তথ্য রহস্যপ্রথম পাতা

১৯৫৯ সালে নেহেরুর কারণে কিশোরী বুধনি-র জীবনে সেই যে কালো দিন নেমে এলো, আজও অভিশপ্ত জীবন নিয়ে চলেছে

অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা নিউজ, কলকাতা, ৬ই জুলাই ২০২৩ : সালটা ছিল ১৯৫৯। বুধনি মেঝেনের বয়স তখন পনেরো।পাঞ্চেতের কোলঘেঁষা এক গ্রামের এক প্রাণোচ্ছল তরুণী বুধনি। তাঁর বাবা রাবণ মাঝির সঙ্গে তিনিও হাত মিলিয়েছিলেন পাঞ্চেত বাঁধের নির্মাণে।মানভূম থেকে সদ্য তৈরি হওয়া পুরুলিয়া জেলার থেকে বিহারকে (পরে ঝাড়খণ্ড) আলাদা করছে এই পাঞ্চেত ড্যাম।
এরপর এল ১৯৫৯ সালের ৬ই ডিসেম্বর। বুধনির জীবনের এক উজ্জ্বল নাকি অভিশপ্ত দিন? প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এসেছেন পাঞ্চেত ড্যাম উদ্বোধনে। ডিভিসি কর্তারা বুধনিকে নির্বাচিত করলেন নেহেরুকে স্বাগত- অভ্যর্থনা জানাতে।তাঁর হাতে তুলে দিলেন মালা।নেহেরুকে মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন বুধনি। নেহেরু বাঁধ উদ্বোধন করালেন বুধনিকে দিয়ে।চাকা ঘোরালেন বুধনি। নেহেরু তাঁর ভাষণে বললেন-“এই বাঁধটিই হল Temple of Developing India” । সব সংবাদপত্রে ছবি উঠল বুধনির।

কিন্ত বুধনির বিড়ম্বনা শুরু হল বাড়ি ফেরার পর।বিজাতীয় পরপুরুষকে মালা পরানোর ‘দোষে’ সমাজচ্যুত হলেন বুধনি।শুরু হল এক অভিশাপের জীবন।আলাদা হয়ে থাকতে হল তাঁকে। ডিভিসি-তে চাকরি পেয়েছিলেন বটে, কিন্ত কর্মী-সঙ্কোচনের জেরে ১৯৬২ তেই চাকরি যায় তাঁর। শুরু হয় প্রবল সংগ্রামের জীবন।
ভাল মানুষের অভাব হয়না বুঝি! পেলেন মনের মানুষ সুধীর দত্তকে।প্রথমে সাহস না হলেও পরে একসাথে জীবন বাঁধলেন। তাঁর চাকরিচ্যুতির খবর রাজীব গান্ধীর কাছে পৌঁছায় বহুবছর পরে।১৯৮৫ সালে ফিরে পান চাকরি। অভিমান ক্ষোভ নিয়েই জীবন কাটাচ্ছেন বুধনি।ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেননি তাঁর নিজের সমাজে।কয়েক বছর আগে বলিউড থেকে তাঁকে নিয়ে একটি বায়োপিক করার প্রস্তাব এলে তাও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *