রা” কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সোনারপুর উত্তর বিধানসভার দ্বিতীয় প্রচার দল। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার প্রশাসক সদস্য নজরুল আলি মন্ডল, নরেন্দ্রপুর টাউন তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি গোপাল দাস, রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরপিতা রঞ্জিত মন্ডল, মইনুদ্দিন মন্ডল ছাড়াও ওয়ার্ডের সেই বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধা। এই অনুষ্ঠানে নজরুল আলি মন্ডল বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধাকে সাথে নিয়ে ওয়ার্ডবাসীদের হাতে সরকারের ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড তুলে দিয়ে বলেন ওয়ার্ডে এই সরকার যেভাবে উন্নয়নের কাজ করেছে তা মানুষ বিগত ৩৪ বছরে এক ভাগও উপলব্ধি করতে পারে নি। ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় এই প্রতিনিধিদল উপস্থিত হয়ে মানুষকে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য রাখেন নজরুল আলি মন্ডল, পার্থ হালদার, গোপাল দাস ও অশোকা মৃধা।

এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা তৃনমূল যুব কংগ্রেসের সহ সভাপতি অনিরুদ্ধ হালদার (পার্থ) আমাদের জানান, মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন মানুষ মনে রাখবে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত গোটা বিশ্বের মধ্যে একজন মানুষ নজির সৃষ্টি করেছেন যার নাম মমতা ব্যানার্জি।আজ আমি ও নজরুল আলি মন্ডল একই মঞ্চে কর্মসূচিতে যোগদান করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। নজরুলদা আমার সাথে জেলায় যুব তৃনমূলের একজন সহযোদ্ধা। কর্মীদের কাছে আমার একটাই বার্তা যে আমরা কখনই আলাদা ছিলাম না এবং আগামীদিনেও হব না, কারণ আমরা দুজনেই একই দলের সৈনিক। কেউ কেউ হয়তো নিজেদের স্বার্থের কারণে আমাদের মধ্যে একটা ভার্চুয়াল বিভাজন তৈরি করেছে কিন্তু বাস্তব চিত্রটা তা নয়। আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ ছিল না, আজও নেই। আমাদের দুজনের একজনই নেত্রী যার নাম মমতা ব্যানার্জি।

নজরুল আলি মন্ডল ও পার্থ হালদারকে একই মঞ্চে পেয়ে ওয়ার্ডে তৃনমূলের একটা বড় অংশ নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল। তারা আরারও অশোকা মৃধার পক্ষেই লড়তে প্রস্তুত। এই সভা ওয়ার্ডের সেই সুবিধাবাদী তৃনমূল কর্মীদের একটা জোরালো বার্তা দিল, বিভাজন নয়, তৃনমূল দল এক ও অদ্বিতীয় যার নেত্রীর নাম মমতা ব্যানার্জি। সকলের রাজনীতির দিশা একজনই, তিনি আর কেউ নন, একমাত্র মমতা ব্যানার্জি। দলের নির্দেশ মেনেই সকলকে চলতে হবে। কেউ নিজের ইচ্ছায় চলতে পারবে না, প্রচারও করতে পারবে না। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই চলতে হবে। দল মানে সুবিধাবাদী নয়, দল মানে একতা, দল মানে শক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *