You cannot copy content of this page. This is the right with takmaa only

পেঁয়াজের দামের সাথে অন্যান্য বাজার দ্রব্যের যা দাম বাড়ছে বাঙালির এখন খাওয়ার একমাত্র উপায় শাক, জেনে নিন কিসে রোগমুক্তি

পালং শাকে কি কি উপকারে কাজে লাগতে পারে জেনে নিন, জানলে ওষুধ কম খেতে হবে, শাক বেশি খেতে হবে। চোখের ছানি কমায়, প্রস্টেট, ব্রেস্ট, ত্বক ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১০ই ডিসেম্বর ২০১৯ : বর্তমানে পেঁয়াজের দাম যেভাবে ব্যাটিং করছে তাতে তো সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে এই অবস্থায় কোনভাবেই আউট করা সম্ভব নয়। ইতিমধ্যেই পেঁয়াজ সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে ডবল সেঞ্চুরির দিকে, কোথায় থামবে কেউ যানে না।রাজ্য সরকার কোনভাবে চাহিদার থেকে কম হলেও কোনভাবে সামাল দিতে নেমেছে রাস্তায়। রাজ্য সরকার বাজারে ৬৯টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করছে তবে তা খুবই সীমিত। বর্তমানে রেশনেও পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে পরিবারের একটা কার্ডে ১ কেজি করে।কিন্তু মোদী সরকারের কোন হেলদোল নেই এই ব্যাপারে। প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির দিকে নজর না দিয়ে তিনি গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে ব্যস্ত।এবার বিপাকে বাঙ্গালিরা, তবে এখন কি উপায়? কি খাবে বাঙালি? মাংস বা মাছে পেঁয়াজের ব্যবহার দিন দিন কমছে। এছাড়া বাজারের অন্যান্য সবজির দামও চড়া। পটল থেকে ভেন্ডি সবই ৮০টাকা কেজির কাছে। তবে এখন একটাই রাস্তা খোলা, সেটা শাক। এবার আসি কোন শাক খাওয়া সম্ভব যাতে পকেটে টান পড়বে না।

আমাদের দেশে বিশেষ করে বাঙ্গালিদের সহযোগী খাদ্য হল শাক। বাঙালির পাতে শাকের গুরুত্ব চিরকালই অপরিসীম। বিভিন্ন রকমের শাক রয়েছে যাদের সেভাবে যত্ন করে চাষ করা হয় না। প্রকৃতির আপন খেয়ালে যেখানে সেখানে পতিত জমিতে জন্মায়। এরা স্বাদে, গন্ধে এবং পুষ্টিতে ভরপুর। বাঙালি বিভিন্ন ধরনের শাককে বিভিন্ন উপায়ে যেমন ভাজা, চচ্চড়ি, ঘন্ট, ঝোল বা শুক্তোর মত খেতে পারে। শাক সবজিতে যথেষ্ট পরিমানে ভিটামিন, মিনারেল, প্রো ভিটামিন, ক্যারোটিনয়েড, ফাইবার ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান থাকায় শরীরের পক্ষে খুবই উপকারি। মাছ বা মাংসের পরিবর্তে খাওয়া যেতেই পারে। পুষ্টিগুণে ও ভেষজগুণে অর্থাৎ রোগ নিরাময়ে খাদ্য তালিকায় পুষ্টিবিদদের কাছে এক গ্রহণযোগ্য বস্তু। সবুজ শাকে বিভিন্ন ধরনের ফাইটোক্যালিকাল যেমন বিটাক্যারোটিন, লুটিন, জেক্সানথিন ইত্যাদি উন্নত মানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় যৌগ শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে আমাদের দেহকোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ করে, রক্তচলাচল নিয়ন্ত্রিত করে, রক্ত শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণ করে, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়, বিভিন্ন ধরনের ডিজোনারেটিভ ডিজিজ অর্থাৎ বার্ধক্যজনিত সমস্যা প্রতিহত করে।গবেষণায় এমনও জানান যায় শাক সবজিতে উপস্থিত ভিটামিন “কে” অস্থিক্ষয় প্রতিরোধ আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, অ্যাথেরো স্ক্লেরোসিস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবুজ শাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে আবার ম্যাগনেশিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। শাকে প্রচুর পরিমানে ফাইবার বা তন্তু জাতীয় উপাদান থাকায় রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে, সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। ফাইবার হল এক ধরনের পলিস্যাকারাইড যা হজম হয় না, পেটকে ভরা রেখে খিদে কমিয়ে দেয় কিন্তু এতে ক্যালরির পরিমান খুব কম থাকে। এরফলে ওবেসিটি বা মোটা ভাব নিয়ন্ত্রণ করে। জিয়াজ্যানথিন থাকায় প্রস্টেট, ব্রেস্ট, কোলন, ডিম্বাশয়ের ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

আমরা এক এক করে প্রতি সোমবার একটি একটি করে শাকের গুণাবলি পাঠকদের জন্য তুলে ধরবো। পাঠকেরা প্রতি সোমবার ভিন্ন ভিন্ন শাকের নাম ও তাঁর উপকারিতা জানতে পারবেন যা বাজারে বা আপনার বাড়ির কাছাকাছি পেয়ে যেতে পারেন। এই শাকগুলোর দাম ও কম আবার কিছু ক্ষেতে দামও লাগে না।

আজ সেরকমই একটা শাকের কথা বলবো যার না পালং শাক : পালং শাক পুষ্টির গুনমানে ভরপুর, এতে প্রচুর পরিমানে বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন “সি”, “কে”, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এমনকি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যেমন আলফা লিপোইক অ্যাসিড থাকে যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে, ইনসুলিন-এর সেনসিটিভিটি বৃদ্ধি করে, ইমিউনিটি বাড়ায়, নার্ভজনিত সমস্যার হাত থেকে মুক্ত করে। এই শাক রক্তাল্পতা কমায়, হাড় ত্বক ও নখ মজবুত করে। মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে, এতে উপস্থিত লুটিন ও জিয়াজ্যানথিন চোখের স্বাস্থ্য অটুট রাখে। চোখের ছানি কমায়, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এই শাকে উপস্থিত নাইট্রেট হার্টকে শক্তিশালী করে, উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফ্ল্যাভোনয়েডস প্রস্টেট, ব্রেস্ট, ত্বক ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এই শাক সাইট্রাস ফ্রুট অর্থাৎ টক জাতীয় ফলের সাথে খেলে এতে উপস্থিত আয়রনকে শোষণে সাহায্য করে। এই শাক শরীরের জ্বালা পোড়ার সমস্যা দূর করে। পোড়া ঘা, ক্ষতস্থান, ব্রণ বা আঘাতজনিত কালচে ছোপ পালং পাতার রস প্রলেপ বা লাগালে দূর করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *