রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে নিয়ম বহির্ভুত বাড়ি নির্মানের অভিযোগ দায়ের হলেও কোন অদৃশ্য স্বার্থে পৌরসভা ব্যবস্থা গ্রহণ করল না?
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ৫ই মে ২০২২ : ২রা মে আমরা যে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে নবগ্রাম এলাকায় বেআইনি বাড়ি নির্মানের সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপর ওয়ার্ডের পৌরপিতা বিভাস মুখার্জি নড়েচড়ে বসেন। তিনি আমার সাথে এব্যাপারে কথাও বলেন এবং রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার গড়িয়া অফিসের বাস্তুকার শুভাশিস বসু-র সাথেও ফোনে কথা বলেন। কিন্তু যতবারই কথা হয় শুভাশিস বসু জানান, এই বেআইনি বাড়ি নির্মানের ব্যাপারে এলাকার কাউকে একটা লিখিত অভিযোগ প্রয়োজন, নাহলে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
অবশেষে এব্যাপারে আমি ফোনে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার পৌর প্রধান ডাঃ পল্লব দাসকে পুরো ঘটনাটা জানাই। সব শুনে ডাঃ পল্লব দাস বলেন ৮ ফুট রাস্তার উপর কখনই তিনতলা বাড়ি নির্মান বেআইনি। প্রয়োজনে পৌরসভার তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি কথা বলি রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার সি আই সি (পূর্ত) নজরুল আলি মণ্ডলকে ঘটনা জানানো হয় এবং এও জানানো হয় এই বেআইনি নির্মানের ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে ২১শে এপ্রিল ২০২২ পৌরসভার হেড অফিসে জমা দেওয়া হয়। অভিযোগ পেয়েও কোন ব্যবস্থা নেয় নি পৌরসভা। এদিকে সেই চিঠিকে চেপে রেখে বেআইনি বাড়ি নির্মানের কাজ সম্পূর্ণ করার সময় করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। এলাকার সকলের সন্দেহ এর পিছনে কারও অদৃশ্য হাত আছে। তবে পৌর প্রধান ডাঃ পল্লব দাস জানিয়েছেন মঙ্গলবার এই বেআইনি নির্মানের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেবেন।
এব্যাপারে নরেন্দ্রপুর থানায় ফোন করে আই সি অনির্বান বিশ্বাসের সাথে কথা বলে ঘটনা জানানো হয়। তিনিও বলেন কোন বেআইনি কাজ প্রশাসনের পক্ষে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। নবগ্রাম মিডিল ব্লক সেকেন্ড লেনে ৪৩২ নং হোল্ডিং-এর মালিক উৎপল সেনগুপ্ত এই বেআইনি নির্মান কাজ চালচ্ছেন আর তার এই বেআইনি কাজ করতে মদত দিচ্ছে বাবুলাল ও রাজা নামে এই এলাকার দুই যুবক যারা পৌরসভা নির্বাচনে এই ওয়ার্ডের তৃনমূল প্রার্থী বিভাস মুখার্জির হয়ে অনেকভাবে প্রত্যক্ষ প্রচারে সাহায্য করেছে বলে জানা যায়। তবে কি তারই ফল স্বরূপ এই বেআইনি নির্মানের স্বার্থ লুকিয়ে ছিল? মানুষের মনে এখন এই প্রশ্ন উঁকি মারছে। তাদের ফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানায় এলাকায় এধরনের বহু বেআইনি বাড়ি নির্মান হচ্ছে সেগুলো যদি অনুমোদন পায় তবে তারাও এই বেআইনি নির্মান কাজ চালিয়ে যাবে (এই কথোপকথনের রেকর্ডিং আছে)। আজ সন্ধ্যায় পৌরপিতা বিভাস মুখার্জি আমায় ফোন করে জানান, বাবুলালের সাথে তার কথা হয়েছে এবং তিনি তাকে কাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন। এখন প্রশ্ন এই নির্মান যদি সম্পন্ন হয় তবে এলাকায় এটা একটা বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে সবার কাছে। এই বেআইনি নির্মানকে সামনে রেখে অনেকে সেই সুযোগে আরও বেশ কিছু বেআইনি নির্মান হবে। পৌরসভা প্রয়জনীয় কোন ন্যায্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না। কি কি সুবিধা মানুষ এবার নিতে পারে তা একবার দেখে নেওয়া যাক ১) মাত্র ৮ ফুট রাস্তায় তিনতলা বাড়ি নির্মান ২) বাড়ির সামনে মাত্র ২ফুট ছাড় দিয়ে বাড়ি নির্মান ৩) বাড়ির পিছনে মাত্র ২-২.৫ ফুট ছাড় দিয়ে বাড়ি নির্মান ৪) পরবর্তীতে দ্বিতলে ক্যান্টিলিভার বাড়িয়ে প্রায় রাস্তার উপর বাড়ির বাড়তি নির্মান।
আজ শনিবার, কাল রবিবার এবং পরেরদিন সোমবার রবীন্দ্রজয়ন্তী। পরপর তিনদিন সরকারি ছুটি থাকার ফলে এই বেআইনি কাজ প্রায় শেষ করে ফেলতে পারে, কারণ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর চটজলদি এই তৃতলের নির্মান কাজ করা হয়েছে। তার আগে পর্যন্ত দ্বিতলের কাজ হয়েছিল। তবে কার অদৃশ্য হাত কাজ করেছে? পৌরপিতার কি কোন দায়িত্বের মধ্যে পড়ছে না? এই ক্ষেত্রে পৌরপিতা কি সম্পূর্ণভাবে নিজের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন।