প্রথম পাতা

সারা ভারতে করোনা মোকাবিলা করতে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত লকআউট, কাল থেকে সবজি বাজার খোলা থাকবে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৪শে মার্চ ২০২০ : আজকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছেন করোনা মোকাবিলা করতে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত গোটা রাজ্য লকআউট থাকবে। কিন্তু তারপর রাতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সতর্ক ভাষণে সারা দেশের জন্য জানান, আগামী ২১দিন সারা দেশে করোনা মোকাবিলা করতে লকআউট থাকবে।তিনি দেশবাসীর জন্য বলেন, রোদে কেউ বেরবেন না। বাড়ির বাইরে পা রাখবেন না। এছাড়া দেশ বাঁচানোর অন্য কোন রাস্তা নেই। এখনও করোনার মোকাবিলার জন্য সেভাবে কোন ওষুধ বাজারে আনা যায় নি, বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানীরা। জনতা কার্ফু এই মহামারির মোকামিলার জন্য যথেষ্ট নয়। আজ রাত ১২টা থেকে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না।এরফলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। কিন্তু দেশ বাঁচাতে এছাড়া কোন উপায় নেই।আপনারা একবার চিন্তা করুন সারা দেশের ডাক্তার, পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী কিভাবে মানুষকে সুস্থ্য রাখতে দিবারাত্রি লড়াই চালাচ্ছে।তিনি এমনও বলেন, দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ করা হয়েছে যা দিয়ে করোনা প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যয় করা হবে। সব রাজ্য সরকারকে প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন এই সময় শুধু স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে নজর দিতে।

ভারত এখন করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে তবে তৃতীয় পর্যায়ে যাওয়ার থেকে খুব একটা দূরে নেই। এই তৃতীয় পর্ব খুবই মারাত্মক হয়ে উঠবে।করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা ১ লাখ পৌঁছাতে মাত্র ৭৬ দিন নিয়েছিল, এরপর ২ লাখ পৌঁছাতে সময় নিয়েছে মাত্র ১১ দিন। কিন্তু করোনা এতটাই তার থাবা বাড়তে থাকে যে ৩ লাখ আক্রান্ত পৌঁছাতে সময় নিয়েছে মাত্র ৪ দিন। এখানেই বোঝা যাচ্ছে করোনার প্রভাব কিভাবে বাড়ছে। আমাদের দেশে এই পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০, আক্রান্ত ৫১৯।

এদিকে রাজ্য সরকারও প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে করোনা প্রতিরোধের জন্য ব্যয় করতে। এই দিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে এন ৯৫ মাস্ক, স্যানিটাইজার, আইসলেশন, বেড ও ভেন্টিলেশোনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিপিএল ভুক্ত মানুষদের জন্য ১০০০ টাকা মাসিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ৫লাখ টাকা করে ১০ লাখ বীমা করে দেবে রাজ্য সরকার রাজ্যের সাফাই কর্মী, আশা কর্মী, চিকিৎসক, পুলিশদের জন্য।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে রাজ্যের মানুষকে সুস্থ্য রাখা যায়।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমনও ঘোষণা করেন আগামী ছয় মাস চাল, গম ও ডাল বিনা পয়সায় দেওয়া হবে রাজ্যবাসীকে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে আগামীকাল থেকে রোজ সবজি বাজার খোলা থাকবে সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত। যার যা কেনাকাটি করার আছে তা তাদের এই সময়ের মধ্যে কিনে ফেলতে হবে।এরপর কোন বাজার খোলা থাকলে পুলিশ প্রশাসন তা বলপূর্বক বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। আজ প্রতিটা থানা থেকে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বার্তায় বারবার বলছেন, কারণ ছাড়া আতঙ্কিত হবেন না, আতঙ্ক ছড়াবেন না।রাজ্যের বাইরে থেকে এলাকায় যদি কোন মানুষের হদিশ পান তা সে দেশ থেকে হোক আর বিদেশ থেকে হোক সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিন, কেউ বিদেশ থেকে এই রাজ্যে এলে লুকিয়ে রাখবেন না, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারও শ্বাসকষ্ট থেকে কাশি বা জ্বর হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের কাছে যান। একইসাথে রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছেন কোন মানুষ চিকিৎসা করতে এলে তাঁকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিন।এই রাজ্যে কোন ভিন রাজ্যে থেকে পরিবহণ চলাচল করবে না। এই রাজ্য থেকেও ভিন রাজ্যে কোন পরিবহণ চলাচল করবে না শুধুমাত্র জরুরী পরিষেবা ছাড়া। বিমানবন্দরে আন্তঃরাজ্য কোন বিমান ওঠা নামা করবে না। রাজ্যে ট্রেন, মেট্রো, বাস, অটো, টোটো, ট্যাক্সি কিছুই চলবে না।

ভারত চরম ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মানুষকে এই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পেতে সামান্য কয়েকটা নিয়ম মানতে হবে। ১৪দিন সকলকে বাড়িতে থাকতে হবে। এই মহামারি থেকে রেহাই পেতে এছাড়া কোন উপায় নেই।সরকারি নিয়মাবলী মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে সকলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *