অমর্ত্য সেন এবং অভিজিৎ ব্যানার্জি আদৌ কি নোবেল পেয়েছেন ? অর্থনিতিতে নোবেল হয় না
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৯শে অক্টোবর ২০১৯ : ভরতবর্ষ থেকে কোনযুগে রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন।তারপর শান্তির জন্য নোবেল পান মাদার টেরেজা।তারপর কি আর এপার বাংলায় কোনো বাঙালি নোবেল পেয়েছেন? না, তারপর আর কেউ নোবেল পাননি।অমর্ত্য সেন বা আজকের অভিজিৎ ব্যানার্জিও নন।বিজ্ঞানী আলফ্রেড বার্নাড নোবেল ডাইনামাইড, নাইট্রোগ্লিসারিন সহ অসংখ্য বিষ্ফোরক আবিষ্কার করে স্বত্ব হিসেবে প্রচুর টাকার মালিক হন। তিনি ছিলেন অবিবাহিত।এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁর অর্জিত টাকা তিনি ব্যাঙ্ক অফ সুইডেনে জমা করবেন।আর হলও তাই। প্রতিবছর সেই টাকার সুদ থেকে অর্জিত সম্পদ পাঁচটি বিষয়ে কৃতিত্বের জন্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। বিষয়গুলি হলো – সাহিত্য, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র এবং শান্তি। এই পাঁচটি পুরস্কার বিজয়ীদের বেছে নেবেন এক নোবেল কমিটি। সেইমতো ১৯০১ থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কার প্রাপকরা পেয়ে থাকেন ৮০লক্ষ ক্রোনা, একটি নোবেলের অবয়ব অংকিত স্বর্ণ পদক, একটি সনদ।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই সব ইচ্ছে তিনি ১৮৯৫ সালে একটা উইল করে গেছেন। সেখানে তিনি অর্থনীতিতে পুরস্কার দেওয়ার কথা বলেননি। তাই আইনত অর্থনীতিতে কাউকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় না।সেই হিসাবে কাউকে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলা যায় না। কিন্তু সুইডিশ ব্যাঙ্ক তাদের তহবিল থেকে অ্যালফ্রেড নোবেলের স্মৃতিতে একটি পুরস্কার চালু করে ১৯৬৮ সালে। পুরস্কারদাতা রয়েল সুইডিস্ সাইন্স একাডেমি ( Sveriges Riksbank )। পুরস্কারের অর্থমূল্য এক হলেও পদকের চেহারা ভিন্ন। অথচ মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারে পৃথিবী জেনেছে, অর্থনীতিতে প্রথম বাঙালি বিজেতা অমর্ত্য সেন।এবছর আবার প্রচার চলছে অর্থনীতিতে নোবেল বিজেতা হিসেবে ঘোষিত হযেছেন আর এক বাঙালি অভিজিৎ ব্যানার্জি।
এব্যাপারে ব্যাঙ্ক অফ সুইডেন স্বীকার করেছেন, অর্থনীতির পুরস্কারটি নোবেল পুরস্কার নয়। ওটি একধরণের স্মৃতি পুরস্কার (Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel)। ব্যাঙ্কের ৩০০ বছর পুর্তীতে এই পুরস্কার চালু হয়েছিল (Sveriges riksbanks pris i ekonomisk vetenskap till Alfred Nobels minne)।পাশাপাশি এটাও স্বীকার্য, অর্থনীতিতে এই দুই বাঙালির স্বীকৃতি কোনো অংশে খাটো নয়। বাঙালি তথা ভারতবাসীর জন্য গৌরবের।
বঙ্গসন্তান অভিজিৎ ব্যানার্জির মা বাবা দুজনেই অর্থনীতির অধ্যাপক। পুত্র অভিজিৎ-এর পুরো নাম অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। অভিজিতের জন্ম কলকাতায় ১৯৬১ সালে। এই মুহূর্তে তিনি মার্কিন দেশের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুটেস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক। ২০১৯ এর জন্য নোবেল স্মৃতি পুরস্কার অভিজিৎ বাবুর সঙ্গে যুগ্ম ভাবে পেলেন তাঁর স্ত্রী ফরাসি বংশোদ্ভূত মার্কিন অর্থনীতিবিদ এসতার ডাফলো এবং মাইকেল ক্রেমার। কলকাতার সাউথ পয়েন্টের ছাত্র অভিজিৎ পড়াশুনো করেছেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। দিল্লির জে.এন.ইউ তে। পিএইচডি করেছেন ১৯৮৮ সালে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
অভিজিতের সাফল্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট বার্তায় লিখেছেন, নোবেল জয়ে সাউথ পয়েন্ট স্কুল ও প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক এই শিক্ষার্থীকে হৃদয় নিংড়ানো অভিনন্দন জানাই। “আরেক বাঙালি জাতিকে আবার গর্বিত করলো।সারা ভারতের সাথে আমরাও আপ্লুত”।আমরা নীচে ১৯০১ সালের সেই তালিকা প্রকাশ করলাম যেখানে অর্থনিতির বিষয় কারও নাম নেই।