গড়িয়ার ৪ নং ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে থ্যালাসেমিয়া শিশুদের জন্য রক্তদান শিবিরে চাঁদের হাট
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ৩০শে আগস্ট ২০২১ : গতকাল থ্যালাসেমিয়া শিশুদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে। ৪ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হিমাংশু দে (মিঠু)-র নিজস্ব উদ্যোগে ও শিবু করের সহযোগিতায় এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। যদিও এই শিবিরকে ব্যর্থ করতে চরম বিরোধিতা করেছেন এই ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরপিতা ও প্রাক্তন প্রশাসকমণ্ডলী সদস্য বিভাস মুখার্জি (মনু)। ওয়ার্ডের প্রতিটা বুথস্তরে কর্মীদের একপ্রকার নিশেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন যাতে তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হয়। অনেকেকে এমনও বলেছে দলীয় সিদ্ধান্ত মানতে হবে। কিন্তু কে দলীয় সিদ্ধান্ত নিল আর কোথায় নিল তা কেউ জানতে পারলো না। নিজের প্রভাব অনেক নেতৃত্বের সাথেও খাটিয়েছে কিন্তু তার সিদ্ধান্ত ও বিরোধিতাকে সকলে উপেক্ষা করে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আরও রঙিন ও স্বার্থক রূপদান করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ ও দঃ কলকাতা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সেন মনীষ গুপ্ত, বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম, তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সিনিয়র ভাইস প্রসিডেন্ট মারিয়া ফারনান্ডেজ, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সম্পাদক মহঃ আক্রাম, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সাধারণ সম্পাদক সোফিয়া খান, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ খান, রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সম্পাদক সৌরভ বসু, রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার নব নিযুক্ত প্রশাসকমন্ডলী সদস্য পাপিয়া হালদার ও অশোকা মৃধা, ৫ নং ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরপিতা তরুণ কান্তি মন্ডল, পাপাই দত্ত, পিন্টূ দেবনাথ, সমরজিত ব্যানার্জি, মিনটু কুন্ডু, সুব্রত পাল সহ স্থানীয়স্তরের প্রচূর নেতৃত্বরা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মারিয়া ফারনান্ডেজ মমতা ব্যানার্জির সংগ্রামী জীবন ও মানুষের জন্য সেবার কথা উল্লেখ করেন এবং মিঠু দে-র এই প্রয়াসকে প্রশংসা করে বলেন আগামীদিনে তিনি যে কোন প্রয়োজনে পাশে থাকবেন। একই কথা বলেন সোফিয়া, আক্রাম ও ফরিদ। বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদ মনীষ গুপ্ত বলেন, পাশে বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম আছে, খুবই কাজের মেয়ে এবং স্বচ্ছতা ও সততার সাথে মানুষের জন্য কাজ করে। আমি যখন বিদ্যুৎমন্ত্রী ছিলেম তখন উপলব্ধি করেছি। এছারা তিনি বলেন যারা রক্তদান করছেন তারা সামাজিক বীর এবং তাদের এই দানের কোন মূল্য হয় না।
একই সাথে মিঠুর মত যারা আয়জক তাদের গুরুত্ব ভোলা যাবে না, এই আয়জকেরা না থাকলে আজ এই করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে রক্তসঙ্কট দেখা দিত। কিন্ত সব থেকে আমি আজ আপ্লূত এত মানুষের সমাগম দেখে যারা রক্তদান না করলেও অনুষ্ঠানকে সফল করতে এখানে উপস্থিত হয়েছেন। এই দর্শকেরা আমাদেরও উৎসাহ প্রদান করেন। আপনারা না থাকলে আমরা কাকে বলতাম। এই ধরনের একটা শিবির করতে গেলে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সৌরভ বসু বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানকে শিবির বলা যাবে না, আজকে এত মানুষের সমাগম এই অনুষ্ঠানকে উৎসবে পরিণত করেছে। বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম বলেন, আমি নবগ্রামের মানুষের কাছে আবার কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই মমতা ব্যানার্জির উপর ভরসা রেখে তৃতীয়বারের জন্য সরকারের রেখে আমাকে তৃতীয়বারের জন্য জয়ী করার জন্য। আরও উন্নয়ন হবে। সবে একটা দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি বাকি সমস্যার সমাধানও হবে আপনাদের সকলের সহযোগিতায়।
অনুষ্ঠানে দেবাশিস ভৌমিক ও সাংবাদিক অম্বর ভট্টাচার্যকে (অর্থাৎ আমাকে) করোনা যোদ্ধা হিসাবে সম্বর্ধিত করা হয়। স্থানীয় স্তরে এত বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও এই অনুষ্ঠানে প্রায় ৭০০ মানুষ উপস্থিত থেকে সাফল্যমণ্ডিত করেন। মানুষ বিদায়ী পৌরপিতা বিভাস মুখার্জির একনায়কতন্ত্র থেকে যে মুক্তি পেতে চাইছে তা আবার প্রমাণ করে দিল।
তাকে জানানোর পরও তিনি উপস্থিত হতে দ্বিধাবোধ করেছেন তার একটাই কারণ নিজের হীনমন্যতা তাকে বাধা দিয়েছে। সদ্য প্রশাসকমন্ডলীর পদ চলে যাওয়াকে তিনি ভাল চোখে নেন নি। এছাড়া আরও অনেক কারণ আছে যা ঠিক পৌর নির্বাচনের আগে প্রকাশিত হবে। এরকম অনেকেই তাদের নিজেদের দুর্বলতার কারণে উপস্থিত না হয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করে দিয়েছেন। আর তারা আবার মন্তব্য করছেন অনেকের অগ্রণী
ভুমিকা নিয়ে। তারা জীবনে কোনদিনও মানুষের কাজে না লেগে শুধু সমালোচনাই করে গেছে আর কিছু নেতৃত্বকে ব্ল্যাকমেল করে কামাই-এর রাস্তা খুঁজেছেন, তাদের সমালোচনায় কি আসে যায়? তারা বিরোধিতা করে স্থানীয় কিছু নেতৃত্বের উপর প্রভাব খাটাতে পারবে, মানুষকে বাড়িতে ডেকে গেটে তালা দিয়ে আটকে রাখতে পারে কিন্তু যে নেতৃত্বদের দরজায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে না তাদের উপর কিভাবে প্রভাব খাটাবে?