“লিহাফ” ছবিটা ফের একবার ১৯৯৬ সালের সমকামী নিয়ে “ফায়ার” ছবির কথা মনে করিয়ে দিল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৩ই নভেম্বর ২০১৯ : ২৫ তম আন্তর্জাতিক ফিলম উৎসবে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবির মধ্যে রাহাত কাজমি পরিচালিত “দ্য কুইল্ট লিহাফ” ছবিটি একটা বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। ২০১৮ সালে কাশ্মীরে শুটিং হয় এই ছবিটি যার প্রযোজক তারিখ খান। পরিচালক ও প্রযোজক দুজনেই কাশ্মীরের বলে জানানো হয়। এর আগে নির্দেশক “দেখ রে দেখ” (২০০৯), “ইম্পেশেন্ট বিবেক” (২০১০) ও “আইডেন্টিটি কার্ড” (২০১৪) করেছেন। আবার তিনি “ওয়ার্ল্ড অফ ব্লাইন্ড” ছবির কাজ করছেন যা স্লামডগ মিলিনিয়ারের থেকেও আরও মারাত্মক হবে বলে জানান নির্দেশক রাহাত কাজমি। তবে এবারে চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর পরিচালিত ছবি “দ্য কুইল্ট লিহাফ” কেন বিশেষ মাত্রা পেয়েছে বলতে গেলে ১৯৯৬ সালের সাবানা আজমি ও নন্দিতা সেন অভিনীত “ফায়ার” ছবির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সেই ছবিতেও একজন মহিলার সাথে একজন যবতীর প্রেম নিয়ে গল্প দেখানো হয়েছে।
এর মানে কিন্তু এটা নয় যে তাঁরা দুজনে সমকামী ছিলেন। ফায়ার ছবিতে দুজন মহিলা দুজনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ার ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ১৯৩৮ সালে আলিগড়ের এক মুসলিম পরিবারে দুই মহিলার মধ্যে আকর্ষনের ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছে।একজন মুসলিম বিবাহিত মহিলা কিভাবে তাঁর অঙ্গমর্দিকা এক যুবতীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তা দেখানো হয়েছে। এতে কোন যে অন্যায় নেই তা বলা হয়েছে কারণ একই লিঙ্গের মধ্যে এমন একটা সম্পর্ক ঘটতেই পারে গল্পের লেখিকা ইসমাত ছুগতাই নিজে সেই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন, এবং তিনি ১৯৪২ সালে এই ঘটনা নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন “লিহাফ”। এরপর থেকে যা যা ঘটেছে লেখিকার জীবনে সবটাই দেখানো হয়েছে ছবিতে।
এমনও ঘটে লেখিকার বিরুদ্ধে মামলা হয় কিন্তু সেই মামলায় লেখিকা জয়ী হয়। সেই সময় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সমকামী প্রেম বা বিবাহকে সামাজিক মর্যাদা দেয় নি যা আজ দেওয়া হয়েছে। ছবিতে অভিনয় করেছেন নামিতা লাল (রাব্বো), ইসমাত ছুগতাই, রাহাত কাজমি, সনাই সেহগাল, লক্ষ্মী চাঁদ চৌহান, গোলদা সেল্লাম, সন্দীপ এস বাজেলি, নরেশ কামাথ, রাকেশ ডোগড়া, তন্নিষ্ঠা চ্যাটার্জি (যেনি ইসমাত ছুগতাই-এর ভুমিকায় ছিলেন), সোনাই সেহগাল (বেগম), অনুষ্কা সেন (ছোটবেলায় ইসমাত ছুগতাই ), বীরেন্দ্র সাক্সেনা (এম আসলাম)।ছবিতে মুখ্য বিষয় হল লেখিকা কোনভাবেই আপোষ করেন নি। তিনি একটাই কথা বলেছেন এটা হল আমার বাক স্বাধীনতা।ছবিতে দেখানো হয়েছে নিজের ইচ্ছা, কাকে পছন্দ হতে পারে সেক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ প্রধান বিষয় নয়, প্রধান বিষয় হল পছন্দের। যখন কেউ তাঁর নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী ভালোবাসা পায় না, সে তখন সেই ভালোবাসা পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে তা সে যেভাবেই হোক। সে তখন পরোয়া করে না কার সাথে সেই আকাঙ্খিত ভালোবাসা পাচ্ছে। এটাই তখন তাঁর কাছে প্রধান, সেটাই দেখানো হয়েছে এই ৮৪ মিনিটের ছবিতে।