মানুষের দুর্যোগের সময় রাজপুর সোনারপুরের ৩ নং ওয়ার্ডে কাউকে না দেখা গেলেও মানুষ পাশে পায় বিদায়ী পৌরমাতা অশোকা মৃধাকে
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ২৮শে মে ২০২১ : একদিকে লকডাউন আবার অন্যদিকে ইয়াসের থাবা নিয়ে নাজেহাল রাজ্য সরকার। কোনদিক সামলাবে তা ঠিক করে উঠতে পারছে না। এরমধ্যেও সারারাত মানুষের নিরাপত্তার জন্য জেগে আগলে রাখতে প্রস্তুত ছিলেন রাজ্যের মখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এর আগে এরকম একজন মুখ্যমন্ত্রী এই রাজ্যের মানুষ উপলব্ধি করে নি। এবার অনেকে যারা মমতা ব্যানার্জিকে পছন্দ করেন না তারাও প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছে। তাদেরও বলতে হয়েছে এবার যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে দেখলাম তাতে প্রশংসা না করে থাকতে পারলাম না। সত্যিই একা যেভাবে এই দুর্যোগ রুখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তা অভাবনীয়।
ঠিক একইভাবে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরমাতা ও বর্তমানে ওয়ার্ড সমন্বয়ক অশোকা মৃধা ইয়াস ঝড়ের তান্ডবের পর ওয়ার্ডের আনাচে কানাচে পরিদর্শন করে দেখলেন। ওয়ার্ডের বহু অসহায় পরিবারের টালির বাড়ি ভেঙে গেছে, অ্যাসবেসটরের চাল উড়ে গেছে। এক এক করে সেই সব বাড়ি পরিদর্শন করে তাদের ক্ষতির ব্যাপারে আস্বস্ত করেছেন।আর এই এক্ইটা কারণেই মানুষ গত লোকসভা নির্বাচনের মাত্র ১ ভোটে জয়ের পরিবর্তে এবারের বিধানসভায় অশোকা মৃধার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ৬৮ ভোটে জয়ী করেছে তৃণমূলকে। দুর্যোগের সময় এই ওয়ার্ডের কিছু ফেসবুক নেতা ও চাটুকারি নেতাদের মানুষ আর দেখতে পেল না, যাদের মানুষ এখন বলে শুধুমাত্র ফেসবুক টাইগার।এদের শুধুমাত্র ফেসবুকে দেখা যায় নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত থাকতে। অনেকে আবার নিজের টাকায় ব্যানার ছাপিয়ে পোস্টে পোস্টে টাঙানো নেতাদেরও মানুষ চোখে দেখলো না।তারা আবার প্রচার করে “ওয়ার্ডের মানুষ নিজের ওয়ার্ডের ছেলেকে চায়”। সবাই যদি মমতা ব্যানার্জি হত তবে আর মমতা ব্যানার্জি নামটার মাহাত্ম থাকতো না। মমতা ব্যানার্জি বহু পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে নিজেকে প্রমান করে দিয়েছেন যে “বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়” আর তাই দেখে যদি সবাই “নিজের ছেলে” সাজতে চায় সেটা হাস্যস্কর হয়ে যায়। যারা এই প্রচার করছে তাদের বেলা ১২টার পর আর টিকি দেখা যায় না আবার সন্ধ্যা ৬টার পর দেখাই যায় না। তাদের কাছে মানুষ কি পরিষেবার আশা করে ভোট দেবে এটাও বেশ চিন্তার। এদের শুধুমাত্র ফেসবুকেই দেখা যায় আর দেখা যায় গড়িয়ায় বিধায়ক যদি কোথাও কোন অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন সেই মঞ্চে। মঞ্চে কেন? সেখানে বিধায়কের পাশে থেকে নিজের কিছু পেটোয়া কর্মীদের দিয়ে দু-একটা ছবি তুলে সাথে সাথে ফেসবুকে ছেড়ে টিআরপি বাড়াতে হবে যে।
ওয়ার্ডের মানুষ এইসব দেখে সামনে না হাসলেও পিছনে হাসছে আর সমালোচনা করছে।যুব সংগঠন করলেও তাদের কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন জানায় না কিন্তু তারা নিজেদের প্রচার করে টাউনের যুব নেতৃত্ব। গড়িয়ার আসল যুব নেতৃত্বেরা এই প্রচারে বেশ লজ্জায় পড়ে যাচ্ছে।কথায় আছে না, “গায়ে মানে না, আপনে মোড়ল” সেইরকম ব্যাপার।রাজপুর সোনারপুর ওয়ার্ডের মানুষ জানে বিপদে পড়লে কাকে পাশে পাওয়া যায়, ভোটের সময় সেখানেই ভোট পড়বে এটা মানুষ ইতিমধ্যে বলতে শুরু করে দিয়েছে, বিধানসভায় তা প্রমাণও করে দিয়েছে। তাই বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম মানুষের পাশে ছিল বলেই তৃতীয়বারের জন্য বিজেপি-র এত প্রচারের পরেও মানুষের বিপূল ভোটে জয়ী হয়েছেন।ধমকালে আর চমকালে টাকা পাওয়া যায়, নেতা হওয়া যায় না।