খবরাখবর

করোনা পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা পরিষেবা এবং স্বাস্থ্যবিধিতে ব্র‌্যান্ড, বিপণন এবং ব্যবসার ধরন ঠিক করে দেবে,” দ্য বেঙ্গল চেম্বার আয়োজিত ওয়েবিনার #‌রিসেটইন্ডিয়া২০২০–তে তেমনই মতামত দিলেন বিশেষজ্ঞরা

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৬ই মে ২০২০ : লকডাউন সব রকমের ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে। বাজারে লেনদেন, নগদ অর্থের জোগানে সমস্যা তৈরি করেছে। ব্যবসায়ীরা যাঁদের থেকে ঋণ নিয়েছিলেন, তাঁদের টাকা মেটাতে সমস্যায় পড়েছেন। সব জায়গায় একই দুরাবস্থা।মার খাচ্ছে উৎপাদন। তাই কোনও পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে অসুবিধা হচ্ছে।বিপণনের ধরন বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন সকলে। চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক লাভের ক্ষেত্রে নতুন করে হিসেব করতে হচ্ছে।

যাঁরা আন্তর্জাতিক স্তরে বাণিজ্য করেন তাঁদের উৎপাদন বন্ধ, শ্রমিক এবং সরবরাহে বাধা তৈরি হয়েছে।কমে গিয়ছে বিক্রিও। কী করে ব্যবসা চালানো যাবে, এটাই বড়সড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।বিশেষ করে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য।এই ব্যাপারে সমাধানের রাস্তা খুঁজতে দ্য বেঙ্গল চেম্বার #‌রিসেটইন্ডিয়া২০২০ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল, ১৪ মে।এই কঠিন সময় সামলানোর রাস্তা বাতলে দিলেন বিশেষজ্ঞরা।

আইটিসি–র কর্পোরেট কমিউনিকেশনসের এক্জিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজিব আরিফ সভা সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি টিকে থাকা, পুনরুজ্জীবিত এবং উন্নতি— এই তিনটি বিষয়ে জোর দেন। প্রথমটির জন্য তিনি জানান, এখন সবাই স্বাস্থ্য, জীবিকা এবং বিপরীত স্থানান্তরে জোর দিচ্ছেন।আর্থিক অবস্থা কেমন ভাবে এগোয়, তা দেখার জন্য সকলে মুখিয়ে।দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির জন্য নির্ভর করছে সরকার, কতটা বিনিয়োগ করছে, শিল্প সংস্থাগুলিকে কতটা সাহায্য করছে, বাজারে নগদের জোগান তারওপর। গ্রাহকদের চাহিদায় তেমন একটা বদল হয়নি। তবে আচার আচরণ বদলে গিয়েছে।এখন সবাই সঞ্চয়ের দিকে জোর দিচ্ছে। এখন বিভিন্ন শিল্পের মধ্যে আরও সহযোগিতা, সহানুভূতি খুব গুরুত্বপূর্ণ।স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পরিবহণে একে অপরকে সাহায্য করা খুব দরকারি বলে মনে করেন তিনি।

আমুলের জিসিএমএমএফের পরিকল্পনা এবং বিপণনের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার জয়েনমেহতা বলেন, ‘‌আমুল সমবায় তৈরি হয়েছে ৩৬ লক্ষ কৃষক নিয়ে।রোজ ১৮ হাজার ৫০০টি গ্রামে উৎপাদিত হয় ৩০ লক্ষ লিটার দুধ। বিভিন্ন শহর এবং নগরে ৩২০ লক্ষ দুধের প্যাকেট বিক্রি হয়।এখানে সরবরাহ শৃঙ্খল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।করোনা এই ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’ ‌তাঁর কথায়, এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেখানে সব অংশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলাটা খুব দরকারী। সরকার, কৃষক, কর্মী—সব স্তরের।তবে এটা সব স্তরেই করে চলতে হয়েছে, যাতে সময় মতো এবং দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়।

ডঃ ভার্গিস কুরিয়েনের বলা চারটি বিষয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।কৃষক, পেশাদার, বিক্রেতা এবং গ্রাহক। করোনার জন্য এঁদের মধ্যে কী পরিবর্তন এসেছে, তার কথা জানান তিনি।গ্রামে সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মেনে চলা হয়েছে। এর সঙ্গে ক্যান্টিন, প্ল্যান্টে স্বাস্থ্যবিধির খেয়াল রাখা হয়েছে।সবার কথা মাথায় রাখা হয়েছে। আইসক্রিম ডিস্ট্রিবিউটরেরা মার খেয়েছেন।সেই ধাক্কা সামলাতে তাঁদের দুধ এবং ঠান্ডা পানীয় বিক্রি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।সেইসঙ্গে ব্র‌্যান্ড এবং বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছে।অনাক্রম্যতা নিয়ে মানুষের সচেনতার কথা মনে রেখে বাজারে আনা হয়েছে নতুন পণ্য, যেমন তুলসি দুধ এবং আদা দুধ। আমুল মোবাইল পার্লার বিভিন্ন আবাসনে পৌঁছে গিয়েছে।এই কাজে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। মার্চে বিজ্ঞাপনে দ্বিগুণ খরচ করা হয়েছিল।খবর, ডিজিটাল মাধ্যম, সিনেমা, টিভি সিরিয়াল যেমন রামায়ন, মহাভারতের মাঝে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়েছিল।গ্রাহক এবং রেঁস্তোরার শেফদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে ফেসবুকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।রোজ ১০টি করে ফেসবুক লাইভ করা হচ্ছে।

বার্জার পেইন্টস ইন্ডিয়া লিমিটেডের এমডি এবং সিইও অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‌রঙ প্রয়োজনীয় জিনিসর মধ্যে পড়ছে না।তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে বার্জার সিল্ক ব্রিদ ইজি পেইন্ট, এক্সপ্রেস পেইন্টিং ছোট শহর এবং গ্রামাঞ্চলে নিয়ে যাবে।এটা দূষণমুক্ত, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং ভাইরাস প্রতিরোধী।সোশ্যাল ডিস্টেন্সিংয়ের জন্য কাজের ক্ষেত্রে একটি শিফ্টের ক্ষেত্রে তিনটি শিফ্ট চালু হবে। স্যানিটাইজার বিক্রির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আনা হবে নতুন একটি অ্যাপ।যেখানে ক্রেতারা ২০ হাজার রঙ–কর্মীর ব্যাপারে জানতে পারবেন। সব রঙ–কর্মীকে এই আ্যাপ দিয়ে দেওয়া হবে।তাঁদের স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে আমরা সচেতন। দেওয়া হবে সেফটি কিট।গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য জীবাণুনাশক রঙ কাজে লাগানো হবে।’‌ প্রচারে গ্রে ম্যাটার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *