এবার বাজারে এলো কাষ্ঠমন্ড দিয়ে তৈরি পরিবেশ বান্ধব র্যাপিং পেপার
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২১শে আগস্ট ২০১৯ : পরিবেশ দূষণ নিয়ে বিশ্বের সব দেশই বেশ চিন্তিত। আর এই পরিবেশ দূষণের মূল কারণ প্লাস্টিক। তাই প্লাস্টিক বর্জনের জন্য সারা বিশ্ব এখন সচেতনতা বাড়াতে মরিয়া। ভারত সরকারও এখন প্লাস্টিক বর্জনের জন্য প্রচার করছে কিন্তু তার অনেক আগে থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্লাস্টিক বর্জনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এবার সেই প্লাস্টিক বর্জনের বিষয়ে কেশরাম রেয়নের অনুশিল্প সিগনেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বাজারে নিয়ে এল কাষ্ঠমন্ড দিয়ে তৈরি র্যাপিং পেপার।এই বিষয়ে সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গ আই এস আই দপ্তরে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, উপস্থিত ছিলেন সুরিনা রাজন (আই এ এস) বোরো অফ ইন্ডিয়ান স্টান্ডার্ডের জেনারেল ডিরেক্টর, কে সি এস বিস্ত, এ চ্যাটার্জি (কলকাতা শাখা অধিকর্তা)। এই সাংবাদিক সম্মেলনে সিগনেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হাতে সুরিনা রাজন শংসাপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানে সিগনেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের তরফে উপস্থিত ছিলেন সুরজিত সরকার (ফ্যাক্টরি হেড), তরুণ কুন্ডু (কোয়ালিটি হেড), অরিন্দম সরকার (সেলস হেড) ও মাইকেল আর এফ নাদার (মার্কেটিং হেড)।অনুষ্ঠানে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয় বর্তমানে যে সব র্যাপিং পেপার বাজারে ব্যবহৃত হচ্ছে তা অধিকাংশ প্লাস্টিকের কিন্তু তারা যে র্যাপিং পেপার বাজারে নিয়ে এসেছে তা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। শুনলে চমকে উঠতে হবে এই র্যাপিং পেপার কাষ্ঠমন্ড দিয়ে তৈরি হয়েছে। শুধুমাত্র পাইন ও ইউক্যালেপ্টাস গাছের মূল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই স্বচ্ছ র্যাপিং পেপারটি। আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয় মহাদেশে শুধুমাত্র ভারত এই র্যাপিং পেপার তৈরি করছে সিগনেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
এই পেপার যে শুধু গিফট আইটেমে ব্যবহৃত হয় তা কিন্তু নয়, সিগারেটের প্যাকেটে, খাবার র্যাপিং, বাজি প্যাকেটে, সেলোটেপ তৈরি করতে, ফলের বাক্স প্যাক করতে, কেক ও বেকারি দ্রব্য প্যাক করতে, প্রিন্টিং-এর ক্ষেত্রে, ধুপকাঠি প্যাক করতে, পারফিউম প্যাকেট করতে, কাঁচা মাংস বা মাছ প্যাক করতে, এমনকি রান্নাঘরের বাসন প্যাক করতেও ব্যবহার করা হয়। এমনও জানানো হয় যে এই গাছের জোগানের জন্য কোন প্রাকৃতিক ধ্বংস করা হচ্ছে না। এই গাছ চাষ করা হচ্ছে এবং গাছ যখন বড় হচ্ছে সেই গাছকে কেটে
নিয়ে আবার সেখানে নতুন চাড়া লাগানো হচ্ছে। যদিও ভারতে ইউকালেপ্টাস চাষ হচ্ছে কিন্তু পাইন চাষ হয় না তাই বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সুরিনা রাজন জানান, এটা একটা খুবই প্রশংসার বিষয় যে পরিবেশকে বাঁচাতে এভাবে বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এসেছে।বিশেষ করে সেলোটেপ বেশি ব্যবহার হয় আর বর্তমানে সব সেলোটেপ প্লাস্টিকজাত।আগামিদিনে যদি এই বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের কোনরকম
সাহায্যের প্রয়োজন হয় সরকার ও দপ্তর তা করতে প্রস্তুত থাকবে। র্যাপিং পেপার ছাড়া ছোট ব্যাগ তৈরির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সংস্থার তরফে জানানো হয় এই বিষয় চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে কিন্তু বর্তমানে যে র্যাপিং পেপার তৈরি হচ্ছে তা দিয়ে ব্যাগ করা যাচ্ছে না কারণ এর ধারণ ক্ষমতা বেশি নয়। অনুষ্ঠানের পর সুরিনা রাজন বোরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড-এর একটি সোনা পরীক্ষাশালা কেন্দ্রে যান সেখানে আধুনিক পদ্ধতিতে সোনা পরীক্ষাশালাটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ছবি : বিশ্বজিত সাহা।