সঙ্গিতশিল্পী পিউ-র সাথে অসভ্য আচরণ নিয়ে আমাদের খবরের জেরে উল্টডাঙ্গার পুরপিতা শান্তি কুন্ডু অনুগামী ভানু এখন পুলিশ হেফাজতে
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৯ : ৫ই সেপ্টেম্বর উল্টডাঙ্গার মুরারিপুকুর এলাকার মিলন সংঘ ক্লাবের গনেশ পুজোকে কেন্দ্র করে এক রাত ব্যাপী সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। রাত ১২টার পর মহিলা সঙ্গীতশিল্পী পিউ তার সঙ্গীত পরিবেশন শেষ করার পর গ্রীন রুমে এলে বিধাননগর কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়ার্ড সম্পাদক সুরজিত সাহা (ভানু) ঘরে ঢুকে সকলকে বেড়িয়ে যেতে বলে এবং তার কিছু অনুগামী সেইসময় বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর যা ঘটেছিল তা তো বোঝাই যাচ্ছে। শিল্পী পিউকে কু প্রস্তাব দেয় ভানু, পিউ রাজি না হলে তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়ে পিউকে বাধ্য করে শরীরের গোপন জায়গায় হাত দিয়ে তার হাতের সুখ করতে। শেষমেষ যখন পিউ দেখে এবার নিজের চরম অপমানের জায়গায় চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি তখন সে নাটক শুরু করে এবং সেখান থেকে কোনমতে রেহাই পায়।
বাইরে তখনও তার ব্যান্ডের বাকি সদস্যরা নিরুপায় হয়ে পিউর জন্য অপেক্ষা করে। স্থানীয় কিছু শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সহযোগিতায় পিউ ও তার বাকি সদস্যরা নিরাপদে মানিকতলা থানায় আশ্রয় নেয়।সেই রাতেই পিউ থানায় ভানু-র নামে অভিযোগ জমা দেয়। ভানু এমনও ভয় দেখায় ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলবে। কিন্তু বাড়িতে শয্যাশায়ী বাবাকে সুস্থ করতে ও বোনকে
লেখাপড়া শেখাতে গান গাইতে আসা পিউ কোন ভয় না পেয়ে সম্পূর্ণ ঘটনা জানায়।আমরা সেই খবর ৬ই সেপ্টেম্বর প্রকাশ করি, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ লিঙ্ক করে দিই লালবাজারের কিছু উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসারকে।এরপর ভানুকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং তাঁকে ১৩ই সেপ্টেম্বর আদালতে তোলা হয়। আদালত ভানুকে ২৭শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। এই ভানু কলকাতা কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের পুরপিতা শান্তি রঞ্জন কুন্ডু ও রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পান্ডের ঘনিষ্ট বলে জানা যায়।তবে কি সংসারের তাড়নায় রাতে গান গাইতে আসাটা কি পিউ-র মত মেয়েদের অন্যায়? গান গেয়ে দর্শকদের মনরঞ্জন করছে বলে কি শাসক দলের নেতাদেরও শারীরিক মনরঞ্জন করতে হবে নাহলে মরতে হবে? ভাবুন একবার যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা, সেই মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য রাতে মহিলা পুলিশের টহলদারি শুরু করেছে সেখানে তাঁর দলের নেতা হিসাবে কি অকথ্য ও অসভ্য আচরণ করার সাহস দেখায় নিমন্ত্রিত মহিলা শিল্পীদের সাথে।পিউ ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের দাবি যেন এই ভানুকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয় যা আগামীদিনে উদাহরণ হয়ে থাকে।